মৌলভীবাজারে রেদুয়ান হত্যাকারীদের গ্রেফতারের আশায় সংবাদ সম্মেলন

মৌলভীবাজারে রেদুয়ান হত্যাকারীদের গ্রেফতারের আশায় সংবাদ সম্মেলন

ষ্টাফ রিপোর্টার :: মৌলভীবাজারে গুলি করে রেদুয়ান হত্যাকারীদের গ্রেফতার ও বন্দুক উদ্ধারের আশায় সংবাদ সম্মেলন করেছেন নিহত রেদুয়ানের পরিবারসহ এলাকাবাসি। বন্দুকের গুলি ছুড়ে রেদুয়ানকে হত্যাকারী ও তার সহযোগীরা প্রকাশ্যে ঘুরে বেড়ালেও পুলিশ কাউকে গ্রেফতার করছেনা। অপরদিকে, হত্যাকারীরা এখন এলাকাবাসিকে হত্যার হুমকি দিচ্ছে প্রকাশ্যে। এর প্রেক্ষিতে আজ ২৬ সেপ্টেম্বর বৃহষ্পতিবার দুপুরে মৌলভীবাজার শহরের একটি রেষ্টুরেন্টে সংবাদ সম্মেলন করেছেন আতংকিত নিহত রেদুয়ানের পরিবারসহ এলাকাবাসি।
সংবাদ সম্মেলনে আতংকিত নিহত রেদুয়ানের পরিবারসহ এলাকাবাসি জানান- মৌলভীবাজারের সদর উপজেলার খলিলপুর ইউনিয়নস্থিত পংমদপুর গ্রামে গত ২৮ জুলাই সকাল ৭টার দিকে একই গ্রামের বাসিন্দা আকবর, লেফাস, লিয়াকত, মুকিদ, আকমান, সায়েক, জয়তুন, জমশেদ, মিছিল, ছুফি, সুমন, ছায়াদ ও জাবেদসহ প্রায় শ’খানেক লোক রেদুয়ানদের বাড়ি ঘেরাও কওে এবং কেউ কিছু বুঝে উঠার আগেই লেফাস সবাইকে হুকুম দেয়- কেউ যেন পালাতে না পারে, সবাইকে মেরে ফেলো। লেফাছ হুকুম দেয়ার সাথে সাথে আকবর তার বন্দুক থেকে রেদুয়ানের মাথায় গুলি করলে সে ধরাশায়ী হয়। এসময় তার মা-ভাইয়ের চিৎকার শুনে পাশের বাড়ির লোকজন এগিয়ে আসলে লেফাস আবারও হুকুম দেয়, যারা আসবে সবাইকে হত্যা করো। এসময় রেদুয়ানের ফুফু মৌ বেগম এগিয়ে আসলে লেফাস তার বন্দুক থেকে মৌ বেগমের পায়ে গুলি করে তাকে ধরাশায়ী করে। এসময় পাশের বাড়ির হোসেন এগিয়ে আসলে আকবরের ভাই আকমান তার বুকে গুলি করে এবং রেদুয়ানের ভাই ফয়ছল এবং মা রেশনা বেগমকে লাথি ও কিলঘুষি মারে। একইভাবে তারা হাসিদ মিয়াকে গুলি করে এবং ছুলফির আঘাতে তার একটি পা কেটে ফেলে। ঘটনার পর ৩০ জুলাই নিহত রেদুয়ানের মা রেশনা বেগম বাদী হয়ে ৭২ জনকে আসামী ও ১০/১৫ জনকে অজ্ঞাত আসামী করে মৌলভীবাজার মডেল থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন (মামলা নং ৩৯/২১৫ইং)। ওই মামলার ৫/৬ জন আসামী জেলহাজতে রয়েছে। কিন্তু, প্রধান আসামী আকবর এখনো অধরা রয়েছে। সংবাদ সম্মেলনকারীরা জানতে পেরেছেন আকবর এবং আকমান বর্তমানে দুবাই ও সৌদিতে রয়েছে। হত্যাকারীরা নিয়মিত বিভিন্ন মাধ্যমে রেদুয়ানের পরিবারসহ এলাকাবাসীকে হুমকি-ধামকি দিচ্ছে, মামলা তুলে না নিলে তারা আবারও হত্যাকান্ড ঘটাবে। ২৩ আগষ্ট বিকালে আসামী মুকিদ মিয়া, ছুফি মিয়া, জাবেদ মিয়া, লেফাস, লিয়াকত, ছায়াদ ও জমশেদ রেদুয়ানদের বাড়ির রাস্তার পাশে এসে হুমকি দিয়ে বলেছে, মামলা তুলে না নিলে তাদেরকে মেরে ফেলবে। এ ঘটনার সাথে সাথে তারা মৌলভীবাজার সদর সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপারকে ফোনে ঘটনা জানালে, তিনি কিছু করতে পারবেন না বলে ফোন কেটে দেন। পরবর্তীতে বার বার যোগাযোগ করার চেষ্টা করেও তারা ব্যর্থ হন। পরে তারা শেরপুর পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ এস আই নিয়াজ মোহাম্মদ শরিফের সাথে যোগাযোগ করলে তিনিও একই কথা বলে ফোন কেটে দেন। এ বিয়য়ে যারাই ফোন করেছেন সবাইকেই পুলিশ একই জবাব দিয়েছে। পুলিশ একদিকে হত্যাকারীদেরকে গ্রেফতার করছেনা, অপরদিকে এখনও তাদের বন্দুক উদ্ধার করার কোনো ভূমিকা নেয়নি। যদি বন্দুক উদ্ধার না করা হয় তবে তারা আরও হত্যাকান্ড ঘটাবে। এলাকায় আইন শৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতি হবে। এমতাবস্থায় বাধ্য হয়ে জীবনের নিরাপত্তার জন্য সংবাদ সম্মেলন করছেন বলে জানিয়ে তারা উল্লেখ করেন- এই লেফাস মিয়া, লিয়াকত মিয়া, মুকিদ মিয়া গত ২০১৮ সালে দুটি হত্যা করে। ওই হত্যামামলা এখনও চলমান (মামলা নং (১৪/১৯৪)। তারা আশা করছেন, হত্যাকারীদের ব্যাপারে প্রশাসন দ্রুত কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ করবেন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *