সুরমার ঢেউ সংবাদ :: বীর মুক্তিযোদ্ধা, পাক পাঞ্জাতন আহলে বায়েত’র প্রবক্তা, মুফতীয়ে আজম, মুর্শীদে বরহক, মোফাক্কেরে ইসলাম, ইমামে আহলে সুন্নাত, মুজাদ্দেদে জামান, গাজী সাইয়্যেদুনা মোহাম্মদ আবু তাহের সাহেব কিবলা রহমানপুরী (রহঃ) আউলিয়ার ১১তম পবিত্র ওরশ মোবারক আগামী ৯ সেপ্টেম্বর শনিবার। হবিগঞ্জ জেলার বাহুবল উপজেলার আশাতলা গ্রামে তাঁর পবিত্র মাজার শরীফে মহাসমারোহে এ ওরশ মোবারক অনুষ্ঠিত হবে।
গাজী সাইয়্যেদুনা মোহাম্মদ আবু তাহের সাহেব কিবলা রহমানপুরী (রহঃ) আউলিয়া (মাঃ জিঃ আঃ) ১ ফেব্রুয়ারী ১৯২২ খ্রিষ্টাব্দ বৃহস্পতিবার দিবাগত রাত্রি ফজরের নামাজের পূর্বে কুমিল্লা জেলার অন্তর্গত ৯নং দঃ শিলমুড়ী ইউনিয়নের রহমানপুর দরবার শরীফে মহান হাবেলী নিজ পিত্রালয়ে জন্মগ্রহণ করেন। মহাসাধক জিন্দাপীর শাহ্সুফী গাজী লাল মিয়া শাহ্ দরবেশ (রাঃ) তার পিতা।
শিক্ষাজীবনে তিনি মিশর জামেউল আজহার বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ১৯৫১ খ্রিষ্টাব্দে ফেকাহ শাস্ত্রে সাবহে সাইয়ারাহ হিসেবে আখ্যায়িত হন এবং “মুফতীয়ে আজম” হিসেবে সনদ ও স্বর্ণপদক লাভ করেন। সাংগঠনিক ও ইসলামিক কর্মকান্ডের উদ্দেশ্যে তিনি বিভিন্ন সময়ে মক্কা মোয়াজ্জমা, মদিনা মনোয়ারা, আরব আমিরাত, ইরাক, ইরান, মিশর, যুক্তরাজ্য, যুক্তরাষ্ট্র, কুয়েত, আজমীর শরীফ, ভারত উপমহাদেশ, পাকিস্তানসহ মুসলিম উম্মাহর উল্লেখযোগ্য স্থাপনা, মাজার শরীফ, মাদ্রাসা পরিদর্শন ও সফর করেন। ষাটের দশকের অধিকাংশ সময় তিনি বিভিন্ন মাদ্রাসা ও শিক্ষা প্রতিষ্ঠান সমূহে আরবী, ফার্সী, উর্দু বিষয়ে অধ্যাপনা করে কাটিয়েছেন। তিনি ভারতের মাদ্রাসায়ে নিজামিয়া হায়দ্রাবাদ (দক্ষিণ) এ মোহাদ্দিছে আজমের দায়িত্ব পালন করেন।
১৯৮৯ সালে তিনি যুক্তরাজ্যের বার্মিংহামে ইমাম আহমদ রেজা আন্তর্জাতিক ইসলামী কনফারেন্সে বাংলাদেশ থেকে চীফ গেষ্ট হিসেবে আমন্ত্রিত হন। প্রথম বছরেই তিনি যুক্তরাজ্যবাসীর কাছে আন্তর্জাতিক ফেকাহ সম্রাট ও ইসলামী চিন্তাবিদ হিসেবে প্রশংসিত হয়েছেন। পরবর্তীতে যুক্তরাজ্য ওলামা সংসদ আয়োজিত বিভিন্ন ইসলামী কনফারেন্সে সম্মানিত অতিথি হিসেবে যথারীতি আমন্ত্রিত হয়ে এসেছেন। এছাড়াও কর্মজীবনে তিনি অনেক ইসলামিক গ্রন্থ রচনা করেন।
এ মহান ইসলামী চিন্তাবিদ, দার্শনিক, ইসলামী গবেষক জনাবে মুফতীয়ে আজম আবু তাহের রহমানপুরী সাহেব ক্বিবলা ৯ সেপ্টেম্বর ২০১২ সালে তার শ্রীমংগলের কলেজ রোডস্থ নিজ বাসভবনে ইন্তেকাল করেন। হবিগঞ্জ জেলার বাহুবল উপজেলার স্নানঘাট ইউনিয়নস্থিত আশাতলা গ্রামে চিরনিদ্রায় শায়িত হন।