সুরমার ঢেউ সংবাদ :: মৌলভীবাজারে সার্বিক বন্যা পরিস্থিতির অবনতি হয়েছে কুশিয়ারা ও হাকালুকি হাওরের পানি বৃদ্ধি পেয়ে । প্লাবিত হচ্ছে নতুন নতুন এলাকা। জেলায় বন্যা কবলিত মানুষের সংখ্যা প্রায় ২ লাখ ৫০ হাজার। এদিকে, মৌলভীবাজারের বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা গেছে মানুষের বাড়িঘর এবং বিভিন্ন সড়ক পানিতে নিমজ্জিত হয়ে পড়েছে। ২২ জুন বুধবার রাতে সদর উপজেলার শেরপুর এলাকার হামরকোনায় কুশিয়ারা নদীর বাঁধ ভেঙ্গে যায়। এতে নতুন নতুন এলাকা প্লাবিত হচ্ছে। এদিকে হাকালুকি হাওরের পানি বৃদ্ধি পেয়ে বড়লেখা, জুড়ী ও কুলাউড়া উপজেলার গ্রাম জনপদে পানি উঠে পড়েছে। কুলাউড়া-জুড়ী-বড়লেখা সড়ক পানিতে নিমজ্জিত হয়ে পড়েছে। রাজনগর উপজেলার উত্তরভাগ ও ফতেহপুর ইউনিয়নের বিভিন্ন গ্রাম প্লাবিত হয়ে পড়েছে।
২৩ জুন বৃহস্পতিবার দুপুরে এক সাংবাদিক সম্মেলনে জেলা প্রশাসক মীর নাহিদ আহসান জানান, নদনদী ও হাওরের পানি বৃদ্ধি পেয়ে গত ১৮ জুন শনিবার থেকে মৌলভীবাজারের বন্যা পরিস্থিতিা অবনতি হতে থাকে। জেলার মোট ৬৭ ইউনিয়নের ২৮৯৯ বর্গকিলোমিটার এলাকার মধ্যে ৪১টি ইউনিয়নের ৮০৯ বর্গকিলোমিটার এলাকা প্লাবিত হয়ে পড়েছে। পানিবন্দি পরিবার ৫২ হাজার ১১১টি। ক্ষতিগ্রস্ত লোকসংখ্যা প্রায় ২ লাখ ৫০ হাজার। ক্ষতিগ্রস্ত ঘরবাড়ি সংখ্যা ১৩ হাজার ২৫৯। ক্ষতিগ্রস্ত ফসল ৪৭০০ হেক্টর।
জেলা প্রশাসক জানান, বন্যার্ত মানুষের জন্য ১০১ টি আশ্রয়কেন্দ্র খোলা হয়েছে। এতে আশ্রিত লোকের সংখ্যা ২৫ হাজার জন। আশ্রিত গবাদি পশুর সংখ্যা ১৭৫৬। ৬০টি মেডিকেল টিম চালু করা হয়েছে।
জেলার বন্যার্ত মানুষের মধ্যে ৪৪০ মেট্রিক টন চাল, ১৭০০ প্যাকেট শুকনো খাবার এবং ১৮ লাখ ২০ হাজার টাকা বরাদ্ধ দেয়া হয়েছে। এরমধ্যে ২১৮ মেট্রিকটন চাল, ১২ লাখ ৮০ হাজার টাকা, ৮ হাজার ৬৩২ প্যাকেট শুকনো খাবার বিতরণ করা হয়েছে। জেলার বন্যা দুর্গত এলাকায় বিশুদ্ধ খাবার পানির সংকট দেখা দিয়েছে। টিউবওয়েলগুলো পানিতে নিমজ্জিত হয়ে পড়েছে।
এ ব্যাপারে জেলা প্রশাসক জানান, বড়লেখা, জুড়ী ও কুলাউড়া উপজেলার কিছু ইউনিয়ন ও পৌরসভা এলাকায় বিশুদ্ধ পানির সংকট দেখা দিয়েছে। এ অবস্থায় ১ লাখ ৪৫ হাজার পিস বিশুদ্ধ পানির ট্যাবলেট বরাদ্ধ দেওয়া হয়েছে। এদিকে স্থানীয় জনপ্রতিনিধি এবং বেসরকারি পর্যায়ে সামাজিক উদ্যোগে ত্রাণ বিতরণ করা হয়েছে।