সুরমার ঢেউ সংবাদ :: মাত্র ২০ রুপি (২৪ টাকা) এর জন্য ২২ বছর চালিয়েছিলেন আইনি লড়াই। কেউ আড়ালে হেসেছিলেন। কেউ আবার কুর্নিশ করেছিলেন। তবে নাছোড় আইনজীবী তুঙ্গনাথ চতুর্বেদী। তার আশা, এই আইনি লড়াই আরও অনেককে অনুপ্রেরণা জোগাবে। তারাও ন্যায়ের দাবিতে লড়াই চালাবেন। লড়াইয়ের শুরু ১৯৯৯ সালের ২৫ ডিসেম্বর।
মথুরা ক্যান্টনমেন্ট স্টেশনে টিকিট কাটতে গিয়ে অদ্ভুত এক পরিস্থিতির মুখে পড়েন আইনজীবী তুঙ্গনাথ। তুঙ্গনাথ টিকিট কাউন্টারে গিয়ে মোরাদাবাদ যাওয়ার দু’টি টিকিট চান। একটি টিকিটের দাম ওই সময় ছিল ৩৫ রুপি। দু’টির দাম ৭০ রুপি। টিকিট কাউন্টারে ছিলেন যে রেলকর্মী, তাকে ১০০ রুপির নোট দিয়েছিলেন তুঙ্গনাথ। কিন্তু, সেই কর্মী ৩০ রুপির পরিবর্তে ১০ রুপির একটি নোট ফেরত দেন তুঙ্গনাথকে। মথুরা আদালতের আইনজীবী তুঙ্গনাথের কথায়- ‘সে সময় কম্পিউটার ছিলনা। তাই হাতে-লেখা টিকিট দিয়েছিলেন রেলকর্মী।’ তুঙ্গনাথের অভিযোগ- টিকিটের দাম বাবদ অতিরিক্ত ২০ রুপি নিয়েছিলেন রেলকর্মী। সেকথা জানিয়ে টাকা ফেরত চাইলেও তা পাননি আইনজীবী। রেলকর্মী সেই রুপি দিতে অস্বীকার করেন।
এর পরেই জেলা ক্রেতা সুরক্ষা আদালতের দ্বারস্থ হন তুঙ্গনাথ। সেখানে উত্তর-পূর্ব রেলওয়ে (গোরক্ষপুর) এবং ওই রেলকর্মীর বিরুদ্ধে অভিযোগ করেন। মথুরা ক্যান্টনমেন্ট স্টেশনের বিরুদ্ধেও অভিযোগ করেন তিনি। সেই ২০ রুপির জন্য প্রায় ২২ বছর ধরে আইনি লড়াই চালিয়েছেন তুঙ্গনাথ। গত ৫ আগস্ট তার পক্ষে রায় দিয়েছে মথুরার ক্রেতা সুরক্ষা আদালত। জেলা ক্রেতা সুরক্ষা আদালতের প্রেসিডেন্ট নবনীত কুমার নির্দেশ দিয়েছেন ৩০ দিনের মধ্যে ২০ রুপি ফেরত দিতে হবে তুঙ্গনাথকে। তার সঙ্গে ১৯৯৯ থেকে ২০২২ সাল পর্যন্ত প্রতি বছর ১২ শতাংশ হারে সুদও মেটাতে হবে ভারতীয় রেলকে। তাছাড়া মামলার খরচ এবং তা চলার সময় তুঙ্গনাথের যে মানসিক চাপ গিয়েছে, তার জন্য ১৫ হাজার রুপি ক্ষতিপূরণ দিতে হবে রেলকে।
তুঙ্গনাথের বয়স এখন ৬৬। জানালেন- এত বছর যে লড়াই করেছেন তার তুলনায় এই ক্ষতিপূরণ খুবই সামান্য। তবে তিনি ন্যয়বিচার চেয়েছিলেন, টাকা নয়। তাই, আইনজীবী তুঙ্গনাথ এই রায়ে খুশি। সূত্র : আনন্দবাজার।