ইশরাত জাহান চৌঃ বিশ্ব পর্যটন দিবস আজ (২৭ সেপ্টেম্বর)। পর্যটনের ভূমিকা সম্পর্কে জনসচেতনতা বৃদ্ধিসহ সামাজিক, সাংস্কৃতিক, রাজনৈতিক এবং অর্থনৈতিক উপযোগিতাকে বিশ্বব্যাপী ছড়িয়ে দেওয়া এ দিবসের লক্ষ্য।
জাতিসংঘের বিশ্ব পর্যটন সংস্থা (ডাব্লিউটিও) ১৯৮০ সাল থেকে প্রতিবছর ২৭ সেপ্টেম্বর বিশ্ব পর্যটন দিবস পালন করছে। টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা অর্জন ও জাতীয় অর্থনীতিতে পর্যটনের অবদান রয়েছে।
প্রতিবছরের মতো এ বছরও বিশ্বের অন্যান্য দেশের সঙ্গে বাংলাদেশে যথাযথ মর্যাদায় দিবসটি পালিত হচ্ছে। বিশ্ব পর্যটন দিবসে এবারের প্রতিপাদ্য ‘অন্তর্ভুক্তিমূলক প্রবৃদ্ধিতে পর্যটন’।
দিবসটি যথাযথ ভাবে পালনের উদ্দেশ্যে পর্যটন কর্পোরেশন বিভিন্ন কর্মসূচি গ্রহণ করেছে৷ তারই অংশ হিসেবে ভ্রমণপিপাসুদের জন্যে দেশের পর্যটন হোটেল-মোটেলগুলোতে একদিনের জন্য ৩০ শতাংশ ছাড় ঘোষণা করেছে পর্যটন কর্পোরেশন।
মহামারির কারণে দীর্ঘদিন পর্যটন স্পট ও এই শিল্পের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট ব্যবসা প্রতিষ্ঠান বন্ধ করে রাখতে হয়েছিল। গতবছর এই সময়ে সংক্রমণের হার বেশি থাকায় পর্যটন দিবসের সব কর্মসূচি ডিজিটাল প্ল্যাটফর্ম ব্যবহার করে আয়োজন করতে হয়েছিল।
বর্তমানে দেশে কোভিড-১৯ এর সংক্রমণ কমার কারণে স্বাস্থ্যবিধি মেনে পর্যটন স্পটগুলো ধীরে ধীরে খুলে দেওয়া হয়েছে। তবে বিগত কয়েকমাসের ক্ষতি পুষিয়ে নিতে সময় লাগবে বলে ধারণা করছেন রিসোর্ট মালিক ও ট্রাভেল এজেন্সিগুলো।
সিলেটের সুনামধন্য প্রতিষ্ঠান লতিফ ট্রাভেলস এন্ড প্রাইভেট লিমিটেডের পরিচালক জহিরুল কবির চৌধুরী সুরমার ঢেউকে বলেন,”গত বছর ও এই বছর কোভিডের কারণে ট্যুরিজম ব্যবসা আগের মত নেই। দীর্ঘদিন আন্তর্জাতিক ও অভ্যন্তরীণ ফ্লাইট বন্ধ থাকায় আমাদের দেশের বাইরের ও ভেতরের ট্যুর প্যাকেজগুলো বন্ধ ছিল। তবে দেশের ভেতর লকডাউন তুলে নেয়ার পর আগস্ট/সেপ্টেম্বর মাসে প্রচুর সাড়া পাই। দেশীয় ট্যুরিস্টারা কয়েকমাস দম আটকে রেখে তখন হুমরি খেয়ে পড়ে”। ট্রাভেলসের কথা জানতে চাইলে তিনি বলেন, ” প্রায় দুই বছর যাবত হজ্জ ও ওমরা বন্ধ থাকায় এর প্যাকেজ এর দাম বেড়ে দ্বিগুণ হয়ে গেছে। আগে যে প্যাকেজগুলো ৮০-৯০হাজার টাকা ছিল তা এখন প্রায় দ্বিগুণ হয়ে ১লাখ ৪৫ হাজার টাকাতে এসে দাঁড়িয়েছে। এতে আশানুরূপ গ্রাহক পাচ্ছিনা আমরা। তাই ট্রাভেলসের ব্যবসা এখন ১০ ভাগের ১ভাগে নেমে এসেছে। সরকার কর্তৃক ৪% হার সুদে ২০লক্ষ টাকার প্রণোদনা পেলেও লতিফ ট্রাভেলস এর দুটি শাখা বন্ধ করে দিয়েছি”। লতিফ ট্রাভেলস এর পরিচালক আরো বলেন, বিগত মহামারীর কারণে এই ক্ষতি পুষিয়ে নিতে কমপক্ষে ৩-৪ বছর সময় লাগবে।
শ্রীমঙ্গল শহরের গ্রীন লিফ রিসোর্টের পরিচালক এস কে দাস সুমন জানান, প্রতি বছর তার রিসোর্টের ঈদের মাস খানেক আগে থেকেই বুকিং দেয়া শুরু হয়। তার রিসোর্টে বেশীরভাগ বিদেশীরা আসেন । বিশেষ করে ঈদের সময়টাকে ঘিরে থাকে ব্যবসার উল্লেখযোগ্য সময়।সে হিসেবে সারা বছরের প্রস্তুতি থাকে কিন্তু এই বছর করোনা সংকটের কারণে সেই সুযোগ নেই।
তিনি বলেন, “উল্টো ঝুঁকিতে পড়েছে আমার ব্যবসা। পরিবারের অন্য খাত থেকে টাকা এনে কর্মচারীদের বেতন দিচ্ছি।”
তিনি আরও বলেন, আমরা পর্যটন ব্যবসায়ীরা বছরে কোটি কোটি টাকা ভ্যাট ট্যাক্স দেই । কিন্তু বিপদের এই সময় আমরা সরকারের কোন সাহায্য পাচ্ছিনা।