বিশেষ প্রতিনিধি :: এবার মুখ খুললেন মৌলভীবাজার জগৎপুর দাখিল মাদ্রাসার সাবেক সভাপতি ও ধর্ষণের অপবাদী সাবেক ছাত্রী। ধর্ষণের অপবাদী ওই সাবেক ছাত্রী জানান- আমি ভালো ছাত্রী হয়েও গত দাখিল পরীক্ষায় একটি বিষয়ে খারাপ করি। এবার আমার ছোট বোনও দাখিল পরিক্ষার্থী হওয়ায় আমি ছোটবোনের সাথে পরীক্ষা দিতে হবে বলে নিজের প্রতি লজ্জিত ছিলাম। এ লজ্জায় আমি বিষপানে আত্মহত্যার চেষ্টা করি। কিন্তু, একাধিক সংবাদ মাধ্যমে আমাকে ধর্ষিতা ও গর্ভবতি উল্লেখে মিথ্যা ও বানোয়াট সংবাদ প্রকাশিত হওয়ায় আমি হতবাক।
মাদ্রাসার সাবেক সভাপতি মিছবাহ মিয়া আমার মামাতো বড়ভাই। উনাকে জড়িয়ে যে বা যারা এসব মিথ্যাচার করেছে আমি তাদের বিচার চাই। এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন- আমি কোনো হুমকি বা প্রলোভন পেয়ে মিথ্যা বলছিনা। যা সত্য তাই বলছি। আমি যখন মৌলভীবাজার সদর হাসপাতালে চিকিৎসাধীন থাকাবস্থায় আমার প্রতিবেশী মিতালী বেগম ও সায়মন মিয়া আমাকে দেখতে আসে। তারা ব্যক্তিগত কিছু কথা আছে বলে আমার সাথে থাকা আমার মা, চাচা, চাচিসহ অন্যান্যদেরকে নিচে পাঠিয়ে দিয়ে আমাকে বিভিন্ন ধরনের ভয়ভীতি প্রদর্শন করে মোবাইলে কার সাথে কথা বলে এবং আমাকে দিয়ে কিসব কথা বলিয়ে ভিডিধারণ করে। মৃত্যুর দুয়ার থেকে ফিরে আসা গুরুতর অসুস্থ্য আমাকে দিয়ে তারা কি বলিয়ে ভিডিওধারণ করেছে তা বুঝার বা মনে রাখার মতো অবস্থা আমার ছিলোনা। পরে জেনেছি তারা আমাকে দিয়ে কিসব কথা বলিয়ে ভিডিওধারণ করেছে। এ বিষয়ে বক্তব্য জানার জন্য মুঠোফোনে সায়মন মিয়ার সাথে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলে তার মুঠোফোন বন্ধ পাওয়া যায়।
মুঠোফোনে মিতালী বেগমের কাছে এ বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি ওই ছাত্রীকে ভয়ভীতি প্রদর্শন ও শিখিয়ে দেয়া কথা বলিয়ে তা ভিডিওধারণ করার বিষয় অস্বীকার করেন।
একাধিক সংবাদ মাধ্যমে প্রকাশিত ধর্ষণ ও বিষপান করতে বলার অভিযোগ বিষয়ে মাদ্রাসার ম্যানেজিং কমিটির সাবেক সভাপতি মিছবাহ মিয়া জানান- আমি প্রতিপক্ষের চক্রান্তের শিকার। আমি নির্বাচনের মাধ্যমে বিপুল ভোটে মাদ্রাসার সভাপতি নির্বাচিত হই। বিগত প্রায় দুইবছরে বিভিন্ন আত্মীয়-স্বজন, বন্ধু-বান্ধব ও এলাকার মানুষের কাছ থেকে আর্থিক সহযোগিতা নিয়ে মাদ্রাসার ব্যাপক উন্নয়ন সাধন করি এবং আমার সময়ে মাদ্রাসার ছাত্রছাত্রীদের লেখা-পড়ার মান বাড়তে থাকায় ছাত্রছাত্রী সংখ্যা বাড়তে থাকে। এতে ঈর্ষান্বিত হয়ে আমার প্রতিপক্ষ, মাদ্রাসার এক সাবেক সভাপতির ছোটভাইসহ কয়েকজনের একটি দুষ্টচক্র আমার পেছনে লাগে। আমার মাধ্যমে মাদ্রাসার বিভিন্ন উন্নয়নমূলক কাজে তারা বাঁধা হয়ে দাঁড়াতো। এ নিয়ে অনেক বিচার সালিশ হয়েছে। কয়েকদিন শান্ত থাকলেও পরে আবারও তারা আমার বিরুদ্ধে যড়যন্ত্রে লিপ্ত হয়। মাদ্রাসার নির্বাচনকে সামনে রেখে এ দুষ্টচক্র আমাকে সামাজিক ও মানসিকভাবে হেয় প্রতিপন্ন করার জন্য নেপথ্যে থেকে আমার বিরুদ্ধে এ জঘন্য অপপ্রচার করেছে বলে মনে করি। আমি সবার কাছে এ দুষ্টচক্রের বিচার চাই।
এ বিষয়ে মাদ্রাসার সুপার নেজাম চৌধুরী জানান-, মেয়েটি এ মাদ্রাসার সাবেক ছাত্রী এবং মিছবাহ মিয়াও এ মাদ্রাসার ম্যানেজিং কমিটির সাবেক সভাপতি। তাই, অনুরোধ করব আমার মাদ্রাসার নামটি ব্যবহার না করার জন্য। তাছাড়া ধর্ষণের মতো কোনো ঘটনা ঘটেছে বলে আমার জানা নেই। তবে, মেয়েটি বিষপান করেছিলো বলে শুনেছি। মিছবাহ মিয়া দীর্ঘদিন এ মাদ্রাসার ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি ছিলেন। কখনও তার কোনো খারাপ চলাফেরা আমাদের চোখে পড়েনি। তিনি খুব ভালো মানুষ বলেই জানি।