মৌলভীবাজারে কাজী লোকমানের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিচ্ছেননা জেলা রেজিষ্ট্রার

মৌলভীবাজারে কাজী লোকমানের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিচ্ছেননা জেলা রেজিষ্ট্রার

সুরমার ঢেউ সংবাদ :: মৌলভীবাজারে কাজী মির্জা লোকমান হোসেনের বিরুদ্ধে প্রমানসহ একাধিক অভিযোগ সত্তেও তার বিরুদ্ধে কোন ব্যবস্থাই নিচ্ছেন না জেলা রেজিষ্ট্রার। মৌলভীবাজার সদর উপজেলার ৫নং আখাইলকুড়া ইউনিয়নের কাজী (নিকাহ ও তালাক রেজিষ্ট্রার) মির্জা লোকমান হোসেন দীর্ঘদিন যাবৎ অবৈধভাবে মৌলভীবাজার পৌরসভার ৩নং ওয়ার্ডস্থিত কোর্ট মার্কেটে মির্জা কম্পিউটার নামীয় তার নিজ ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে বেআইনী ও অবৈধভাবে বিবাহ ও তালাক রেজিষ্ট্রি কার্যক্রম চালিয়ে আসছেন।
এ নিয়ে মৌলভীবাজার পৌরসভার ৩নং ওয়ার্ডের কাজী (নিকাহ ও তালাক রেজিষ্ট্রার) সিরাজুল ইসলাম চৌধুরী জেলা রেজিষ্ট্রার বরাবর বার বার অভিযোগ করার প্রেক্ষিতে জেলা রেজিষ্ট্রার মৌখিক ও লিখিতভাবে বার বার সতর্ক করলেও কাজী লোকমান তাতে কর্ণপাত না করে তার বেআইনী ও অবৈধ কার্যক্রম অব্যাহত রেখেছেন। এরই ধারাবাহিকতায় বিগত ৪ অক্টোবর ২০২২ সালে কাজী লোকমান মৌলভীবাজার পৌরসভার ৩নং ওয়ার্ডস্থিত কোর্ট মার্কেটে মির্জা কম্পিউটার নামীয় তার নিজ ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে বেআইনী ও অবৈধভাবে একটি নিকাহনামা সম্পাদনকালে মৌলভীবাজার পৌরসভার ৩নং ওয়ার্ডের কাজী সিরাজুল ইসলাম চৌধুরী উক্ত নিকাহনামার বই আটক করেন। ওইদিনই সদর উপজেলা কাজী সমিতির জরুরী সভায় মৌলভীবাজার পৌরসভার ২নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর আসাদ হোসেন মক্কুর মধ্যস্থতায় বিষয়টি নিষ্পত্তি হয়। এরপরও কাজী লোকমান বেআইনী ও অবৈধ কার্যক্রম থেকে বিরত হননি। ইতিপূর্বেকার মতোই গত ১৬ জানুয়ারী ২০২৪ সালে মৌলভীবাজার পৌরসভার ২নং ওয়ার্ডের সোনাপুর বড়বাড়ী এলাকায় বেআইনী ও অবৈধভাবে একটি নিকাহনামা সম্পাদন ও রেজিষ্ট্রি করেন। এ ঘটনায় সিলেট জজ কোর্টের এডভোকেট কানন আলম গত ২১ জানুয়ারী ২০২৪ সালে মৌলভীবাজার জেলা রেজিষ্ট্রার বরাবর লিখিত অভিযোগ প্রেরণ করেন। এরপর আবার গত ১৮ সেপ্টেম্বর ২০২৪ সালে পৌরসভার ৩নং ওয়ার্ডস্থিত কোর্ট মার্কেটে মির্জা কম্পিউটার নামীয় তার নিজ ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে বেআইনী ও অবৈধভাবে নিকাহনামা সম্পাদনকালে পৌরসভার ৩নং ওয়ার্ডের কাজী সিরাজুল ইসলাম চৌধুরী উক্ত নিকাহনামার বই আটকপূর্বক জেলা রেজিষ্ট্রার বরাবর হস্তান্তর করেন। জেলা রেজিষ্ট্রার তাৎক্ষনিকভাবে একটি প্রতিনিধি দলকে পাঠিয়ে ঘটনার সত্যতা পেয়ে, যত দ্রুত সম্ভব আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহনের আশ্বাস দেন। উল্লিখিত ঘটনাবলী ছাড়াও কাজী লোকমানের বিরুদ্ধে বেআইনী ও অবৈধভাবে নিকাহ ও তালাক রেজিষ্ট্রির প্রমানসহ আরও অনেক অভিযোগ রয়েছে। তা সত্তেও রেজিষ্ট্রার রহস্যজনকভাবে কাজী লোকমানের বিরুদ্ধে কোনই ব্যবস্থা নিচ্ছেননা। কাজী লোকমানের বিরুদ্ধে বেআইনী ও অবৈধভাবে নিকাহ ও তালাক রেজিষ্ট্রির সত্যতা নিশ্চিত করেছেন পরিচয় গোপন রাখার শর্তে কয়েকজন কাজী।
মৌলভীবাজার পৌরসভার ৩নং ওয়ার্ডের কাজী সিরাজুল ইসলাম চৌধুরী জানান- একাধিকবার প্রমানসহ অভিযোগ করা সত্তেও কাজী মির্জা লোকমান হোসেনের বিরুদ্ধে জেলা রেজিষ্ট্রার কোন ব্যবস্থা নিচ্ছেননা কেন, তা আমার বোধগম্য হচ্ছেনা।
গত ৯ অক্টোবর বুধবার মুঠোফোনে এ বিষয়ে জানতে চাইলে মৌলভীবাজার জেলা রেজিষ্ট্রার সোহেল রানা বলেন- ৫নং আখাইলকুড়া ইউনিয়নের কাজী মির্জা লোকমান হোসেনের একখানা নিকাহ নিবন্ধন বই পৌরসভার ৩নং ওয়ার্ডের কাজী সিরাজুল ইসলাম চৌধুরী আমার কাছে জমা দিয়েছেন। এ ঘটনা তদন্তের জন্য একটি কমিটি গঠন করে তদন্তের দায়িত্ব দিয়েছি। তদন্তে ঘটনার সত্যতা প্রমানীত হলে বিধি মোতাবেক ব্যবস্থা নেয়া হবে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *