ইশরাত জাহান চৌঃ মৌলভীবাজারের কমলগঞ্জের ব্যক্তি মালিকানাধীন শ্রীগোবিন্দপুর চা বাগানের চা শ্রমিক শ্রীজনম ভর এর নির্মাণাধীন পাকা ঘর ভেঙ্গে ফেলার প্রতিবাদে মানববন্ধন ও প্রতিবাদ সভা করেছেন চা শ্রমিকরা।
রোববার (২৬ সেপ্টেম্বর) দুপুর ১২ টায় কমলগঞ্জের ভানুগাছ-দলই সড়কের গোবিনপুর লাইনে এ মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করা হয়। শতাধিক চা শ্রমিকের অংশগ্রহণে প্রায় দুই ঘন্টাব্যাপী চলমান এই মানবন্ধন ও প্রতিবাদ সমাবেশে বক্তব্য রাখেন, স্থানীয় মাধবপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান পুষ্প কুমার কানু, চা বাগানের মনু-ধলই ভ্যালি সভাপতি ধনা বাউরী, সাধারন সম্পাদক নির্মল দাস পাইনকা,শ্রীগোবিন্দপুর চা বাগান পঞ্চায়েত সভাপতি মিলন নায়েক,নারী চা শ্রমিক নেত্রী গীতা রানী কানু, চা শ্রমিক নেতা মোহন রবিদাস, চা প্রদীপ পাল প্রমুখ।
উপস্থিত বক্তারা আলোচনার মাধ্যমে চা শ্রমিকের ঘর ভাঙ্গার সুষ্ঠ সমাধান করে দ্রুত সময়ের মধ্যে চা শ্রমিক শ্রীজনম ভর এর ঘর নির্মাণ করে দেওয়ার জন্য বাগান কর্তৃপক্ষের প্রতি জোরালো দাবী জানান।
স্থানীয়সূত্রে জানা যায়,গতকাল শনিবার দুপুরে চা শ্রমিকরা বাগানে কাজে থাকার সুযোগে এ কান্ড ঘটানো হয়। উপজেলার মাধবপুর ইউনিয়নের শ্রীগোবিন্দপুর চা-বাগানে এ ঘটনার পর থেকে শ্রমিকদের মাঝে উত্তেজনা বিরাজ করছে।
চা শ্রমিক শ্রীজনম ভর (৫৫) বলেন, মহসীন টি কোম্পানির শ্রীগোবিন্দপুর চা বাগানে বসতঘর নির্মাণের দাবি করলেও সহজে তা পাওয়া যায় না। তাই চা বাগান পঞ্চায়েত কমিটির সহযোগিতায় বাগানের ব্যবস্থাপক প্রশান্ত সরকারের কাছে মৌখিকভাবে আবেদন করে তার অনুমতি নিয়ে ধারদেনা করে দুই লাখ টাকা ব্যয়ে ছোট এই পাকা ঘরটি নির্মাণ করেছিলাম। কিন্তু শনিবার সকাল ১০টার দিকে সব শ্রমিক কাজে যোগ দিলে কোন নোটিশ না দিয়েই অতর্কিতে শ্রীপুর গ্রামের ভাড়াটে লোকজনকে সঙ্গে নিয়ে ব্যবস্থাপক নিজে উপস্থিত থেকে ভেঙে গুঁড়িয়ে দিলেন ঘরটি।
শ্রীগোবিন্দপুর চা বাগানের ব্যবস্থাপক প্রশান্ত সরকার সুরমার ঢেউকে জানান,চা বাগানে দোকান ভিটা বা পাকা ঘর তৈরির অনুমতি দেয়া হবে না সেকথা শুরু থেকেই সকলকে জানিয়ে দেয়া সত্ত্বেও চা শ্রমিক শ্রীজনম ভর দোকানভিটা তৈরি করছিলেন,তাই তারা ভেঙ্গে দিয়েছেন। তাছাড়া ওই চা শ্রমিককে কোন অনুমতি দেয়া হয়নি বলেও জানান তিনি। চা শ্রমিকদের করা আন্দোলন বড় আকার ধারণ করলে তাদের কি করণীয় হবে সেই প্রশ্নের উত্তরে ব্যবস্থাপক বলেন, শ্রীগোবিন্দপুর চা বাগানের মালিক মহসিন মিয়া ও উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ বিষয়টি দেখবেন।
এদিকে,শ্রীগোবিন্দপুর চা বাগান পঞ্চায়েত কমিটির সভাপতি মিলন নায়েক বলেন, ব্যবস্থাপকের মৌখিক অনুমতিতেই ওই চা শ্রমিক বসতঘর নির্মাণ করেছেন। এখন আবার ব্যবস্থাপক ভাড়াটে লোকজন এনে ঘরটি ভেঙে দিলেন।
মানববন্ধনে অংশগ্রহণকারী চা শ্রমিকরা জানায়,শনিবার তারা কাজে থাকার সুবাদে প্রশান্ত সরকার ভাড়াটে লোকজন ও চৌকিদারকে সাথে নিয়ে কোন প্রকার নোটিশ ছাড়াই শ্রী জনমভরের নির্মাণাধীন ঘর ভেঙ্গে গুঁড়িয়ে দেয়। তাই রোববার সকালে তারা এই মানববন্ধনে অংশগ্রহণ করেন। তাদের দাবী মেনে না নিলে আন্দোলন আরো বড় আকার ধারণ করবে বলে জানায় সাধারণ চা শ্রমিকরা।