সুরমার ঢেউ সংবাদ :: বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে রাজধানীর আশুলিয়া থানা এলাকায় গুলিতে নিজের স্বামী আল আমিনকে ‘নিহত’ দেখিয়ে মামলা করেন এক নারী। মামলায় সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ ১৩০ জনকে আসামি করা হয়। আদালতে হাজির হয়ে এ ঘটনাটি মিথ্যা মর্মে জবানবন্দি দিয়েছেন স্বামী আল আমিন। ১৩ নভেম্বর বুধবার ঢাকার সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মো. জুনায়েদের আদালতে ১৬৪ ধারায় এ জবানবন্দি দেন তিনি। আশুলিয়া থানার সাধারণ নিবন্ধন শাখার উপ পরিদর্শক মিয়া মাসুদ বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
আশুলিয়া থানা এলাকায় গুলিতে নিজের স্বামী আল আমিনকে ‘নিহত’ দেখিয়ে মামলা দায়েরকারী ওই নারীর নাম কুলসুম বেগম (২১)। তিনি মানিকগঞ্জের ঘিওর উপজেলার স্বল্পসিংজুরী গ্রামের বাসিন্দা। এর আগে গত ১১ নভেম্বর সোমবার সিলেটের দক্ষিণ সুরমা থানায় গিয়ে পুলিশের কাছে এমন অভিযোগ করেন স্বামী আল-আমিন মিয়া (৩৪)। পরে তাকে ঘটনাস্থল আশুলিয়া থানা-পুলিশের হেফাজতে হস্তান্তর করা হয়।
গত ২৪ অক্টোবর স্বামীকে হত্যার অভিযোগ এনে ঢাকার চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে মামলা করেন কুলসুম। আদালতের নির্দেশে ৮ নভেম্বর মামলাটি আশুলিয়া থানায় এজাহারভুক্ত করা হয়। মামলায় সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী মো. আসাদুজ্জামান খান, আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের, মানিকগঞ্জ জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আব্দুছ ছালাম, সাবেক স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক, সাবেক ত্রাণ ও দুর্যোগ প্রতিমন্ত্রী এনামুর রহমান, আশুলিয়া থানার সাবেক ওসি এএফএম সায়েদ, আশুলিয়ার ধামসোনা ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি মোখলেসুর রহমান ওরফে ইলিয়াস শাহীসহ ১৩০ জনের নাম উল্লেখ করা হয়।
এজাহারে বলা হয়, গত ৫ আগস্ট সকালে আল-আমিন মিয়া মুক্তিকামী ছাত্র-জনতার আন্দোলনে অংশ নেন। শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পর ওইদিন বিকাল ৪টার দিকে তিনি আশুলিয়ার বাইপাইল এলাকায় বিজয় মিছিলে যোগ দেন। তবে পরাজয় মেনে না নিতে পেরে আওয়ামী লীগের সন্ত্রাসী বাহিনী নির্বিচার গুলি চালায়। এতে গুলিবিদ্ধ হয়ে তার স্বামী নিহত হন। অনেক খোঁজাখুঁজি করেও তিনি স্বামীর সন্ধান পাননি। পরে আশুলিয়া নারী ও শিশু হাসপাতালের ৬ আগস্টের এক প্রতিবেদনের মাধ্যমে জানতে পারেন, ওই হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ বিপুলসংখ্যক অজ্ঞাতনামা লাশ দাফন করেছে। এসব কাগজপত্র হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের কাছে আছে। পরে তিনি হাসপাতালে থাকা কাগজপত্র, ছবি ও ভিডিও দেখে তার স্বামীর লাশ শনাক্ত করেন।
জানা গেছে, আল আমিন সিলেটের দক্ষিণ সুরমার পিরিজপুরের বাসিন্দা। মামলা দায়েরের প্রায় দুই সপ্তাহ পর তিনি জানতে পারেন, তাকে ‘মৃত’ দেখিয়ে তার স্ত্রী মামলা দায়ের করেছেন। মামলা থেকে আসামির নাম প্রত্যাহার করার কথা বলে নাকি তার স্ত্রী লোকজনের কাছ থেকে টাকাপয়সাও নিচ্ছেন। আল আমিন তখন মৌলভীবাজার জেলার জুড়ি উপজেলায় ছিলেন। বিষয়টির সত্যতা জানতে তাৎক্ষণিকভাবে তিনি জুড়ী থানায় যোগাযোগ করেন। সেখানকার পুলিশ তাকে নিজের এলাকা দক্ষিণ সুরমা থানায় বিষয়টি জানানোর পরামর্শ দেয়। (সূত্র : বাংলাট্রিবিউন ডটকম)