ইশরাত জাহান চৌধুরী, ষ্টাফ রিপোর্টার :: মৌলভীবাজার এতিম ও প্রতিবন্ধী মেয়েদের কারিগরি প্রশিক্ষণ কেন্দ্রের এতিম দুই কন্যা শাকিলা ও নয়নতারা’র জাঁকজমক ও আড়ম্বরপূর্ণ বিয়ে সম্পন্ন হয়েছে ২৭ অক্টোবর বৃহস্পতিবার। এতিম শাকিলা (২১) ও নয়নতারা (২৩) খুঁজে পেল নিজেদের নতুন ঠিকানা। ওই দুই যুবতী দুইবছর আগে সিলেট সমাজসেবা কার্যালয় পরিচালিত শিশু পরিবার থেকে মৌলভীবাজারে এসেছে। এখানে শাকিলা ড্রাইভিং ও নয়নতারা ট্রেইলারিং শিখছে। তাঁরা কেউই কখনো ভাবেনি তাদের নতুন ঠিকানা হবে। কিন্তু, তাই হয়েছে এবং এর দায়িত্ব নিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশে মৌলভীবাজার জেলা প্রশাসন ও জেলা সমাজসেবা কার্যালয়ের প্রচেষ্টায় সমাজসেবা অধিদপ্তর পরিচালিত এতিম ও প্রতিবন্ধী মেয়েদের কারিগরি প্রশিক্ষণ কেন্দ্রের ওই দুই কন্যা ‘শাকিলা ও নয়নতারার’ জাঁকজমক ও আড়ম্বরপূর্ণভাবে বিয়ে সম্পন্ন হয়েছে। অভিভাবকহীন এ দুই কন্যার বিয়ের অভিভাবক জেলা প্রশাসক মীর নাহিদ আহসান নিজেই।
তাদের মধ্যে শাকিলার বিয়ে হয় আল আমিনের সাথে এবং নয়নতারার বিয়ে হয় মোঃ সাব্বিরের সাথে। বর আল আমিন টিউবওয়েল মিস্ত্রি এবং সাব্বির সিএনজি আটোরিকশা চালক। দুই নবদম্পতিকে প্রধানমন্ত্রীর পক্ষ থেকে ১ লাখ করে মোট ২ লাখ টাকা উপহার দেয়া হয়েছে। তাদের জাঁকজমকপূর্ণ বিয়ের আয়োজন করে মৌলভীবাজার জেলা প্রশাসন ও জেলা সমাজসেবা অধিদপ্তর। বিয়েতে প্রায় ৩শ মানুষের খাবারের আয়োজন করা হয়। বিয়ের অনুষ্ঠানে সংরক্ষিত নারী আসনের সংসদ সদস্য সৈয়দা জোহরা আলাউদ্দিন ও জেলা প্রশাসক মীর নাহিদ আহসানসহ সরকারি বিভিন্ন অফিসের কর্মকর্তা ও সাংবাদিকরা উপস্থিত ছিলেন। আগের রাত ২৬ অক্টোবর বুধবার তাদের জমকালো গায়ে হলুদ অনুষ্ঠানে মৌলভীবাজার- ৩ আসনের সংসদ সদস্য নেছার আহমদ, জেলা প্রশাসক মীর নাহিদ আহসান, সদর উপজেলার নির্বাহী অফিসার সাবরিনা রহমানসহ সরকারি বিভিন্ন অফিসের কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
জেলা সমাজসেবা অধিদপ্তরের সহকারী ম্যানেজার একেএম মিজানুর রহমান জানান- ‘এরা আমার মেয়ের মত। তাদের বিয়েতে যাতে কোনো ধরনের কমতি না হয়, এজন্য সব আয়োজন করা হয়। দুই মেয়ের বিয়ের অনুষ্ঠানে ৩ শতাধিক অতিথির জন্য খাবারের আয়োজন করা হয়। জেলার বিভিন্ন শ্রেণী পেশার মানুষ এ বিয়ের অনুষ্ঠানে উপস্থিত থেকে আমার দুই কন্যার জন্য দোয়া করেছেন।
জেলা প্রশাসক মীর নাহিদ আহসান বলেন- একজন পিতা তাঁর কন্যাদের যেভাবে বিয়ে দেন, তেমনি এ কন্যাদের পিতা হিসেবে একজন কন্যাদায়গ্রস্ত পিতার মতো আমরা তাদের বিয়ে দিয়েছি। সকল নিয়ম, সকল আনুষ্ঠানিকতায় এ বিয়ে অনুষ্ঠিত হয়েছে। কোন জিনিসের কমতি ছিলনা। এছাড়া প্রধানমন্ত্রীর পক্ষ থেকে দুই নবদম্পতিকে ১ লাখ করে মোট ২ লাখ টাকা উপহার দেয়া হয়েছে। সবসময় তাদের খোঁজখবর নেয়া হবে।