সিলেটে প্রসবজনিত ফিস্টুলা বিষয়ক কর্মশালা অনুষ্ঠিত

সিলেটে প্রসবজনিত ফিস্টুলা বিষয়ক কর্মশালা অনুষ্ঠিত

শ. ই. সরকার জবলু :: বিভাগীয় পরিচালক (স্বাস্থ্য) ডা. মো: হারুন-অর-রশীদ এর সমন্বয়ে ২৭ ডিসেম্বর বুধবার অনুষ্ঠিত কর্মশালায় রিসোর্স পারসন হিসেবে ছিলেন এম.এ.জি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মাহবুবুর রহমান ভূঁইয়া, বিভাগীয় পরিচালক (পরিবার পরিকল্পনা) মোঃ মাজহারুল হক চৌধুরী, বারডেম জেনারেল হাসপাতালের সিনিয়র কনসালটেন্ট অধ্যাপক ডা. এম খলিলুর রহমান, ওজিএসবি’র সাবেক প্রেসিডেন্ট অধ্যাপক ডা. ফেরদৌসী বেগম এবং জাতিসংঘ জনসংখ্যা তহবিল’র টেকনিকেল অফিসার ডা. অনিমেষ বিশ্বাস।
বিভাগীয় পরিচালক (স্বাস্থ্য) এর কার্যালয়ে মেডিকেল অফিসার ডা. ভাস্কর ভট্টাচার্য্য বর্ষন এর পরিচালনায় অন্যান্যের মধ্যে ছিলেন সিআইপিআরবি’র প্রজনন ও শিশু স্বাস্থ্য বিভাগের পরিচালক অধ্যাপক ডা. এম এ হালিম, সিভিল সার্জন ডা. চৌধুরী জালাল উদ্দিন মুর্শেদ ও ডা. মনিসর চৌধুরী, সহকারী পরিচালক (রোগ নিয়ন্ত্রণ) ডা. মোহাম্মদ নূরে আলম শামীম, সিলেট এমএ জি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের গাইনী ও প্রসূতি বিভাগের বিভাগীয় প্রধান অধ্যাপক ডা. নাসরীন আখতার, সহকারী অধ্যাপক ডা. খোরশেদা তাহমিন, ওজিএসবি সিলেটের ফিস্টুলা সার্জন অধ্যাপক ডা. শামসুন্নাহার হেনা, উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. ফেরদৌস আক্তার, ডা. আবদুল্লাহেল মারুফ ফারুকী, ডা. মোঃ মোজাম্মেল হোসেন ও ডা. দেলোয়ার হোসেন সুমন, সাংবাদিক ফখরুল ইসলাম, মোঃ মনিরুজ্জামান মনির, মনিকা ইসলাম ও বিলকিস আক্তার সুমি। মেডিকেল অফিসার ডা. শরীফ মো: সনজিদ জামান, ফিস্টুলা সারভাইভার আলেকজান বিবি ও বানেসা বেগম, সিআইপিআরবি’র আরসিএইচ বিভাগের টিম লিডার, ডা. আবু সাঈদ মোহাম্মদ আবদুল্লাহ, প্রকল্প সমন্বয়কারী মোঃ আলতাফুর রহমান, জেলা সমন্বয়কারী শারমিনা পারভীন ও রিনা আক্তার ।
কর্মশালায় বক্তারা সিলেট বিভাগের প্রসবজনিত ফিস্টুলা কার্যক্রমের অগ্রগতি ও চ্যালেঞ্জসমূহ বিশদভাবে পর্যালোচনা করেন। কর্মশালায় জানানো হয়, স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয় এবং জাতিসংঘ জনসংখ্যা তহবিল এর সহযোগিতায় সিলেট বিভাগের সকল জেলায় ‘‘ফিস্টুলা নির্মূলকরণ কার্যক্রম-২০৩০’’ বাস্তবায়ন করা হচ্ছে। উক্ত কার্যক্রম বাস্তবায়নে সেন্টার ফর ইনজুরি প্রিভেনশন এন্ড রিসাচ বাংলাদেশ (ঈওচজই) কারিগরি সহযোগিতা প্রদান করছে। এ কার্যক্রমের আওতায় প্রধানতঃ ফিস্টুলা রোগী শনাক্তকরণ, রেফারের মাধ্যমে চিকিৎসা সেবা প্রদান এবং পূনর্বাসনের আওতাভূক্ত করতে সহযোগিতা করা হয়। চলতি বছর সিলেট বিভাগে ১০৭ জন রোগী সনাক্ত করা হয়েছে। এর মধ্যে ৮৫ জনকে কমিউনিটি থেকে বিভিন্ন হাসপাতালে চিকিৎসার জন্য রেফার করা হয়েছে। ৬৪ জনের অপারেশন হয়েছে এবং ৫৩ জন সুস্থ হয়ে স্বাভাবিক জীবনে ফিরে এসেছেন। জেলা অনুযায়ী তথ্যে জানানো হয় যে, সিলেটে ২৭ জন, মৌলভীবাজারে ২২ জন, হবিগঞ্জে ৩৪ জন এবং সুনামগঞ্জে ২৪ জন রোগী সনাক্ত করা হয়েছে।
আলোচনায় আরো জানানো হয়, সিলেট বিভাগের ৪টি উপজেলাকে প্রসবজনিত ফিস্টুলামুক্ত ঘোষণা করার জন্য বিশেষ কার্যক্রম চলমান রয়েছে। সিলেট বিভাগকে ২০৩০ সালের মধ্যে ফিস্টুলামুক্ত করতে সংশ্লিষ্ট সকলের সমন্বয়ের সাথে কার্যক্রম পরিচালনার জন্য সুপারিশ করা হয়েছে। প্রসবজনিত ফিস্টুলা চেনার সহজ উপায় হচ্ছে: মহিলার প্রসবের রাস্তা দিয়ে সব সময় প্রস্রাব বা পায়খানা অথবা উভয়ই ঝরতে থাকবে। প্রতিরোধের উপায় হলো: বাল্য বিবাহ ও কম বয়সে বাচ্চা নেয়া থেকে বিরত থাকা এবং হাসপাতালে প্রসব করানো।
উল্লেখ্য- আমাদের দেশে দিন দিন প্রসবজনিত ফিস্টুলা রোগীর সংখ্যা বাড়ছে। এ রোগে আক্রান্ত নারীদের শারীরিক সমস্যার পাশাপাশি সামাজিকভাবেও অবহেলা এবং অবমাননার শিকার হতে হয়। তাদেরকে সামাজিক ও পারিবারিক বোঝা মনে করেন অনেকে। একজন ফিস্টুলা রোগী যে ধরনের মানসিক বিষন্নতা, উদ্বেগ ও অশান্তি অনুভব করেন সেটা খুবই ভয়াবহ। বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন- বিলম্বিত প্রসব বা বাধাগ্রস্ত প্রসব, বাল্য বিবাহ ও কম বয়সে গর্ভধারণ, জরায়ুতে অস্ত্রোপচার, অদক্ষ ধাত্রীর মাধ্যমে প্রসব করানোসহ সচেতনতার অভাবে ফিস্টুলা রোগ বাড়ছে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *