সুরমার ঢেউ সংবাদ :: নিত্যপণ্যের মূল্যবৃদ্ধির কারণে বেতন-ভাতা বৃদ্ধির দাবিতে ধর্মঘট শুরু হয়েছে ফ্রান্সজুড়ে। ব্যাপক মুদ্রাস্ফীতির প্রভাবে খাদ্যবস্তুসহ দৈনন্দিন কাজে ব্যবহার্য জিনিসপত্রের দাম অসহনীয় পর্যায়ে পৌঁছে যাওয়ায় বেতন-ভাতা বৃদ্ধির দাবিতে এ ধর্মঘট শুরু হয়েছে। ১৮ অক্টোবর মঙ্গলবার ছিল এ ধর্মঘটের প্রথম দিন। বার্তাসংস্থা রয়টার্সের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ফ্রান্সের কট্টর বামপন্থী দল লা ফ্রান্স ইনসৌমাইসের (ফ্রান্স অপরাজিত) শীর্ষ নেতা জ্যঁ-লুক মেলেনশনের নেতৃত্বে ফ্রান্সের শিক্ষা ও যানবাহন খাতের সব শ্রমিক সংগঠন (ট্রেড ইউনিয়ন) এই ধর্মঘটের ডাক দিয়েছে। সরকারী কর্মকর্তা-কর্মচারীদের বিভিন্ন ট্রেড ইউনিয়নও সমর্থন জানিয়েছে এই ধর্মঘটে।
এর আগে গত সেপ্টেম্বরের শেষ দিকে বেতন-ভাতা বাড়ানোর দাবিতে কর্মবিরতির ডাক দিয়েছিল ফ্রান্সের জ্বালানি তেল পরিশোধন খাতের শ্রমিক সংগঠনসমূহ। প্রায় চার সপ্তাহের কর্মবিরতির কারণে দেশের জ্বালানি তেলের স্টেশনগুলোতে সরবরাহ অনিয়মিত হয়ে পড়ায় ব্যাপক ভোগান্তিতে পড়েছিলেন ফ্রান্সের সাধারণ জনগণ। এ পরিস্থিতিতে গত শুক্রবার তেল পরিশোধন খাতের শ্রমিক নেতাদের সঙ্গে আলোচনা করে তাদের বেতন-ভাতা ৭ শতাংশ বৃদ্ধি করতে সম্মত হয় সরকার, শ্রমিকরাও কর্মবিরতি ছেড়ে কাজে ফিরতে শুরু করেন।
কিন্তু তেল পরিশোধন শ্রমিকরা কাজে ফেরার চার দিনের মাথায় একই দাবিতে মঙ্গলবার থেকে ধর্মঘটে নেমেছেন শিক্ষা ও পরিবহন খাতের শ্রমিকরা। ফ্রান্সের বিভিন্ন টেলিভিশনে সম্প্রচারিত ফুটেজে দেখা গেছে, রাজধানী প্যারিসসহ দেশটির ছোট বড় বিভিন্ন শহরে ধর্মঘটের সমর্থনে সড়কে নেমেছেন বহু মানুষ। ধর্মঘটের কারণে মঙ্গলবার থেকেই বন্ধ রয়েছে ফ্রান্সের সব স্কুল। দেশটির প্রধান গণপরিবহন রেল ও মেট্রোরেলের চলাচল ৫০ শতাংশ কমে গেছে। এমনকি ধর্মঘটের কারণে প্যারিস ও লন্ডন রুটে চলাচলকারী কয়েকটি ট্রেনের যাত্রা বাতিল করতে বাধ্য হয়েছে দেশটির রেল কর্তৃপক্ষ। আগামী বছরের শুরুতে ফ্রান্সে ঘোষণা করা হবে ২০২৩ সালের বাজেট। সে বাজেট তৈরির কাজ অনেকটা এগিয়েও গেছে। এ পরিস্থিতে দেশজুড়ে ধর্মঘট সে বাজেট প্রস্তুতের কাজে বাধার সৃষ্টি করছে বলে মঙ্গলবার এক সংবাদ সম্মেলনে জানিয়েছেন ফ্রান্সের প্রধানমন্ত্রী এলিজাবেথ বোর্নে।