শ. ই. সরকার জবলু :: মৌলভীবাজার জেলার ৬৭টি ইউনিয়নের মধ্যে ৩৭টি ইউনিয়নস্থিত ৪৩২টি গ্রামের প্রায় ২ লাখ মানুষ বন্যাকবলিত হয়ে পড়েছেন।
গতকাল ১৮ জুন জেলা প্রশাসনের দেয়া তথ্য অনুযায়ী- সদর উপজেলার ৪টি ইউনিয়নের ১৮টি গ্রামের ৪০ হাজার মানুষ বন্যাকবলিত হয়ে পড়েছেন। প্রশাসনের পক্ষ থেকে এখানে ৯টি আশ্রয়কেন্দ্র ও ৯টি মেডিকেল টিম প্রস্তুত রাখা হয়েছে।
শ্রীমঙ্গল উপজেলার ৫টি ইউনিয়নের ১২টি গ্রামের ১ হাজার ৬৪০ মানুষ বন্যাকবলিত হয়ে পড়েছেন। প্রশাসনের পক্ষ থেকে এখানে ৭টি আশ্রয়কেন্দ্র ও ১০টি মেডিকেল টিম প্রস্তুত রাখা হয়েছে।
কুলাউড়া উপজেলার ৬টি ইউনিয়নের ৫৫টি গ্রামের ৫ হাজার মানুষ বন্যাকবলিত হয়ে পড়েছেন। প্রশাসনের পক্ষ থেকে এখানে ১৯টি আশ্রয়কেন্দ্র ও ১৪টি মেডিকেল টিম প্রস্তুত রাখা হয়েছে। আশ্রয়কেন্দ্রগুলোতে এ পর্যন্ত ১২৭টি পরিবার আশ্রয় গ্রহণ করেছে।
বড়লেখা উপজেলার ১০টি ইউনিয়নের ২৫২টি গ্রামের ৯৩ হাজার ৫০০ মানুষ বন্যাকবলিত হয়ে পড়েছেন। প্রশাসনের পক্ষ থেকে এখানে ২২টি আশ্রয়কেন্দ্র ও ১০টি মেডিকেল টিম প্রস্তুত রাখা হয়েছে। আশ্রয়কেন্দ্রগুলোতে এ পর্যন্ত ১৪৯টি পরিবার আশ্রয় গ্রহণ করেছে।
জুড়ী উপজেলার ৬টি ইউনিয়নের ৬৫টি গ্রামের ৪৫ হাজার ৮৫০ মানুষ বন্যাকবলিত হয়ে পড়েছেন। প্রশাসনের পক্ষ থেকে এখানে ১৪টি আশ্রয়কেন্দ্র ও ৭টি মেডিকেল টিম প্রস্তুত রাখা হয়েছে। আশ্রয়কেন্দ্রগুলোতে এ পর্যন্ত ১৬০টি পরিবার আশ্রয় গ্রহণ করেছে।
রাজনগর উপজেলার ৬টি ইউনিয়নের ৩০টি গ্রামের ৮ হাজার মানুষ বন্যাকবলিত হয়ে পড়েছেন। প্রশাসনের পক্ষ থেকে এখানে ২৭টি আশ্রয়কেন্দ্র ও ৬টি মেডিকেল টিম প্রস্তুত রাখা হয়েছে। আশ্রয়কেন্দ্রগুলোতে এ পর্যন্ত ১৩৫টি পরিবার আশ্রয় গ্রহণ করেছে।
সবমিলিয়ে জেলার ৬৭টি ইউনিয়নের মধ্যে ৩৭টি ইউনিয়নের ৪৩২টি গ্রামের ১ লাখ ৯৩ হাজার ৯৯০ মানুষ বন্যাকবলিত হয়ে পড়েছেন। বন্যাকবলিত এলাকাসমূহে মোট ৯৮টি আশ্রয়কেন্দ্র ও ৫৬টি মেডিকেল টিম প্রস্তুত রাখা হয়েছে। আশ্রয়কেন্দ্রগুলোতে এ পর্যন্ত ৫৭১টি পরিবার আশ্রয় গ্রহণ করেছে।
পানি বৃদ্ধি অব্যাহত থাকায় পানিবন্দি মানুষকে উদ্ধারের জন্য প্রয়োজনীয় তৎপড়তা চালানো হচ্ছে। বন্যার সার্বিক পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণের জন্য জেলা প্রশাসকের কার্যালয় এবং উপজেলা নির্বাহী অফিসারের কার্যালয়সমূহে কন্ট্রোলরুম স্থাপন ও প্রতিটি ইউনিয়নে ট্যাগ অফিসার নিয়োগ করা হয়েছে। সরকারী ও বেসরকারীভাবে ত্রাণ বিতরণ কার্যক্রম গ্রহণ করা হয়েছে। বন্যার্ত মানুষকে সার্বিক সহযোগীতা ও উদ্ধার কার্যক্রম চালানোর জন্য স্বেচ্ছাসেবক টিম (স্কাউট, রোভার স্কাউট, রেডক্রিসেন্ট, যুব রেডক্রিসেন্ট, ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স) প্রস্তুত রাখা হয়েছে। সর্বোপরী পুরো জেলায় বন্যা পরিস্থিতির উপর প্রশাসনের পক্ষ থেকে সতর্ক দৃষ্টি রাখা হচ্ছে।