সুরমার ঢেউ সংবাদ :: পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি) জানিয়েছে প্রবাসীরা অবৈধ চ্যানেলে টাকা পাঠালে দেশে তাদের স্বজনরা আইনের আওতায় আসতে পারেন। ৮ সেপ্টেম্বর বৃহস্পতিবার দুপুরে সিআইডির প্রধান মোহাম্মদ আলী এক সংবাদ সম্মেলনে এ মন্তব্য করেন। তিনি বলেন, বিশ্বের বিভিন্ন দেশে অবস্থানরত প্রবাসীরা সহজ-সরল। তারা কষ্ট করে রেমিট্যান্স আয় করেন। কিন্তু, প্রবাসীদের এ রেমিট্যান্স দেশে আসছেনা। পাচার হয়ে যাচ্ছে। আমরা ঢাকা ও চট্টগ্রাম থেকে ১৬ জন অবৈধ মোবাইল ব্যাংকিং এজেন্টকে গ্রেপ্তার করেছি। তারা অবৈধভাবে টাকা পাচার চক্রের সঙ্গে জড়িত।
তিনি বলেন, আমরা জানি সহজ-সরল প্রবাসীরা হয়তো জানেনও না যে এটা অপরাধ। কিন্তু, আইন সবার জন্য সমান। আমরা মামলা তদন্ত করতে গিয়ে যদি দেখি কেউ অবৈধভাবে টাকা পাঠিয়েছে ও গ্রহণ করেছে তাহলে তাদের বিরুদ্ধেও ব্যবস্থা নিতে হবে। তবে আমরা তা চাইনা। আমাদের প্রবাসীরা তাদের কষ্টার্জিত অর্থ ব্যাংকের মাধ্যমে পাঠালে ব্যাংক থেকে ২ শতাংশ হারে প্রণোদনা দেয়। তিনি বলেন, দেশব্যাপী আমাদের মনিটরিং অব্যাহত থাকবে। যতোদিন আমাদের প্রবাসীরা যথাযথ চ্যানেলে টাকা না পাঠাবে ততোদিন আমাদের এই অভিযান অব্যাহত থাকবে। যারা প্রবাসে আছেন তারা নিশ্চয়ই এই বার্তা পাবেন। তারা ব্যাংকিংয়ের মাধ্যমে বৈধ চ্যানেলে টাকা পাঠাবেন। তিনি বলেন, আমরা টার্গেট করে তিনটি গ্রুপকে গ্রেপ্তার করেছি। অন্যরা ইতোমধ্যে এই অবৈধ পথ ছেড়ে আসতে শুরু করেছে। আশা করি দু’একদিনের মধ্যে ৫০/৬০ শতাংশ ব্যক্তি সরে আসবে। আমরা পর্যবেক্ষণ করছি।
যেভাবে টাকা পাচার হচ্ছে ঃ প্রবাসীদের উপার্জিত রেমিট্যান্স দেশে না এসে উল্টো দেশ থেকে টাকা পাচার হয়ে যাচ্ছে। সিআইডি প্রধান বলেছেন, মোবাইল ব্যাংকিংয়ের অবৈধ এজেন্টরা ৩টি ভাগে ভাগ হয়ে অবৈধ হুন্ডি করে থাকে। বিদেশে তাদের একটি চক্র প্রবাসীদের কাছ থেকে ডলার সংগ্রহ করে। সেই চক্রের বাংলাদেশি এজেন্টরা টাকা পাচারকারীদের কাছ থেকে সমপরিমাণ অর্থ সংগ্রহ করে প্রবাসীদের স্বজনদের পরিশোধ করে। পরে পাচারকারীরা বিদেশের এজেন্টের কাছ থেকে টাকা নিয়ে নেয়। এভাবে কোটি কোটি টাকা দেশ থেকে পাচার করছে কালোটাকার মালিকরা। অপরদিকে বাংলাদেশ রেমিট্যান্স হারাচ্ছে- যা আইনের চোখে অপরাধ।
সিআইডি প্রধান জানান, মোবাইল ব্যাংকিং সেবাদানকারী প্রতিষ্ঠানগুলোর (এমএফএস) প্রায় ৫ হাজার অবৈধ এজেন্ট রয়েছে সারাদেশে। এদের কারণে গত একবছরে প্রায় ৭৫ হাজার কোটি সমপরিমাণ টাকা পাচার হয়েছে। এজেন্টরা হুন্ডির মাধ্যমে এ টাকা পাচার করেছে। এ কারণে গত ৪ মাসে বাংলাদেশ প্রায় ২৫ হাজার কোটি টাকার সমপরিমাণ রেমিট্যান্স থেকে বঞ্চিত হয়েছে- যা ইউএস ডলারে ৭ দশমিক ৮ বিলিয়ন ডলারের (৭৮০ কোটি) মতো।