সুরমার ঢেউ সংবাদ :: বাংলাদেশে প্রায় ১১৫টি দেশের ২০ হাজার ৯৮৮ বিদেশি কর্মরত আছেন বলে জানিয়েছেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল। এর মধ্যে সবচেয়ে বেশি চীনা নাগরিক। মঙ্গলবার সংসদের বৈঠকে প্রশ্নোত্তর পর্বে নোয়াখালী-৩ আসনের মামুনুর রশীদ কিরনের প্রশ্নের জবাবে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী এসব তথ্য জানান। এর আগে স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরীর সভাপতিত্বে সংসদের বৈঠক শুরু হলে প্রশ্নোত্তর টেবিলে উত্থাপিত হয়।
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী জানান, বাংলাদেশে অবস্থানরত বিদেশিরা উন্নয়ন প্রজেক্ট, শিল্পকারখানা, এনজিও, আইএনজিও এবং বিভিন্ন সংস্থায় কর্মরত রয়েছেন বলে জানান স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল। এর মধ্যে ৬ হাজার ৭৫ জন চীনের, ৫ হাজার ৮৭৬ ভারতীয়, ২ হাজার ৪৬৮ রাশিয়ান, ১ হাজার ২৪৬ শ্রীলঙ্কান, ৯২৪ দক্ষিণ কোরিয়ান, ৫৫৭ জাপানি, ৪১৬ পাকিস্তানি, ৪৬০ ফিলিপিনো, ৩৯৯ থাই, ৩৭৮ বেলারুশ, ২৬৯ কাজাকস্তানি, ১৬৮ আমেরিকান, ১৩৯ কোরিয়ান, ১২৩ মালয়েশিয়ান, ১০৮ ইন্দোনেশিয়ান নাগরিক রয়েছেন।
সরকারদলীয় সংসদ সদস্য এম আবদুল লতিফের প্রশ্নের জবাবে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ঢাকা মহানগরীতে বর্তমানে কোনো স্ট্রিট ফায়ার হাইড্রেন্ট পয়েন্ট নেই। তবে ঢাকা মহানগরীতে বেসরকারি পর্যায়ে বহুতল ভবনে ও কিছু কিছু প্রতিষ্ঠানে নিজস্ব ফায়ার হাইড্রেন্ট পয়েন্ট আছে। রাজধানীতে এক কিলোমিটার পরপর অগ্নিনির্বাপণ সহায়ক স্ট্রিট হাইড্রেন্ট পয়েন্ট স্থাপনের পরিকল্পনা সরকারের রয়েছে। এ বিষয়ে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সরাসরি সংশ্লিষ্টতা নেই বলেও জানান তিনি। অগ্নিদুর্ঘটনার সময় পানির প্রাপ্যতা নিশ্চিতকরণের জন্য ঢাকা ওয়াসা এবং ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স অধিদপ্তরের মধ্যে ২০২১ সালের ২ ফেব্রুয়ারি একটি সমঝোতা চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়েছে।
সরকারদলীয় সংসদ সদস্য মোজাফফর হোসেনের প্রশ্নের জবাবে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, কারাগারকে সংশোধনাগারে রূপান্তরের লক্ষ্যে জাতিসংঘ অনুমোদিত বিভিন্ন আন্তর্জাতিক মানদণ্ডের আলোকে কাজ করছে সরকার।
এর মধ্যে আন্তর্জাতিক মানদণ্ড অনুযায়ী খাদ্য ও পুষ্টি নিশ্চিতকরণ, প্যারোল ও ছুটির বিধান, চাহিদা ও ঝুঁকি নিরসন করে আবাসন, শিক্ষা, প্রশিক্ষণ ও সার্টিফিকেট প্রদান। কাজের বিনিময়ে মজুরি প্রদান। সাজা বাস্তবায়ন পরিকল্পনা অনুযায়ী শিক্ষা, প্রশিক্ষণ ও কাজ বণ্টন। আধুনিক স্বাস্থ্যসেবা ও আইনগত সহায়তা নিশ্চিতকরণের মতো পদক্ষেপ রয়েছে।
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, মাদকাসক্ত বন্দীদের পৃথক্করণ, চিকিৎসা ও প্রশিক্ষণ। শারীরিক ও মানসিক উৎকর্ষসাধনের জন্য শরীর চর্চা, খেলাধুলা ও সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ডের ব্যবস্থা গ্রহণ। শৃঙ্খলা ও নিরাপত্তা কমিটির মাধ্যমে কারাগারের শৃঙ্খলা রক্ষা করা। বন্দীদের পুনর্বাসনের জন্য সরকারি-বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে অংশীদারত্ব প্রতিষ্ঠা ইত্যাদি পদক্ষেপও রয়েছে।
জামালপুর-১ আসনের সরকারদলীয় সংসদ সদস্য আবুল কালাম আজাদের প্রশ্নের জবাবে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, বর্তমানে এক শ্রেণির বিপথগামী শিশু-কিশোরের মধ্যে অপরাধ সংঘটনের উদ্দেশ্যে গ্যাং কালচারে জড়িয়ে পড়ার প্রবণতা দেখা যাচ্ছে। বিভিন্ন বাহারি নামের অনলাইন ও অফলাইনভিত্তিক গ্যাং গঠন করে এসব বিপথগামী শিশু-কিশোরেরা মারামারি ও হানাহানিতে লিপ্ত হচ্ছে। তিনি বলেন, গ্যাং কালচারের ক্ষতিকর প্রভাব থেকে মুক্ত করে এসব শিশু-কিশোরদের সুস্থ ও সুন্দর জীবনে ফিরিয়ে আনার মাধ্যমে একটি অপরাধমুক্ত যুবসমাজ গড়ে তোলার জন্য সারা দেশে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী তৎপর রয়েছে।
দিদারুল আলমের প্রশ্নের জবাবে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, বিজিবির সাংগঠনিক কাঠামোয় ১৫ হাজার জনবল সৃষ্টির নীতিগত অনুমোদনের প্রথম পর্যায়ে ৪ হাজার ২৮২টি পদে জনবল বৃদ্ধি করা হয়েছে। এ ছাড়া আরও ৫ হাজার ৫১৩টি পদ অনুমোদনের বিষয়টি অর্থ মন্ত্রণালয়ে প্রক্রিয়াধীন রয়েছে। আবুল কালাম আজাদের প্রশ্নের জবাবে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আরও বলেন, ইন্ডাস্ট্রিয়াল পুলিশের মঞ্জুরিকৃত পদ ৩ হাজার ৮১৩টি। এর মধ্যে পুলিশ ৩ হাজার ৭১২, নন-পুলিশ ১০১। হাজি মো. সেলিমের প্রশ্নের জবাবে পুলিশ বাহিনীতে নারী ও পুরুষের অনুপাত ১:৮ বলে জানান মন্ত্রী।