এবছরের মে মাসে সড়ক দুর্ঘটনায় প্রাণহানির সংখ্যা ১ হাজার ২৯ জন

এবছরের মে মাসে সড়ক দুর্ঘটনায় প্রাণহানির সংখ্যা ১ হাজার ২৯ জন

এবছরের মে মাসে সড়ক দুর্ঘটনায় প্রাণহানির সংখ্যা ১ হাজার ২৯ জন। এ সংখ্যা এবছরের এপ্রিল মাসের চেয়ে দ্বিগুণ। নিহতদের মধ্যে বেশিরভাগই তরুণ। ২ জুন বৃহস্পতিবার গণমাধ্যমে পাঠানো এক বিবৃতিতে এ তথ্য জানায় স্বেচ্ছাসেবি সংগঠন ‘সেভ দ্য রোড’।
বিবৃতিতে বলা হয়, ২০২২ সালের ১ মে থেকে ৩১ মে পর্যন্ত ৪ হাজার ৬৩১টি সড়কপথ দুর্ঘটনা ঘটেছে। এর মধ্যে নিহত হয়েছেন ১ হাজার ২৯ জন, আহত হয়েছেন ৩ হাজার ৫৯৪ জন। নিহতদের মধ্যে ১৮ থেকে ৪০ বছর বয়সী ছিলেন ৭৭২ জন। তাদের মধ্যে ৪৪৪ জনই শিক্ষার্থী। ২৪১ জন নারী, ৯৭ জন শিশু এবং ৮১ জন ষাটোর্ধ্ব। শিক্ষার্থী এবং তরুণদের অধিকাংশের মৃত্যু হয়েছে দ্রুত গতিতে মোটরসাইকেল চালানোর কারণে নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে। অন্যান্য বাহনগুলোও প্রায় একই কারণে দুর্ঘটনার শিকার হয়েছে। এই সব বাহনের অধিকাংশ চালকের বয়সই ১৮ থেকে ৪০-এর মধ্যে। বাংলাদেশের ২৬ টি জাতীয় দৈনিক, বিভিন্ন সংবাদ সংস্থা ও ইলেকট্রনিক্স চ্যানেলে প্রকাশিত-প্রচারিত তথ্যর পাশাপাশি নিজস্ব স্বেচ্ছাসেবকদের মাধ্যমে প্রাপ্ত তথ্যে সেভ দ্য রোড এই প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে।
সেভ দ্য রোড জানায়, দ্রুত গতিতে মোটরসাইকেল চালানোর পাশাপাশি নিয়ম না মানা এবং হেলমেট ব্যবহারে অনীহার কারণে ১ হাজার ৩৬৭ টি দুর্ঘটনায় আহত হয়েছেন ৯৯৪ এবং নিহত হয়েছেন ২৭৫ জন। অসাবধানতা ও ঘুমন্ত চোখে-ক্লান্তিসহ দ্রুত চালানোর কারণে ৮৩২টি ট্রাক দুর্ঘটনায় আহত হয়েছেন ৬৩৭ জন এবং নিহত হয়েছেন ১২১ জন। খানা খন্দক, অচল রাস্তা-ঘাট আর সড়কপথ নৈরাজ্যের কারণে ১ হাজার ১১৬টি বাস দুর্ঘটনায় আহত হয়েছে ১ হাজার ১০৬ জন এবং নিহত হয়েছে ৫২০ জন। পাড়া-মহল্লা-মহাসড়কে অসাবধানতার সঙ্গে চলাচলের কারণে লরি-পিকআপ-নসিমন-করিমন-ব্যাটারিচালিত রিকশা-সাইকেল ও সিএনজি দুর্ঘটনা ঘটেছে ১ হাজার ১১৬টি, আহত হয়েছে ৮৫৭ এবং ২২২ জন নিহত হয়েছে। এতে আরো বলা হয়, এই সময়ে ১৪৪ টি নৌ-দুর্ঘটনা ঘটেছে। এতে আহত ৫২১ জন, নিহত হয়েছে ২৩ জন। রেলপথ দুর্ঘটনা ঘটেছে ২১২টি। আহত হয়েছে ২৮৬ জন, নিহত হয়েছে ২১ জন। আকাশপথে কোনো দুর্ঘটনা না ঘটলেও বিমানবন্দরের অব্যবস্থাপনার কারণে অসুস্থ্য হয়ে হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে হয়েছে ৫৬ জনকে।
সংগঠনের মহাসচিব শান্তা ফারজানা জানান, গত মে মাসে ১৮ থেকে ৪০ বছর বয়সী তরুণদের বেপরোয়া বাহন চালনার কারণে নির্মম মৃত্যুর সংখ্যা অন্যান্য মাসগুলোর চেয়ে বেড়েছে। সেই সঙ্গে সরকারি ও স্বায়ত্বশাসিত প্রতিষ্ঠানের পরিবহনগুলোও পথ দুর্ঘটনায় মৃত্যুর সংখ্যা বাড়িয়ে তুলছে। বিশেষ করে সিটি করপোরেশনের ময়লার গাড়িতে কেবল ঢাকা নগরীতে আহত হয়েছেন ২৯ জন; এবং মৃত্যুবরণ করেছে মে মাসেই ২ জন। তিনি বলেন, ট্রাফিক বিভাগ, বিআরটিএসহ সংশ্লিষ্ট সবাইকে এখনই বেপরোয়া বাহন চালানো থেকে চালকদের নিবৃত করতে আইনের যথাযথ প্রয়োগ করতে হবে। পাশাপাশি সাধারণ মানুষের মাঝে সচেতনতা তৈরিতে স্ব-স্ব অবস্থান থেকে এগিয়ে আসতে হবে সবাইকে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *