সুরমার ঢেউ সংবাদ :: অবসর যাবার পর প্রাপ্য টাকা চেয়ে নানাভাবে বিড়ম্বনা ও সম্মানহানিকর পরিস্থিতির মুখোখুখি হয়েছেন শ্রীমঙ্গল বিটিআরআই উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রবীণ শিক্ষক শাহ আলম। এ নিয়ে সংবাদিক সম্মেলন করে বিস্তারিত জানিয়েছেন তিনি। শ্রীমঙ্গল প্রেসক্লাবে ২ অক্টোবর রোববার দুপুর আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে শাহ আলম বলেন- ০১/০৩/১৯৮৫ইং থেকে ০৫/০৪/২০২২ইং পর্যন্ত দীর্ঘ ৩৮ বছর শিক্ষকতা শেষে আমি অবসর গ্রহণ করি। অবসর গ্রহণের পর আমার গ্রাচুইটি ও প্রভিডেন্ট ফান্ডের জন্য বিধি মোতাবেক পরিচালক (স্কুল সভাপতি) বরাবর আবেদন করি। এর প্রেক্ষিতে কর্তৃপক্ষ বিধি মোতাবেক প্রকৃত পাওনা না দিয়ে নিজেদের ইচ্ছামত ৪ লাখ টাকার চেক’র প্রাপ্তিস্বীকারপত্রে সই করতে বলেন। আমি এ টাকা গ্রহণে অপারগতা প্রকাশ করি। এরপর কর্তৃপক্ষ আমাকে পূর্বের দেয়া নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে বাসা ছাড়ার নির্দেশ দেন। পরিচালক আমার বিষয়টি বিবেচনায় না নিয়ে ফোনে চা বোর্ডের সচিবকে জানান যে, আবেদনকারী শিক্ষক টাকা নিতে অস্বীকৃতি জানিয়েছে। একথা শুনে সচিব পরিচালককে নির্দেশ দেন বিদ্যুৎ, গ্যাস, পানির লাইন বিচ্ছিন্ন করে ওই শিক্ষককে ঘাড় ধাক্কা দিয়ে বাসা থেকে বের দিন। ঊধ্বর্তন কর্তৃপক্ষের এহেন অপ্রত্যাশিত অসৌজন্যমূলক আচরণে আমি গভীরভাবে বেদনাহত হলাম- যা জীবনে কখনো কল্পনাও করতে পারিনি।
এখানে আরও উল্লেখ্য যে, যেহেতু বাণিজ্য মন্ত্রনালয়ের অধীনে চা বোর্ড পরিচালিত হয় এবং চা বোর্ডের অধীনে বিটিআরআই এবং বিটিআরআই স্কুল পরিচালিত হয়, সেহেতু আমি গত ১৪/০৯/২০২২ইং বাণিজ্য মন্ত্রনালয়ের সিনিয়র সচিব বরাবর আমার পাওনাদির জন্য আবেদন করি। সিনিয়র সচিব আমার আবেদনটি সাদরে গ্রহন করেন এবং চা বোর্ড কর্তৃপক্ষকে বিধি মোতাবেক পাওনা পরিশোধের (চেয়ারম্যানকে) নির্দেশ প্রদান করেন। তা সত্তেও সংল্লিষ্ট সচিব কোনো ব্যবস্থা না নিয়ে উল্টো আমাকে প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে ভয়ভীতি প্রদানসহ অশালীন আচরণ করে চলেছেন- যা অত্যন্ত সম্মানহানিকর বলে মনে করি।
সাংবাদিকের এক প্রশ্নের জবাবে শাহ আলম বলেন- আমি যত বছর চাকুর করেছি ততো বছরের দ্বিগুণ এবং শেষ বেসিক দিয়ে গুণ করে গ্রাচুইটি দেয়া হয়। বিধি মোতাবেক আমার টাইমস্কেলসহ বেসিক দাঁড়াবে ৫২ হাজার টাকা গুণ ৭৬ মাস এর মোট টাকার পরিমাণ হয় প্রায় ৪০ লাখ টাকা। আমি এ টাকাটাই দাবি করছি।
অপর এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন- ইতোপূর্বে বিধি মোতাবেক টাকা পেয়েছেন প্রধান শিক্ষক মরহুম শামসুল ইসলাম, সহকারি প্রধান শিক্ষক হরিপদ সরকার, সহকারি প্রধান শিক্ষক শামসুল হক, প্রাক্তন সিনিয়র শিক্ষক জগদীশ গোস্বামী, দীজেন্দ্র লাল সিংহ, গৌরীবালা গোপ ও তাসলিমা আক্তার। এরা যদি বিধি মোতাবেক তাদের ন্যায্য পাওয়া পেতে পারেন তবে আমি কেন পাবোনা।
ঘাড় ধাক্কা দিয়ে বের করে দেয়ার নির্দেশের ব্যাপারে তিনি জানান- গত ২৯ সেপ্টেম্বর বৃহস্পতিবার সকাল ৮টায় বিটিআরআই স্কুলের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষিকার রুমে বিটিআরআই পরিচালক ড. ইসমাইল হোসেন, এ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষিকা আফরোজা বেগম, প্রধান বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা সাইফুল ইসলাম, স্টোরকিপার মুকুল রায়, বিদ্যালয়ের হিসাবরক্ষক হাবিব বাহার চৌধুরী ও অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকা বিটিআরআই’র হিসাবরক্ষক সাইফুল কাদের উপস্থিতিতে চা বোর্ডের সচিব রুহুল আমিন মোবাইল ফোনে বিটিআরআই পরিচালকের সাথে কথোপকথনের একপর্যায়ে নির্দেশ দেন আমার বাসার বিদ্যুৎ, পানি ও গ্যাস সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে আমাকে গলা ধাক্কা দিয়ে বের করে দিতে।