সুরমার ঢেউ সংবাদ :: মৌলভীবাজার জেলার কুলাউড়া উপজেলায় প্রতিপক্ষকে ফাঁসানোর জন্য নিজের বুদ্ধি প্রতিবন্ধী মেয়েকে নিজ হাতে হত্যা করেছেন এক পিতা। হত্যাকান্ডের তদন্ত করতে গিয়ে এ নির্মম ঘটনা বেরিয়ে এসেছে। পূর্ব বিরোধের জেরে প্রতিপক্ষকে ফাঁসাতে নিজের মেয়ে পপি সরকার (১২)-কে বাবা দিগেন্দ্র সরকার হত্যা করেন বলে জানিয়েছে পুলিশ।
২ অক্টোবর রবিবার দুপুরে কুলাউড়া থানায় সংবাদ সম্মেলন করে এ তথ্য জানান ওসি আবদুছ ছালেক।
সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়- প্রতিপক্ষকে ফাঁসাতে বুদ্ধিপ্রতিবন্ধী কিশোরী মেয়েকে হত্যা করেন বাবা দিগেন্দ্র সরকার। ঘটনাস্থলে পাওয়া বিস্কুটের প্যাকেটের সূত্র ধরে এ হত্যা রহস্য উদ্ঘাটন করে পুলিশ।
কুলাউড়া উপজেলার পৃথিমপাশা ইউনিয়নের সুলতানপুর এলাকায় একটি বাড়িতে পরিবারের সদস্যদের নিয়ে ভাড়া থাকেন দিগেন্দ্র সরকার ও আশালতা সরকার দম্পতি। তাদের মেয়ে পপি শৈশব থেকে বুদ্ধিপ্রতিবন্ধী। সে লেখাপড়া করত না। পপি ছাড়াও তাদের আরেক কন্যাসন্তান রয়েছে। তাদের মূল বাড়ি হবিগঞ্জের নবীগঞ্জ উপজেলার গুমগুমিয়া গ্রামে। দিগেন্দ্র সরকার পেশায় একজন মৎস্যজীবী।
সংবাদ সম্মেলনে ওসি আবদুছ ছালেক বলেন- গত ২৭ সেপ্টেম্বর সকালে সুলতানপুরে বাড়ির পাশে এক ব্যক্তির বাগানে ওড়না দিয়ে গলায় ফাঁস লাগানো অবস্থায় পপি সরকারের লাশ পাওয়া যায়। এ ঘটনায় দিগেন্দ্র সরকার বাদী হয়ে সুরমান মিয়া ও কাজল মিয়া নামের প্রতিবেশী দুই ব্যক্তিকে আসামি করে থানায় হত্যা মামলা করেন। এজাহারে বলা হয়, ওই দুই ব্যক্তি তার মেয়েকে প্রায়ই উত্ত্যক্ত করতেন। এ ব্যাপারে স্থানীয় লোকজনের কাছে বিচার চাওয়ায় তাঁরা ক্ষিপ্ত হয়ে বিস্কুটের লোভ দেখিয়ে পপি সরকারকে ডেকে নিয়ে হত্যা করে।
ওসি আবদুছ ছালেক আরও বলেন- সুরমান ও কাজলের সঙ্গে দিগেন্দ্রর আগে থেকে বিরোধ ছিল। তাদের কারণে তিনি আর্থিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হন। এ কারণে তাদের ফাঁসানোর পরিকল্পনা করেন। তদন্তকালে পপির শয়নকক্ষের জানালায় একটি বিস্কুটের প্যাকেট পাওয়া যায়। তদন্ত করতে গিয়ে বেরিয়ে আসে, দিগেন্দ্র ২৬ সেপ্টেম্বর স্থানীয় একটি দোকান থেকে ১০ টাকা দিয়ে বিস্কুটের প্যাকেটটি কেনেন। ওইদিন গভীর রাতে তিনি মেয়েকে শ্বাসরোধে হত্যা করে বাগানে ফেলে রাখেন। এরপর প্রতিপক্ষকে ফাঁসাতে প্যাকেটটি জানালায় ঝুলিয়ে রাখেন।
এ ব্যাপারে শনিবার দিগেন্দ্র সরকার আদালতে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দিও দিয়েছেন। তাকে আদালতের নির্দেশে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।