রুহুল আলম রনি, ভ্রাম্যমান প্রতিনিধি :: মৌলভীবাজার জেলার শ্রীমঙ্গল উপজেলায় আদালতের স্থিতাবস্থা অমান্য করে স্থাপনা নির্মান ও শ্রীমঙ্গল থানার ওসি আদালতের নির্দেশ কার্যকর না করা প্রসঙ্গে সংবাদ সম্মেলনকারী ইসমাইল মিয়া সাংবাদিবৃন্দের কাছে প্রশ্ন রেখেছেন- আমরা জনগণের আশ্রয় নেয়ার জায়গা আর কোথায় রইলো ? পিতার সকল উত্তরাধীকারের পক্ষে শ্রীমঙ্গল উপজেলার রাধানগরের মৃতঃ ময়না মিয়া ও ভানু বিবির পুত্র বর্তমানে মৌলভীবাজার সদরের কদুপুরের বাসিন্দা ইসমাইল মিয়া লিখিত বক্তব্যে জানান- তাদের দাদী মৃতঃ হাজেরা বেগমের ত্যাজ্যবিত্ত বালিশিরা পাহাড় ব্লক-২ মৌজার ৭২নং জেএলস্থিত ১৪৬নং আরএস খতিয়ানের ৩০৩নং আর এস দাগে বাগান রকম .৯৭ একর, ৩০৭নং দাগে সাইল রকম .৯৪ একর ও ৩০৮নং দাগে বাড়ী রকম .৮৭ একর মিলিয়ে মোট ২.৭৮ একর ভূমি রয়েছে।
অপরদিকে, দাদী হাজেরা বেগমের মৃত্যুতে উত্তরাধীকারী হন মোট ৫ জন- (১) পুত্র ময়না মিয়া (২) পুত্র এলাইচ মিয়া (৩) পুত্র মনতাজ মিয়া (৪) পুত্র ইদ্রিস মিয়া ও (৫) কন্যা নুরজাহান বেগম। পরবর্তীতে ময়না মিয়ার মৃত্যুতে তার উত্তরাধীকারী হন মোট ৫ জন- (১) স্ত্রী ভানু বিবি (২) আমি পুত্র ইসমাইল মিয়া (৩) পুত্র সিরাজ মিয়া (৪) পুত্র ইছুব মিয়া ও (৫) পুত্র ছুরত মিয়া। এর পরবর্তীতে এলাইচ মিয়ার মৃত্যুতে তার উত্তরাধীকারী হন মোট ৪ জন- (১) স্ত্রী জাহেদা বেগম (২) পুত্র আপ্তাব মিয়া (৩) পুত্র আছাদ মিয়া ও (৪) কন্যা রেহানা বেগম। এর পরবর্তীতে ইদ্রিছ মিয়ার মৃত্যুতে তার উত্তরাধীকারী হন মোট ৪ জন- (১) কালা মিয়া (২) রোকেয়া বেগম (৩) আমিনা বেগম ও (৪) প্রবাসী।
দাদীর ত্যাজ্যবিত্ত ২.৭৮ একর ভূমি অদ্যাবধি এজমালী রয়েছে। উত্তরাধিকার আইনানুযায়ী তারা মৃতঃ ময়না মিয়ার উত্তরাধীকারী ৫ জন উক্ত ভূমির ৯ ভাগের ২ ভাগ অর্থাৎ .৬১৭৭ একর ভূমির মৌরসী মালিক হওয়া সত্তেও, তারা পরিপূর্ণভাবে ভোগদখল করতে পারছেননা। একারণে তারা তাদের .৬১৭৭ একর ভূমি ভাগভাটোয়ারাক্রমে আলাদা করে নিতে চাইলে, তাদের চাচা (১) মনতাজ মিয়া, ফুফু (২) নুরজাহান বেগম, চাচাতো ভাই (মৃতঃ এলাইচ মিয়ার পুত্র) (৩) আপ্তাব মিয়া ও (৪) আছাদ মিয়া, বোন (৫) রেহানা বেগম, চাচী (৬) জাহেদা বেগম, অপর চাচাতো ভাই (মৃতঃ ইদ্রিছ মিয়ার পুত্র) (৭) কালা মিয়া, বোন (৮) রোকেয়া বেগম ও (৯) আমিনা বেগম এর সাথে বিরোধ সৃষ্টি হয়। এমতাবস্থায় বাধ্য হয়ে তারা যুগ্ন জেলা জজ ২য় আদালত, শ্রীমঙ্গল, মৌলভীবাজারে ৯৮/২০১৯নং (স্বত্ত্ব) বাটোয়ারা মামলা দায়ের করেন। বিষয়টি জানতে পেরে প্রতিপক্ষরা তাদের ভূমিতে পাকা স্থাপনা নির্মানকাজসহ বিভিন্নভাবে ভূমির রকম পরিবর্তন শুরু করে। এর প্রেক্ষিতে তারা আদালতে উক্ত ভূমির উপর নিষেধাজ্ঞার প্রার্থনা করলে আদালত স্থিতাবস্থার আদেশ দেন। কিন্তু, প্রতিপক্ষরা আদালতের আদেশ অমান্য করে কার্যক্রম অব্যাহত রাখায় তারা বিষয়টি আদালতে অবহিতক্রমে প্রতিকার প্রার্থনা করলে, আদালত “প্রতিপক্ষ যাহাতে নালিশা ভূমি বিষয়ে কোনরুপ পরবর্তী পরিবর্তন করিতে না পারে তন্মর্মে সরেজমিন উপস্থিত হইয়া যথাযথ ব্যবস্থা নেয়ার জন্য” শ্রীমঙ্গল থানার ওসিকে নির্দেশ দেন। কিন্তু, ওসি অদ্যাবধি কোন ব্যবস্থা না নেয়ায়, প্রতিপক্ষরা উক্ত ভূমিতে কাজ অব্যাহত রেখেছে। এমতাবস্থায় তারা সহকারী জজ আদালত, শ্রীমঙ্গল, মৌলভীবাজারে ২৩/২০২২নং (ভায়োলেশন) মামলা দায়ের করেছেন।
ইসমাইল মিয়া বলেন- দেশে আইন, আদালত, আইন প্রয়োগ ও কার্যকরে পুলিশসহ আইন শৃংখলা রক্ষাকারী বিভিন্ন বাহিনী আছে। দেশের আইন-আদালত ও আইন শৃংখলা রক্ষাকারী বাহিনী হচ্ছে দেশের জনগণের শেষ ভরসাস্থল। আইন-আদালতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল বলেই তারা আইন-আদালতের আশ্রয় নিয়েছেন। আদালত যথাযথ আদেশ/নির্দেশ দিয়েছেন। কিন্তু, প্রতিপক্ষরা আইন ও আদালতের আদেশ/নির্দেশ অমান্য করে চলেছে। এর প্রেক্ষিতে আদালত যথাযথ ব্যবস্থা নেয়ার জন্য পুলিশকে নির্দেশনা দিয়েছেন। কিন্তু, পুলিশও আদালতের নির্দেশনা অমান্য করে চলেছে। এই যখন পরিস্থিতি, তখন জনগণ আর কি করার আছে ? জনগণের আশ্রয় নেয়ার জায়গা আর কোথায় রইলো ? এমতাবস্থায় তারা বিষয়টি সাংবাদিকবৃন্দকে অবহিত করছেন এবং লেখনির মাধ্যমে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ ও দেশের জনগণকে বিষয়টি অবহিত করার জন্য সাংবাদিকবৃন্দের প্রতি আকুল আবেদন করছেন।