মৌলভীবাজারে হোটেলশ্রমিক তানিম হত্যার সুষ্ঠু তদন্তসহ ৩ দাবিতে হোটেল শ্রমিক ইউনিয়নের স্মারকলিপি

মৌলভীবাজারে হোটেলশ্রমিক তানিম হত্যার সুষ্ঠু তদন্তসহ ৩ দাবিতে হোটেল শ্রমিক ইউনিয়নের স্মারকলিপি

রুহুল আলম রনি :: মৌলভীবাজারে খান্দানী হোটেলের কিশোর হোটেল শ্রমিক তানিম হত্যার সুষ্ঠু তদন্ত, দোষীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি ও কর্মক্ষেত্রে সকল শ্রমিকের নিরাপত্তা নিশ্চিত করার দাবিতে ১১ জুলাই মঙ্গলবার মৌলভীবাজারের জেলা প্রশাসক বরাবর স্মারকলিপি প্রদান করেছে হোটেল শ্রমিক ইউনিয়ন (রেজিঃ নং- ২৩০৫)। হোটেল শ্রমিক ইউনিয়ন (রেজিঃ নং- ২৩০৫) এর সভাপতি তারেশ চন্দ্র দাশ ও সাধারণ সম্পাদক শাহিন মিয়া স্বাক্ষরিত এ স্মারকলিপিতে বলা হয়েছে- গত ২৫ জুন মৌলভীবাজার শহরের কুসুমবাগ এলাকার খানদানী রেস্টুরেন্টের কিশোর শ্রমিক তানিম কতিপয় দুস্কৃতিকারীর হাতে নির্মম নির্যাতনের শিকার হয়ে অকালে মৃত্যুবরণ করে। মাত্র ১৪/১৫ বছরের এমন ফুটফুটে কিশোরের মৃত্যুতে সমস্ত হোটেল রেস্টুরেন্ট শ্রমিকরা বিক্ষুব্ধ হয়ে গত ২৬ জুন শহরে শান্তিপূর্ণ বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ করে হত্যাকান্ডের সুষ্ঠু তদন্ত, দায়ীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি ও কর্মক্ষেত্রে শ্রমিকের সার্বিক নিরাপত্তা এবং তানিমের পরিবারকে উপযুক্ত ক্ষতিপুরণ প্রদানের দাবি জানায়। কিন্তু পরিতাপের বিষয়, ঘটনার ১৫ দিন অতিক্রান্ত হলেও অদ্যাবধি হত্যাকারী সকল অপরাধীকে গ্রেফতার করা হয়নি। ঘটনার শুরু থেকে খানদানী রেস্টুরেন্টের ব্যবস্থাপনা কর্তৃপক্ষ ঘটনা ধামাচাপা দিতে চেষ্টাা করে। এমন কি মৃত্যু পথযাত্রী তানিমকে তাঁর পরিবারের সদস্যদের সাথেও যোগাযোগ করতে দেয়া হয়নি। হোটেল কর্তৃপক্ষের এহেন আচরণের কারণ কি হতে পারে ? পরদিন সকালে মৃত্যু পথযাত্রী তানিম হাসপাতালে তাঁর পাশের রোগীর মোবাইলে তার পিতাকে জানালে তার পরিবারের সদস্যরা হাসপাতালে এসে তানিমকে সিলেট ওসমানী হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন। প্রশ্ন থেকে যায় আগের দিন রাত ৯টা থেকে পরদিন সকাল ১১টা পর্যন্ত মৌলভীবাজার হাসতাপালে তানিমকে কি চিকিৎসা দেয়া হয়েছে ? হোটেলের ব্যবস্থাপনা কর্তৃপক্ষও তাঁর উন্নত চিকিৎসার কোন উদ্যোগ নেননি। এ হত্যাকান্ডের ঘটনায় হোটেল কর্তৃপক্ষের কি কোন দায় নেই ? প্রতিষ্ঠানে সুষ্ঠু কর্মপরিবেশ ও শ্রমিকের সার্বিক নিরাপত্তা প্রদানের দায়িত্ব মালিকপক্ষের। হত্যাকান্ডের আলামত হিসেবে খানদানী রেস্টেুরেন্টের ভিতরের ও বাইরের সকল সিসি ক্যামেরার ফুটেছ পুলিশের কাছে তুলে দেয়া হয়নি বলে তানিমের পরিবারের পক্ষ থেকে অভিযোগ করা হয়েছে। তাছাড়া, বাংলাদেশ শ্রম আইনের ৪১ ধারায় দৈনিক ৫ ঘন্টার অধিক এবং সন্ধ্যা ৭টা থেকে সকাল ৭টা পর্যন্ত কিশোর শ্রমিককে দিয়ে কাজ করানো নিধিদ্ধ হলেও, খানদানী রেস্টুরেন্ট কর্তৃপক্ষ কি তার যথাযথ প্রতিপালন করেছিলেন ? কিশোর শ্রমিক নিয়োগ এবং তার কর্মপরিবেশ ও শ্রমিকদের সার্বিক নিরাপত্তা নিশ্চিত করার দায় দায়িত্ব কলকারখানা প্রতিষ্ঠান পরিদর্শন অধিদপ্তরের হলেও তারা কি সেই দায়িত্ব যথাযথভাবে পালন করছেন ? তানিমের মৃত্যু এ প্রশ্নগুলোকে খুবই প্রাসঙ্গিকভাবে সামনে নিয়ে এসেছে। আগামীতে যে আর কোন তানিমকে এভাবে কর্মক্ষেত্রে মৃত্যু বা হত্যার স্বীকার হতে হবেনা তার কি নিশ্চয়তা দেয়া হবে ?
স্মারকলিপিতে তানিম হত্যার সুষ্ঠু তদন্তের স্বার্থে খানদানী রেস্টুরেন্টের কর্তৃপক্ষসহ ইতোমধ্যে হত্যাকান্ডে যাদের নাম এসেছে তাদের সকলকে জিজ্ঞাসাবাদ করে দোষীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি ও তানিমের পরিবারকে উপযুক্ত ক্ষতিপুরণ প্রদান করার পাশাপাশি কর্মক্ষেত্রে সকল শ্রমিকের নিরাপত্তা নিশ্চিত করার জোর দাবি জানানো হয়।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *