সুরমার ঢেউ সংবাদ :: বরিশালে তিন বছরের শিশুকন্যাকে ছেড়ে স্বামীকে তালাক দিয়ে প্রেমিকের সঙ্গে পালিয়ে যান এক নারী। পুরানো প্রেমিকের সঙ্গে ঘর বাঁধার ইচ্ছে ছিল। কিন্তু, এর এক ঘণ্টার মাথায় ওই নারীকে রাস্তায় ফেলে পালিয়ে গেছেন তার প্রেমিক। সব হারিয়ে বিচারের দাবিতে থানার বারান্দায় ঘুরছেন ওই নারী। স্বামীর ঘর, বাবার ঘর দুটোর একটিতেও হচ্ছে না জায়গা। এমন ঘটনা ঘটেছে গত ১৬ মার্চ বরিশাল শহরের ২৩নং ওয়ার্ডের সর্দারপড়া এলাকায়। এ ঘটনায় ১৭ মার্চ বাকেরগঞ্জ থানায় একটি অভিযোগ দায়ের করেন ভুক্তভোগী ওই নারীর মা। এরপরই অভিযুক্ত ইমনের দুলাভাই মেহেদী হাসানকে গ্রেফতার করে পুলিশ। গ্রেফতার মেহেদী একই এলাকার বাসিন্দা। ১৮ মার্চ সোমবার বিকেলে বাকেরগঞ্জ থানার ওসি আফজাল হোসেন এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
তিনি বলেন- ঘটনায় এখনো পলাতক রয়েছে প্রেমিক ইমন। ওই গৃহবধূর বিয়ের পর প্রেমিক ইমন সৌদি আরব চলে যান। ৫ দিন আগে দেশে ফিরে এমন ঘটনা ঘটান তিনি। এ ঘটনায় বাকেরগঞ্জ থানায় একটি অভিযোগ দায়ের করেন ওই নারীর মা। এ ঘটনায় ভুক্তভোগী ওই নারীকে থানা হেফাজতে নিয়ে ইমনের দুলাভাইকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। ওসি আরও বলেন- এ ঘটনায় ওই গৃহবধূর মা একটি অপহরণ মামলা করেছে। এর ভিত্তিতে ইমনের দুলাভাইকে গ্রেফতার করা হয়েছে। বিজ্ঞ আদালতে অপরাধীর জবানবন্দি নেয়া হবে। এ ঘটনায় অপর আসামিদেরও গ্রেফতার করা হবে। স্থানীয়রা জানান- ৫ বছর ধরে সম্পর্ক ছিলো প্রেমিক ইমন ও ওই নারীর। ইমন বেকার থাকায় তার অন্যত্র বিয়ে দিয়ে দেয় পরিবার। কিন্তু, বিয়ের পরেও স্বামী এবং প্রেমিকের সঙ্গে সমানভাবেই সম্পর্ক চালিয়ে আসছিলেন ওই নারী। গত ১৬ মার্চ বাকেরগঞ্জের স্বামীর বাড়ি থেকে তিনি প্রেমিক ইমনের সঙ্গে পালিয়ে আসার সময় স্থানীয়রা তাদের আটক করে থানায় দেয়।
পরে স্থানীয়রা বিষয়টি মীমাংসায় বসলে স্বামী সন্তান রেখে প্রেমিক ইমনের সঙ্গে চলে যাওয়ার সিদ্ধান্ত জানান ওই নারী। এরপর প্রেমিকের সঙ্গে বরিশালে রওয়ানা দিলে গৃহবধূকে রাস্তায় রেখে পালিয়ে যান প্রেমিক ইমন। আর, তখনই বাধে বিপত্তি। এসময় ইমনকে খুঁজে না পেয়ে ত্রিপল নাইনে সহায়তা চান ওই গৃহবধূ। এরপর কোতোয়ালি থানা পুলিশ তাকে উদ্ধার করে ভিকটিম সাপোর্ট সেন্টারে রাখে। সেখান থেকে বের হয়ে বিয়ের দাবিতে ওই নারী গিয়ে হাজির হন বরিশাল নগরীর ২৩নং ওয়ার্ডের সর্দার পড়া এলাকায় প্রেমিক দাবি করা ইমনের বাসায়।
ভুক্তভোগী নারী জানান- তার বিয়ের পর ইমন সৌদি আরব চলে যায়। ৫ দিন আগে দেশে ফিরে এমন ঘটনা ঘটায়। ইমনের জন্য আমি সংসার ছেড়েছি। তার জন্য আমার স্বামী আমাকে ত্যাগ করেছে। স্বামী-সন্তান ছেড়ে এসে ইমনের প্রতারণার শিকার হয়েছি। এখন ইমন আমাকে কোথায় রাখবে সেটা সে জানে। ওই নারী আরও বলেন- ইমন আমাকে ব্লাকমেইল করেছে। সে বলেছে তার কাছে আমার কিছু গোপন ছবি আছে, সেগুলো ভাইরাল করে দেবে। আমি তার সঙ্গে না গেলে সে গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যার হুমকিও দেয়। ওই নারীর মা জানান- মেয়েকে আর ঘরে তুলে নেবেন না। স্বামী-সন্তান ছেড়ে প্রেমিকের কাছে যাওয়াটা মেনে নিতে পারছেন না তিনি।
এদিকে, খবর পেয়ে সংবাদ সংগ্রহ করতে গেলে সাংবাদিকদের দেখেই চড়াও হন ইমনের দুলাভাইসহ তার পুরো পরিবার। এসময় ২৩ নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলরের সমন্বয়ে ঘটনাটি মীমাংসার চেষ্টা করা হয়। তবে, মীমাংসা না হওয়ায় পুলিশ এসে ওই নারীসহ প্রেমিক ইমনের দুলাভাইকে থানায় নিয়ে যায়। বরিশাল সিটি করপোরেশনের ২৩নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর এনামুল হক বাহার বলেন- ওই ছেলেটির জন্য মেয়েটি নিজেই তার সংসার ভেঙেছে। তারা দুজনই অপরাধী। তাদের দুজনেরই শাস্তি ভোগ করা উচিত।