সুরমার ঢেউ সংবাদ :: বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট-২ নামে দেশের দ্বিতীয় স্যাটেলাইট ২০২৩ সালের মধ্যে মহাকাশে পাঠানোর পরিকল্পনা করেছে সরকার। এ লক্ষ্যে পরামর্শক প্রতিষ্ঠান নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। কোন ধরনের স্যাটেলাইট পাঠালে দেশ উপকৃত হবে তা নির্ধারিত হলেই এর নির্মাণের জন্য সরকার চুক্তিবদ্ধ হবে।
মঙ্গলবার বাংলাদেশ স্যাটেলাইট কোম্পানি লিমিটেড ও পরামর্শক প্রতিষ্ঠান প্রাইস ওয়াটার হাউজ কুপার্স অ্যাডভাইজরির সঙ্গে চুক্তি স্বাক্ষর অনুষ্ঠানে বাংলাদেশ স্যাটেলাইট কোম্পানি লিমিটেডের (বিএসসিএল) চেয়ারম্যান ড. শাহজাহান মাহমুদ এসব তথ্য জানান। ১ লাখ ৮৫ হাজার ডলারে পরামর্শক নিয়োগ দেওয়া হয়েছে।
চুক্তি স্বাক্ষর অনুষ্ঠানে অনলাইনে অংশ নেন ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রী মোস্তাফা জব্বার। এছাড়া উপস্থিত ছিলেন বিটিআরসির চেয়ারম্যান শ্যাম সুন্দর শিকদার, ডাক ও টেলিযোগাযোগ বিভাগের সচিব মো. আফজাল হোসেন। এ সময় ফ্রান্সের পরামর্শক প্রতিষ্ঠান ‘প্রাইস ওয়াটার হাউজ কুপার্স’র প্রতিনিধিরা অনলাইনে যুক্ত ছিলেন।
বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইটের খরচ ৭ বছরে উঠে যাবে বিএসসিএল এর পক্ষ থেকে এর আগে এমন তথ্য দেওয়া হয়েছিল। লক্ষ্য পূরণে কোম্পানি কতটুকু সফলতা অর্জন করেছে এমন প্রশ্নের জবাবে শাহজাহান মাহমুদ বলেন, এখন আমরা প্রথম স্যাটেলাইট থেকে প্রতি বছর ১ কোটি ২০ লাখ টাকা পাচ্ছি। এই টাকা টেলিভিশনগুলো থেকে আসছে। আমাদের প্রথম স্যাটেলাইটের ৪০টি ট্রান্সপন্ডারের ২০টি নিজেদের জন্য রেখে বাকি ২০টি বাণিজ্যিক কাজে ব্যবহার করব।
তিনি বলেন, আমরা যখন স্যাটেলাইট নির্মাণের পরিকল্পনা করি তখন এর ব্যান্ডউইথ প্রাইজ অনেক হাই ছিল। এখন স্যাটেলাইট অনেক সহজলভ্য হয়েছে। নেপালও কয়েক দিনের মধ্যে একটি স্যাটেলাইট মহাকাশে পাঠাবে। আমাদের স্যাটেলাইট বিশ্বের অনেক প্রতিষ্ঠান ব্যবহার করতে চায়। সমস্যা হলো তারা যে দামের কথা বলছে তা অনেক কম। এখন ওই সব কোম্পানিকে যদি আমরা কম দামে স্যাটেলাইট ব্যবহার করতে দিই তাহলে দেশের যেসব কোম্পানি এটি ব্যবহার করছে তারা দাম কমানোর জন্য বলবে। টেলিভিশন সমিতি তখন আন্দোলনে নামবে। তার চেয়ে আমরা ভাবছি দেশের প্রতিষ্ঠানগুলোর কাছে এটি বিক্রি করতে। দেশের ব্যবহারকারী প্রতিষ্ঠানের মাত্র ২ শতাংশ আমরা কভারেজ দিচ্ছি। ইতিমধ্যে অটোমেটিক ট্রোলার মেশিন (এটিএম) বুথের জন্য আমাদের স্যাটেলাইট ব্যবহারের আবেদন করেছে অনেকে। এভাবে আমরা খরচ ওঠাতে চাই।
তিনি আরও বলেন, আজ আমরা পরামর্শক প্রতিষ্ঠান নিয়োগ দিলাম। এটি আরও সাত মাস আগেই নিয়োগ দেওয়ার কথা ছিল। কিন্তু করোনার কারণে তা পিছিয়ে যায়। এটা (বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট) এই সরকারের নির্বাচনী ইশতেহারে ছিল, কিন্তু এখন এটা আমাদের।
কী ধরনের স্যাটেলাইট হবে এমন প্রশ্নের উত্তরে শাহজাহান মাহমুদ বলেন, এটি নির্ধারণের জন্যই আমরা পরামর্শক প্রতিষ্ঠান নিয়োগ দিয়েছি। তাদেরকে তিন মাস সময় দেওয়া হয়েছে। এর মধ্যে তারা আমাদেরকে বিস্তারিত জানাবে। দেশের প্রথম বাণিজ্যিক স্যাটেলাইট বঙ্গবন্ধু-১ একটি ‘জিওস্টেশনারি কমিউনিকেশন’ স্যাটেলাইট। তা কেবল যোগাযোগের কাজে লাগছে। দ্বিতীয়টি অনেকটা হাইব্রিড স্যাটেলাইট হতে পারে। স্যাটেলাইটটিকে আবহাওয়া, নজরদারি বা নিরাপত্তা সংক্রান্ত কাজে ব্যবহার করা যেতে পারে।