সুরমার ঢেউ প্রবাস :: ইউকে-বাংলাদেশ ক্যাটালিস্টস অব কমার্স এন্ড ইন্ডাস্ট্রির (ইউকেবিসিসিআই) নতুন প্রেসিডেন্টের দায়িত্বভার গ্রহণ করেছেন নাজমুল ইসলাম নুরু। নতুন প্রেসিডেন্ট সংগঠনের সাবেক ফাইন্যান্স ডাইরেক্টর নাজমুল ইসলাম নুরুকে বরণ করে নিতে এবং সদ্য-সাবেক প্রেসিডেন্ট বজলুর রশীদ এমবিইকে বিদায় জানাতে ইউকেবিসিসিআই গত ২০ আগস্ট বৃহস্পতিবার এক অনুষ্ঠানের আয়োজন করে। নর্থ-ওয়েস্ট লন্ডনের ওয়ার্টফোর্ডের রাজ গার্ডেন রেস্টুরেন্টে সংগঠনের চেয়ারম্যান বিশিষ্ট ব্যবসায়ী ইকবাল আহমদ ওবিই’র সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে অতিথির বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশ হাইকমিশনের কমার্শিয়াল কনস্যুলার জাকারিয়া হক।
অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন ইউবিসিসিআইর নবনির্বাচিত ভাইস প্রেসিডেন্ট জামাল উদ্দিন মকদ্দুস, নবনির্বাচিত ফাইন্যান্স ডাইরেক্টর কামরু আলী, লন্ডন রিজিয়নের নবনির্বাচিত প্রেসিডেন্ট ওলি খান, বাংলাদেশ ক্যাটারার্স এসোসিয়েশনের চীফ ট্রেজারার সাইদুর রহমান বিপুল, সাপ্তাহিক দেশ পত্রিকার সম্পাদক তাইসির মাহমুদ, ইউবিসিসিআইর লিগ্যেল এফেয়ার ডাইরেক্টর আনোয়ার বাবুল মিয়া, ইন্টারন্যাশনাল ট্রেড অ্যাফেয়ার্স ডাইরেক্টর রহিমা মিয়া, মেম্বারশীপ ডাইরেক্টর সাইফুল আলম, এসিসটেন্ট মেম্বারশীপ ডাইরেক্টর সিদ্দিকুর রহমান, ডাইরেক্টর হারুন মিয়া, কর্পোরেট ডাইরেক্টর জসিম উদ্দিন, সদস্য আশিক চৌধুরী, সদস্য আবু বকর খান, সাবেক ডাইরেক্টর এস আই আজাদ আলী ও ইউবিসিসিআইর শুভাকাংখী জনসন ওয়াং।
অনুষ্ঠানে নবনির্বাচিত প্রেসিডেন্ট নাজমুল ইসলাম নুরু ও বিদায়ী প্রেসিডেন্ট বজলুর রশীদ এমবিইকে ফুল দিয়ে শুভেচ্ছা জানান ইউকেবিসিসিআই’র মিডল্যান্ডস রিজিয়নের প্রেসিডেন্ট ও সাপ্তাহিক সুরমার ঢেউ পত্রিকার প্রতিষ্ঠাতা সম্পাদক ও প্রকাশক, ড. এম জি মৌলা মিয়া। বিদায়ী প্রেসিডেন্ট বজলুর রশীদকে বিশেষ সম্মাননা ক্রেস্ট প্রদান করেন ইউকেবিসিসিআই লন্ডন রিজিয়নের নবনির্বাচিত প্রেসিডেন্ট ওলি খান।
অনুষ্ঠানে ইউকেবিসিসিআই চেয়ারম্যান ইকবাল আহমদ ওবিই বলেন, আমি বিভিন্ন সংগঠনের সাথে সম্পৃক্ত। কিন্তু, আমার কাছে সবচেয়ে অগ্রাধিকার হচ্ছে ইউকেবিসিসিআই। সকলের সহযোগিতায় আমরা এ সংগঠন প্রতিষ্ঠার পর ৩টি সফল ‘গালা ডিনার’ করতে সক্ষম হয়েছি। কমিউনিটিতে অনেক সংগঠন রয়েছে। কিন্তু, প্রকৃত অর্থে কমিউনিটির মানুষের জন্য কাজ করার মত এমন সংগঠন কম। আমরা এ সংগঠনকে কমিউনিটির সংগঠন হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করতে চাই। আমরা এ সংগঠনকে সাফল্যের সাথে এগিয়ে নিয়ে যাবো এবং একসময় নতুন প্রজন্মের কাছে হস্তান্তর করে সরে যাবো। তিনি বলেন, আমাদের কাজকর্মে এ সংগঠনকে সবার উর্দ্ধে তুলে ধরতে হবে। আমরা যা করবো সংগঠনের জন্য করবো। প্রতিটি কাজের ক্ষেত্রে স্বচ্ছ থাকতে