প্রতীকী শ্রদ্ধাঞ্জলী অর্পণ করে মৌলভীবাজারে পন্ডিত সারদা-অন্নদা শহীদ দিবস পালণ

প্রতীকী শ্রদ্ধাঞ্জলী অর্পণ করে মৌলভীবাজারে পন্ডিত সারদা-অন্নদা শহীদ দিবস পালণ

সুরমার ঢেউ সংবাদ :: মৌলভীবাজার কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে প্রতীকী শ্রদ্ধাঞ্জলী অর্পণ করে ঘড়ুয়া গ্রামের পন্ডিত সারদা-অন্নদা শহীদ দিবস পালণ করেছে শহীদ পন্ডিত সারদা-অন্নদা স্মৃতি ফাউন্ডেশন মৌলভীবাজার। গতকাল ১২ মে রোববার ছিলো পন্ডিত সারদা-অন্নদা ভ্রাতৃদ্বয়ের ৫২তম শহীদ দিবস। এ দুই শহীদের এক উত্তরসূরী মৃতঃ পূর্ণেন্দু বিকাশ দাশের পরিবারকে ঘড়ুয়া গ্রামে একঘরে (বয়কট) করায়, নিরাপত্তাহীনতার কারণে গ্রাম ছেড়ে শহরে বসবাসরত থাকায়, তারা মৌলভীবাজার কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে প্রতীকী শ্রদ্ধাঞ্জলী অর্পণ করেন। মৃতঃ পূর্ণেন্দু বিকাশ দাশের স্ত্রী ও শহীদ পন্ডিত সারদা-অন্নদা স্মৃতি ফাউন্ডেশন মৌলভীবাজার এর সভাপতি কল্যাণী দাশগুপ্তার নেতৃত্বে এ প্রতীকী শ্রদ্ধাঞ্জলী অর্পণ করা হয়। এসময় মৃতঃ পূর্ণেন্দু বিকাশ দাশের জৈষ্ঠপুত্র পংকজ দাশগুপ্তসহ অন্যান্যরা উপস্থিত ছিলেন।
উল্লেখ্য- এজমালী ভূমি বাটোয়ারা না করেই হার্ট ফাউন্ডেশন মৌলভীবাজার-কে দান করার কারণে এ দুই শহীদের এক উত্তরসূরী কানাডা প্রবাসী ডাঃ সুধেন্দু বিকাশ দাশের বিরুদ্ধে বাটোয়ারা মামলা করায়, হার্ট ফাউন্ডেশন মৌলভীবাজার এর পক্ষীয় ঘড়ুয়া গ্রামের প্রভাবশালী লোকজন অপর উত্তরসূরী মৃতঃ পূর্ণেন্দু বিকাশ দাশের পরিবারকে বয়কট ঘোষণা করায়, নিরাপত্তাহীন হয়ে তারা গ্রাম ছেড়ে শহরে বসবাস করতে বাধ্য হচ্ছেন।
১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধকালে দেশ ছেড়ে দলে দলে লোক দেশ ছেড়ে ভারতে পালিয়ে গেলেও, আজীবন শিক্ষার আলো ছড়িয়ে যাওয়া এ শিক্ষক ভ্রাতৃদ্বয় ছিলেন পালিয়ে যেতে নারাজ। তাদের কথা ছিলো, মরতে হয় জন্মভূমি বাংলার মাটিতেই মরবো। তবু, জন্মভূমি বাংলা ছেড়ে পালিয়ে যাবোনা। এর মাত্র কিছুদিনের মধ্যে ১২ মে ১৯৭১ সালে জন্মভূমি বাংলার মাটিতেই তারা নির্মমভাবে নিহত হন তাদরই এক সাবেক ছাত্রের ইশারায় পাক হানাদার বাহিনীর ব্রাসফায়ারে ঝাঁঝরা হয়ে ও আগুনে পুড়ে। জানা গিয়েছিলো, পাক হানাদার বাহিনীর দোসর স্বাধীনতা বিরোধী ও যুদ্ধাপরাধী মৃতঃ ইনাম উল্যাহর নেতৃত্বে স্থানীয় রাজাকাররা ছিলেন এ হত্যাকান্ডের মূল কুশীলব। এদের মধ্যে অনেকেই ছিলেন এ ভ্রাতৃদ্বয়ের সাবেক ছাত্র। নিজস্ব শ্মশানে শেষকৃত্যও করা যায়নি এ ভ্রাতৃদ্বয়ের গোপনে চাটাই মুড়িয়ে তাদের মৃতদেহ মনুনদীতে ভাসিয়ে দিতে হয়েছিলো। জীবনের ঝুঁকি নিয়ে এ শহীদ ভ্রাতৃদ্বয়ের মৃতদেহ বহন করে মনু নদীতে নিয়ে গিয়েছিলেন মৃতঃ তৈয়বুর রহমান।
এরপর ১৬ ডিসেম্বর মুক্তিযুদ্ধে বিজয় ও ২৬ মার্চ দেশ স্বাধীন হলেও, এ শহীদ ভ্রতৃদ্বয়ের নাম শহীদদের তালিকায়স্থান পায়নি। এরপর একে একে অতিক্রান্ত হয়েছে স্বাধীনতার ৫২ বছর। কিন্তু, এ শহীদ ভ্রতৃদ্বয়ের নাম শহীদদের তালিকাভূক্ত হয়নি আজও। শহীদ পন্ডিত সারদা-অন্নদা স্মৃতি ফাউন্ডেশন মৌলভীবাজার এর সভাপতি কল্যাণী দাশগুপ্তা এবং তার দুই পুত্র পংকজ দাশগুপ্ত ও ব্রিটেন প্রবাসী কণক দাশগুপ্ত বলেন- আমরা আশা করছি, দেরীতে হলেও অন্ততঃ এখন তাদের নাম শহীদদের তালিকাভূক্ত করা হবে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *