মোহাম্মদ হায়দার :: মৌলভীবাজার জেলার রাজনগর উপজেলার পাঁচগাও ইউনিয়নের বর্তমান চেয়ারম্যান সিরাজুল ইসলাম ছানার দাফন সম্পন্ন হয়েছে ১৩ আগস্ট মঙ্গলবার। সকাল ১১টায় নিজ বাড়িতে জানাযা শেষে তাকে পারিবারিক কবরস্থানে দাফন করা হয়। জানাযাপূর্ব আলোচনায় বক্তব্য রাখেন জেলা আওয়ামীলীগের সহ-সভাপতি মুহিবুর রহমান তরফদার, বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর সাবেক জেলা আমির আব্দুল মান্নান, উপজেলা বিএনপির নেতা ছালিক আহমেদ সিদ্দিকী প্রমুখ।
উল্লেখ্য- আওয়ামীলীগ সরকারের পতনের পর উপজেলার পাঁচগাঁও ইউনিয়নের মধুর বাজারের মহেশ দাসের দোকান লুট করা হয়। এনিয়ে মধুর বাজারে উত্তেজনা ছিল। ৯ আগস্ট শুক্রবার সকালে মধুর বাজারে লুটকারীদের সাথে স্থানীয় আওয়ামীলীগ নেতা দেওয়ান মিয়ার ভাই ছুনু মিয়ার কথা কাটাকাটি হয়। বিষয়টি নিয়ে উভয়পক্ষের গ্রামের লোকজনের মধ্যে জানাজানি হলে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে। রক্তা গ্রামের বিএনপি নেতা পিন্টু সুলতানের নেতৃত্বে ও কেওলা গ্রামের আওয়ামীলীগ নেতা দেওয়ান মিয়ার নেতৃত্বে মধুর বাজারে আগ্নেয়াস্ত্র ও দেশিয় অস্ত্র নিয়ে মুখোমুখি সংঘর্ষ হয়। সংঘর্ষকালে অগ্নেআস্রসহ দেশি অস্ত্র নিয়ে ধাওয়া পাল্টা ধাওয়াসহ উভয়পক্ষ আগ্নেয়াস্ত্রের গুলি ছুড়ে। আড়াই ঘন্টাব্যাপী এ সংঘর্ষকালে গুলিবিদ্ধ হয়ে পাঁচগাঁও ইউনিয়নের চেয়ারম্যান সিরাজুল ইসলাম ছানা আহত হন। সিলেট এমএজি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেয়ার পর তিনি মারা যান। সংঘর্ষে উভয়পক্ষের ৭ জন গুলিবিদ্ধ এবং আতিক (১৮), মহেষ দাস (৬০), রুহিত দাস (২২), লিটন দাস (২৩), অজিত দাস (২৬), হিমাংশু দাস (২৫), সুমন দাশ (২৫), সঞ্জিত দাস (৪৫), তারা মিয়া (৪২), দুরুদ মিয়া (৩০), মোক্তার মিয়া (৫৮), শাহজাহান (৩২), আওলাদ হোসেন (৫০), ফয়ছল আহমদ (২৯), সুলতান (৩২), আফান মিয়া (৩৫), বিপ্লব দাস (২৮), শহীদ মিয়া (৫০), লোকমান (৩৫), লিপুন মিয়া (৩৫), আজমল আলী (৫৫), লায়েক (৩৫), জিকু (২৬), জিলু (২৮), ভুট্টু (২৫), সোহেল (২৫), পাভেল (২২), মিনত (৫৫), দিলাবত (৩০), ইয়াবর (৩৬), নুরুল আমিন (২৮), তারিস আহমদ (৬০), জিতু (৬০), এরশাদ (৬০), দুলু মিয়া (৫০), কুনাই মিয়া (৫৫), আলম মিয়া (২৬), হুসাইন (২০), ইসলাম মিয়া (২০), নুরুল ইসলাম (২০), মাহিদ (১৫), মিন্টু (১৬), নাঈম (১৮), সুহেল (২০) সহ উভয়পক্ষে অর্ধশতাধিক লোক আহত হন। খবর পেয়ে সেনাবাহীনির সদস্যরা গিয়ে পরিস্থিতি শান্ত করেন। প্রতক্ষদর্শী ও পারিবারিক সূত্রের দাবি- রক্তা গ্রামের পিন্টু সুলতান ও পিকার মিয়ার বন্দুকের গুলিতে চেয়ারম্যান সিরাজুল ইসলাম ছানা নিহত হয়েছেন। নিহত চেয়ারম্যান সিরাজুল ইসলাম ছানার চাচাতো ভাই দেওয়ান মিয়া বলেন- আমার ভাইকে বিএনপি নেতা পিন্টু সুলতান গুলি করে মেরেছে। তারা আমাদের সব দোকান লুটপাট করে নিয়ে গেছে।
অপরপক্ষের পিন্টু সুলতান বলেন- আমি আমার আইস ফ্যাক্টরিতে কাজ করার সময় সারমপুর ও কেওলার লোকজন বাজারে হামলা চালায়। পরে আমরা তাদের প্রতিহত করি।
সেনাবাহীনির মৌলভীবাজার ক্যাম্পের ওয়ারেন্ট অফিসার হেলাল উদ্দিন বলেন- সংঘর্ষের খবর পেয়ে আমরা ঘটনাস্থলে এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রনে এনেছি।
উপজেলা নির্বাহী অফিসার সুপ্রভাত চাকমা বলেন- চেয়ারম্যান নিহত হবার খবর পেয়েছি। বিষয়টি অত্যন্ত মর্মান্তিক।