হবে। তিনি বলেন, আমরা মারা যাওয়ার পর কে কী ছিলাম সেটি কেউ দেখবেনা। দেখবে ভালো মানুষ ছিলাম কি-না। ভালো মানুষ হতে পারলে আমরা মানুষের হৃদয়ে স্থান করে নিতে পারবো। তাই আমাদের ভালো কাজের মাধ্যমে ভালো মানুষ হওয়ার চেষ্টা করতে হবে। তিনি সংগঠনের প্রতি বিদায়ী প্রেসিডেন্ট বজলুর রশীদ এমবিইর বিগতদিনের ভুমিকার ভুয়শী প্রশংসা করে বলেন, এ সংগঠন প্রতিষ্ঠায় তিনি অসাধারণ ভুমিকা রেখেছেন। বিশেষকরে ৩টি সফল ‘গালা ডিনার’ তাঁর কঠোর পরিশ্রমের ফসল। তিনি যা করতে চেয়েছেন আমরা সহযোগিতার মনোভাব নিয়ে এগিয়ে এসেছি। তাঁকে সর্বান্তকরণে সহযোগিতা করেছি। তিনি প্রেসিডেন্ট পদ থেকে বিদায় নিচ্ছেন বটে, কিন্তু আমাদের তো আর ছেড়ে যাচ্ছেননা, তিনি এই সংগঠনের ডাইরেক্টর। ভবিষ্যৎ কর্মপরিকল্পনায় তাঁর পরামর্শ ও সহযোগিতা আগের মতোই আমাদের প্রয়োজন।
বিদায়ী প্রেসিডেন্ট বজলুর রশীদ এমবিই বলেন, আমরা যখন ইউকেবিসিসিআই প্রতিষ্ঠা করি তখন অনেকেই সন্দিহান ছিলেন কতদিন এই সংগঠন টিকবে। মাত্র ৮জনের সমন্বয়ে আমাদের যাত্রা শুরু হয়েছিলো। সকলেই একটি আধুনিকমানের সংগঠন করতে চেয়েছিলেন। এজন্য আমাদেরকে যথাযথ গাইডলাইন মেনে সংগঠনটি দাঁড় করতে হয়েছিলো। সকলের সহযোগিতায় আমরা এই সংগঠনকে একটি পর্যায়ে নিয়ে আসতে সক্ষম হয়েছি। তিনটি সফল গালা ডিনার উপহার দিতে পেরেছি। আমাকে এই সংগঠনের প্রেসিডেন্ট করা হয়েছিলো বলেই আমি এই কাজ করতে পেরেছি। এটি আমার বড় সৌভাগ্য। এজন্য কমিটির সকলের কাছে আমি গভীরভাবে কৃতজ্ঞ। কারণ তাঁরা আমাকে ফ্রিহ্যা- কাজ করার সুযোগ দিয়েছিলেন।
তিনি বলেন, আজকের অনুষ্ঠানে আমার সম্পর্কে যে প্রশংসামূলক কথাগুলো বলা হয়েছে তাতে আমি বিব্রত। কারণ, এই প্রাপ্তি শুধু আমার নয়, এটা আমাদের সকলের। তিনি বলেন, আমি কমিউনিটি সংগঠনে কাজে বিশ্বাসী। কাজ আমার নেশা। জীবনে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগের আগমুহুর্ত পর্যন্ত কমিউনিটির জন্য কাজ করতে চাই। কমিউনিটির একজন কর্মী হিসেবে থাকতে চাই।
তিনি বলেন আমাদের সংগঠন এই পর্যায়ে আসার পেছনে মিডিয়ার প্রশংসনীয় ভুমিকা রয়েছে। প্রতিটি মিডিয়া হাউজ আমাদেরকে আন্তরিকভাবে সাপোর্ট করেছে। তাছাড়া বাংলাদেশ হাইকমিশনের সহযোগিতার জন্যও আমরা কৃতজ্ঞ। নবনির্বাচিত প্রেসিডেন্ট নাজমুল ইসলাম নুরু তাঁকে প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত করায় সকলকে ধন্যবাদ জানিয়ে আগামী দিনে দায়িত্বপালনে সকলের আন্তরিক সহযোগিতা কামনা করেন। তিনি জানান, ইউকেবিসিসিআই’র সদস্য ফিতে বিশেষ ছাড় দেয়া হয়েছে। সংগঠনের বার্ষিক সদস্য ফি দুইশ’ পাউন্ড। বর্তমানে (একটি নির্দিষ্ট সময় পর্যন্ত) দুই শ’ পাউন্ড ফি দিয়ে ব্যবসায়ীরা দুই বছরের জন্য সদস্য হতে পারবেন। তিনি ব্যবসায়ীদেরকে ইউকেবিসিসিআইর সদস্য হবার আহবান জানিয়ে বলেন, আগামী বছরের সামারে সংগঠনের পুর্নাঙ্গ কমিটি গঠনের পরিকল্পনা রয়েছে।