সুনামগঞ্জের হাওর এলাকায় সাড়ে ১৩ কি. মি. উড়ালসড়ক নির্মান করতে যাচ্ছে সরকার

সুনামগঞ্জের হাওর এলাকায় সাড়ে ১৩ কি. মি. উড়ালসড়ক নির্মান করতে যাচ্ছে সরকার

সুরমার ঢেউ সংবাদ :: সুনামগঞ্জের বিচ্ছিন্ন হাওর এলাকায় সাড়ে ১৩ কি. মি. উড়ালসড়ক নির্মান করতে যাচ্ছে সরকার। এর মাধ্যমে উন্নত যোগাযোগ ব্যবস্থার অধীনে আসবে জেলার ধর্মপাশা, তাহিরপুর, জামালগঞ্জ ও দিরাই উপজেলা। হাওর এলাকায় গ্রামীণ অবকাঠামো উন্নয়ন প্রকল্পের অধীনে এ উড়ালসড়ক নির্মাণ করা হবে। প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করবে স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর (এলজিইডি)। এলজিইডি সূত্র জানায়, প্রাথমিকভাবে প্রকল্পের প্রস্তাবিত ব্যয় ধরা হয়েছে সাড়ে ৩ হাজার কোটি টাকা। প্রকল্পের মাধ্যমে হাওর অঞ্চলের যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নয়নে প্রকল্পের ডিপিপিতে (উন্নয়ন প্রকল্প প্রস্তাব) কিছু কাজের কথা উল্লেখ করা হয়েছে। উড়ালসড়ক ছাড়াও প্রকল্পের মাধ্যমে ১০৭ কিলোমিটার নান্দনিক সড়ক নির্মাণ করা হবে। পানিরোধী সড়ক নির্মাণ করা হবে ২৮ কিলোমিটার- যাতে বর্ষা মৌসুমে এসব সড়ক ডুবে গেলেও কোন সমস্যা হবেনা। এছাড়া উপজেলা সাবমারসিবল সড়ক হবে ১৩ কিলোমিটার। অল সিজন ইউনিয়ন সড়ক হবে ১৫ কিলোমিটার। নির্মাণ করা হবে উপজেলা সড়কে ২ হাজার ৯৮৭ মিটার ও ইউনিয়ন সড়কে ৬৮৫ মিটার ব্রিজ। বিভিন্ন সড়কে থাকবে ৭৭৫ মিটার কালভার্ট।
হাওরে উড়ালসড়ক নির্মাণ প্রকল্পের ডিপিপি পরিকল্পনা কমিশনে পাঠানো হয়েছে। প্রকল্পের ডিপিপি নিয়ে প্রকল্প মূল্যায়ন কমিটির (পিইসি) বৈঠকও হয়েছে। জানা গেছে- প্রকল্প বাস্তবায়নে পরিকল্পনা কমিশন কিছু নির্দেশনা দিয়েছে। এর পরেই প্রকল্পটি চূড়ান্ত অনুমোদনের জন্য জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির (একনেক) সভায় উপস্থাপন করা হবে। চলতি সময় থেকে প্রকল্পের বাস্তবায়ন মেয়াদ ধরা হয়েছে ২০২৫ সালের জুন পযর্ন্ত। প্রকল্প প্রসঙ্গে এলজিইডির প্রধান প্রকৌশলী মো. আব্দুর রশীদ খান বলেন- সুনামগঞ্জ বাংলাদেশের অন্যান্য স্থানের মতো নয়। হাওরের কারণে এ জেলার অধিকাংশ উপজেলা বিচ্ছিন্ন। এসব উপজেলায় যোগাযোগ ব্যবস্থা উন্নয়নের জন্য উড়াল সড়কসহ অন্যান্য অবকাঠামো নির্মাণের প্রকল্প হাতে নেয়া হয়েছে। প্রকল্পটি একেবারেই প্রাথমিক অবস্থায় রয়েছে। আরও কিছু যাচাই-বাছাই করে প্রকল্পটি একনেক সভায় তোলা হবে।
জানা গেছে- উড়াল সড়ক নির্মাণ পরবর্তী পর্যায়ে পরিবেশ ও সামাজিক ব্যবস্থাপনা নিয়ে কাজ করা হবে। উড়াল সড়কের জন্য ট্রাফিক ম্যানেজমেন্ট পরিকল্পনাও গ্রহণ করা হবে। হাওরের উদ্ভিদ ও প্রাণিকূল যাতে শব্দ দূষণের শিকার না হয় সেজন্য সড়কে শব্দ প্রতিরোধক ব্যবহার করা হবে। পরিবেশ ও সামাজিক প্রভাব নিরুপণের জন্য প্রকল্পের বিস্তারিত রাস্তার ধরণ ও রাস্তার অ্যালাইনমেন্ট, প্রস্থ, উচ্চতা, চাপ, অবস্থান নির্ণয় করা হয়েছে। এক্ষত্রে বিশদ সার্ভে করা হয়েছে। সুনামগঞ্জের হাওরে উড়ালসড়ক নির্মাণের ফলে যোগাযোগ ব্যবস্থার নতুন দিগন্ত সূচিত হবে। বিচ্ছিন্ন উপজেলা সংযোগের পাশাপাশি পযর্টনের বিকাশ ও পর্যটন শিল্পে সমৃদ্ধ হবে হাওর।
হাওরে উড়ালসড়ক প্রসঙ্গে পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান বলেন- হাওরের মানুষ প্রাকৃতিক কারণেই অবহেলিত। বছরের ৬ মাস হাওর অঞ্চল পানির নিচে থাকে। ধান ও মাছ ছাড়া অন্য কোনো আয়ের সংস্থান নেই। তবে বর্তমান সরকার হাওরবান্ধব সরকার। প্রধানমন্ত্রী নিজ উদ্যোগে হাওরের জন্য অনেক উন্নয়ন প্রকল্প দিয়েছেন। এজন্য আমরা হাওরবাসী প্রধানমন্ত্রীর নিকট ঋণী।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *