বাংলাদেশে চলতি ২০২০ সালে চা উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা ৭৭ মিলিয়ন কেজি

বাংলাদেশে চলতি ২০২০ সালে চা উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা ৭৭ মিলিয়ন কেজি

সাপ্তাহিক সুরমার ঢেউ :: করোনা পরিস্থিতির কারণে গত বছরের তুলনায় এবার চা উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা ৩ মিলিয়ন কেজি কমেছে। চলতি ২০২০ সালে চা উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ৭৭ মিলিয়ন কেজি। তারপরও, আবহাওয়াজনিত কারণে এ লক্ষ্যমাত্রা পূরণ করা কঠিন হবে বলে সংশ্লিষ্ট বিশেষজ্ঞদের ধারণা। বাংলাদেশ চা বোর্ড (বিটিবি) সূত্র জানায়, ২০১৯ সালে ৯৬ দশমিক ৭ মিলিয়ন কেজি চা উৎপাদন হয়েছে- যা বাংলাদেশের চা শিল্পের ইতিহাসে সর্বোচ্চ রেকর্ড। সে বছর চায়ের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছিল ৭৬ মিলিয়ন কেজি অর্থাৎ ৭ কোটি ৬০ লক্ষ কেজি।
বিটিবি সূত্র আরও জানায়, ২০১৮ সালের ৩১ ডিসেম্বর সমাপ্ত চা উৎপাদন মৌসুমে দেশে চা উৎপাদন হয়েছে ৮২ দশমিক ১৩ মিলিয়ন কেজি। ২০১৮ সালের চা উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা ছিল ৭২ দশমিক ৩ মিলিয়ন কেজি।
বাংলাদেশ চা বোর্ডের উপ-পরিচালক (পরিকল্পনা) মো. মুনির আহমদ বলেন, চলতি বছর অর্থাৎ ২০২০ সালে আমাদের চায়ের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে ৭৭ মিলিয়ন কেজি। অনেকে হয়তো প্রশ্ন করবেন গত বছর ৯৬ মিলিয়ন কেজি হয়েছিল, তাহলে এবার ৭৭ মিলিয়ন টার্গেট কেন ? আমাদের এ লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয় চায়ের বিগত ১০ বছরের সমস্ত তথ্য বিশ্লেষণ করে। আমরা পরিকল্পনা ভালোভাবে অনুসরণ করার কারণে অতিরিক্ত উৎপাদন করেছি। ৭৭ মিলিয়ন কেজি চা উৎপাদন আমাদের টার্গেট; কিন্তু ৯০ মিলিয়ন কেজির উপরে আমাদের চা উৎপাদন করতে হবে।
বাংলাদেশীয় চা সংসদের সিলেট ব্র্যাঞ্চ চেয়ারম্যান এবং ফিনলে টি কোম্পানির জেনারেল ম্যানেজার (জিএম) গোলাম মোহাম্মদ শিবলি বলেন, লক্ষ্যমাত্রা ৭৭ মিলিয়ন কেজি নির্ধারিত হলেও তাপমাত্রাজনিত কারণে আমাদের প্রত্যাশিত চা উৎপাদন সম্ভব হচ্ছেনা। লক্ষ্যমাত্রার অর্ধেকের চেয়েও কম আছি আমরা। গত জুন মাসে আমরা চায়ের জন্য উপযোগী সূর্যতাপ পাইনি। ৩০ দিনের মাঝে ২৫ দিনই বৃষ্টি এবং মেঘাচ্ছন্ন আকাশ ছিল।
এর আগের মাসগুলোতে আমরা খরার সম্মুখীন হয়েছি। এখন তো চলছে মেঘাচ্ছন্ন আবহাওয়া। চায়ের জন্য দিনের বৃষ্টিপাতের চেয়ে রাতের বৃষ্টিপাত অধিকতর উপকারী। দিনে মেঘাচ্ছন্ন আবহাওয়া থাকলে চা-গুলো সালোক সংশ্লেষণের মাধ্যমে তাদের খাদ্য প্রস্তুত করতে পারেনা। যার ফলে চা গাছ দ্রুত কুঁড়ি ছাড়া ব্যাহত হয় বলে জানান চা বিশেষজ্ঞ গোলাম মোহাম্মদ শিবলি।
লক্ষ্যমাত্রার কথা উল্লেখ করে এ ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা মো. মুনির আহমদ বলেন, আমাদের অফিসিয়াল টার্গেট, ৭৭ মিলিয়ন কেজির নিচে আমরা কোনো অবস্থাতেই আসতে পারবনা। খরা হোক, বন্যা হোক, প্রাকৃতিক দুর্যোগ, যাই হোক না কেন আমাদের এ টার্গেটের নিচে নামা যাবেনা। এটা আমাদের মার্জিন লাইন। যদি নামা হয় তাহলে আমাদের দেশের পুরো চা শিল্প পুরোপুরি হুমকির মুখে পড়বে। লক্ষ্যমাত্রাটা নির্ধারণ করা হয় এ জন্য যে, নিচে গেলেই ইন্ডাস্ট্রির ক্ষতি হবে। লক্ষ্যমাত্রার ভিত্তি হচ্ছে এই পর্যন্ত আমাকে থাকতেই হবে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *