শ. ই. সরকার জবলু :: আজকের সার্বিক তথ্য অনুযায়ী মৌলভীবাজার জেলার বন্যা পরিস্থিতি উন্নতির দিকে। জেলার কুশিয়ারা ও জুড়ী নদীর পানি এখনো বিপদসীমার উপরে থাকলেও মনু ধলাই নদীর পানি বিপদসীমার নিচে নেমেছে। গতকাল ও আজকের মতো আরো ১/২ দিন বৃষ্টিপাত না হলে কুশিয়ারা ও জুড়ী নদীর পানিও বিপদসীমার নিচে নেমে যাবে বলে আশা করা যায়। আজ ২১ জুন শুক্রবার দুপুর সোয়া ১২টায় জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা গেছে- তিন জেলার মিলণস্থল জেলার সদর উপজেলার শেরপুরে কুশিয়ারা নদীর পানি বিপদসীমার ২৩ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে এবং জেলার জুড়ী উপজেলার জুড়ী নদীর পানি বিপদসীমার ২০৭ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। আর, জেলার রেলওয়ে ব্রীজ পয়েন্টে মনু নদীর পানি বিপদসীমার ২৩৫ সেন্টিমিটার নিচ দিয়ে, চাঁদনীঘাট ব্রীজ পয়েন্টে মনু নদীর পানি বিপদসীমার ২ সেন্টিমিটার নিচ দিয়ে এবং কমলগঞ্জ উপজেলার রেলওয়ে ব্রীজ পয়েন্টে ধলাই নদীর পানি বিপদসীমার ২৬০ সেন্টিমিটার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। বন্যায় দূর্যোগ কবলিত হয়েছেন জেলার ৭ উপজেলার ৩ লাখ ৪৭ হাজার ৪০২ জন। বন্যাকবলিত এলাকাসমূহে মোট ২০৫টি আশ্রয়কেন্দ্র ও ৭০টি মেডিকেল টিম প্রস্তুত রাখা হয়েছে। আশ্রয়কেন্দ্রগুলোতে এ পর্যন্ত আশ্রয় গ্রহণ করেছেন ৯ হাজার ৯৭৭ জন। এছাড়াও ২০০টি গবাদি পশু রয়েছে আশ্রয়কেন্দ্রগুলোতে।
পানিবন্দি মানুষকে উদ্ধারে প্রয়োজনীয় তৎপড়তা চালানো হচ্ছে। বন্যার সার্বিক পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণের জন্য জেলা প্রশাসকের কার্যালয় ও উপজেলা নির্বাহী অফিসারের কার্যালয়সমূহে কন্ট্রোলরুম স্থাপন করা হয়েছে। প্রতিটি ইউনিয়নে নিয়োগ করা হয়েছে ট্যাগ অফিসার। সরকারী ও বেসরকারীভাবে ত্রাণ বিতরণ কার্যক্রম চলমান রয়েছে। এ পর্যন্ত ২ হাজার ৫০০ প্যাকেট শুকনো খাবার, ১ হাজার ২শ প্যাকেট রান্না করা খাবার, ২ হাজার ৫০০ প্যাকেট খাবার স্যালাইন, প্রতিটি ১০ লিটার পানিপূর্ণ ২৪০ বোতল পানি, ৪২২ মেট্রিক টন জিআর চাল, নগদ ২ লাখ ৮৭ হাজার ৫০০ জিআর টাকা ও ৬৫ হাজার পানি বিশুদ্ধকরণ ট্যাবলেট বিতরণ করা হয়েছে।
বন্যার্ত মানুষকে সার্বিক সহযোগীতা ও উদ্ধার কার্যক্রম চালানোর জন্য স্বেচ্ছাসেবক টিম (স্কাউট, রোভার স্কাউট, রেডক্রিসেন্ট, যুব রেডক্রিসেন্ট, ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স) প্রস্তুত রাখা হয়েছে। সর্বোপরী পুরো জেলায় বন্যা পরিস্থিতির উপর প্রশাসনের পক্ষ থেকে সতর্ক দৃষ্টি রাখা হচ্ছে।
বন্যার পানিতে ডুবে মৌলভীবাজার-শমসেরনগর সড়কস্থ সদর উপজেলার চাঁদনীঘাট ইউনিয়নের শ্যামেরকোনা এলাকায় ১৫ বছর ও ৮ বছর বয়সী ২ ছেলে এবং বড়লেখা উপজেলার নিজ বাহাদুরপুর ইউনিয়নস্থিত বাঘাডহর গ্রামে ১২ বছর বয়সী ১ মেয়ে নিহত হয়েছে বলেও জানা গেছে।