হবিগঞ্জের সেন্ট্রাল হসপিটাল ও ডায়াগনস্টিক সেন্ট্রারে নারীর টিউমারের স্থলে জরায়ু অপরেশনের অভিযোগ

হবিগঞ্জের সেন্ট্রাল হসপিটাল ও ডায়াগনস্টিক সেন্ট্রারে নারীর টিউমারের স্থলে জরায়ু অপরেশনের অভিযোগ

সুরমার ঢেউ সংবাদ :: হবিগঞ্জ শহরের টাউন হল রোডে অবস্থিত ‘সেন্ট্রাল হসপিটাল ও ডায়াগনস্টিক সেন্ট্রারে’ এক নারীর টিউমার অপারেশন করতে গিয়ে জরায়ু কেটে ফেলার অভিযোগ উঠেছে ডাঃ আরশেদ আলীর বিরুদ্ধে। এরপর থেকে জীবন মৃত্যুর সন্ধিক্ষণে রয়েছেন ওই নারী। ২৪ আগষ্ট সোমবার রাতে সেন্ট্রাল হসপিটাল এন্ড ডায়াগনস্টিক সেন্টারে এসে রোগীর স্বজনরা বিক্ষোভ করেন। খবর পেয়ে সদর থানার এসআই আব্দুর রহিমের নেতৃত্বে একদল পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে পরিস্থিতি শান্ত করেন। এ ঘটনায় রোগীর স্বজনরা ‘সেন্ট্রাল হসপিটাল এন্ড ডায়াগনস্টিক সেন্টার’ ও ডা. আরশেদ আলীর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়ার দাবি জানিয়েছেন প্রশাসনের নিকট ।
জানা যায়- বানিয়াচং উপজেলার মক্রমপুর গ্রামের নোয়াজিশ মিয়ার স্ত্রী খদর চাঁন জরায়ু টিউমারে আক্রান্ত হন। এক সপ্তাহ আগে তিনি হবিগঞ্জ সদর আধুনিক হাসপাতালে ভর্তি হন। রোববার সকালে হবিগঞ্জ সদর আধুনিক হাসপাতালের গাইনি বিভাগের কনসালটেন্ট ডা. আরশেদ আলী তাকে অপারেশনের জন্য শহরের টাউন হল রোডে অবস্থিত ‘সেন্ট্রাল হসপিটাল এন্ড ডায়াগনস্টিক সেন্টারে’ ভর্ত্তির পরামর্শ দেন। তার পরামর্শে ওই নারীকে সেন্ট্রাল হসপিটালে ভর্তি করেন তার স্বজনরা। বিকেলের দিকে ডা. আরশেদ আলী সেন্ট্রাল হসপিটালে ওই নারীর জরায়ু টিউমারের অপারেশন করেন। কিন্তু, অপারেশন শেষে ওই নারীকে ওয়ার্ডে স্থানান্তর করার কয়েক ঘন্টা অতিবাহিত হলেও প্রস্রাব হবার জন্য লাগানো ক্যাথেটার দিয়ে প্রসাব আসা বন্ধ থাকে। রাত প্রায় ১টা পর্যন্ত অপেক্ষা করেও প্রসাব বের না হওয়ায় ওই নারীর পেট ফুলে উঠে। একপর্যায়ে রাত ১টার পর ডা. আরশেদ আলীকে খবর দিলে তিনি এসে চিকিৎসা করেন। কিন্তু এরপরও অবস্থার উন্নতি না হওয়ায় ভোরে তাকে সিলেট প্রেরণ করা হয়।
এদিকে, মুমূর্ষু অবস্থায় ওই নারীকে সিলেট পাঠালেও রোগীর সঙ্গে দেয়া ছাড়পত্রে সীল দেয়নি সেন্ট্রাল হসপিটাল কর্তৃপক্ষ। যার ফলে সিলেটের কোনো হাসপাতাল ওই রোগীকে ভর্তি নেয়নি। এতে রোগীর অবস্থা আরো শঙ্কটাপন্ন হয়ে উঠে। সারাদিন সিলেটের বিভিন্ন হাসপাতালে ঘুরেও রোগীকে ভর্তি করতে না পারায় ২৪ আগষ্ট সোমবার রাত ৯টার দিকে আবারো রোগী নিয়ে হবিগঞ্জ ফিরে আসেন স্বজনরা। পরে তারা সেন্ট্রাল হসপিটালে এসে বিক্ষোভ করলে হবিগঞ্জ সদর থানা পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে পরিস্থিতি শান্ত করেন। একপর্যায়ে ছাড়পত্রে সীল নিয়ে আবারো তারা রোগীকে নিয়ে সিলেট চলে যান।
এ ব্যাপারে রোগীর ভাগ্নে মহিবুল ইসলাম শাহীন বলেন, ডাক্তার আরশেদ আলী ও সেন্ট্রাল হসপিটাল কর্তৃপক্ষের ভুলের কারণে মৃত্যুর মুখে পড়েছে আমাদের রোগী। ডা. আরশেদ আলী অপারেশনের সময় রোগীর জরায়ু কেটে ফেলেছেন। যার ফলে তিনি এখন মৃত্যু পথযাত্রী।
এ ব্যাপারে সেন্ট্রাল হসপিটাল এন্ড ডায়াগনস্টিক সেন্টারের ম্যানেজার অসীম দেব বলেন, এই রোগীকে রিলিজ দেয়ার সময় আমি ছিলামনা। তবে এখন আমরা হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের উদ্যোগে ওই নারীকে সিলেট নিয়ে যাচ্ছি এবং রোগীর সুস্থ্যতার জন্য যা যা করা প্রয়োজন হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ তা করবে। এ বিষয়ে জানতে ডাঃ আরশেদ আলীকে বার বার ফোন করলেও তিনি তা রিসিভ করেননি।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *