মোহাম্মদ হায়দার :: মৌলভীবাজারে নানা কর্মসূচির মধ্যদিয়ে মৌলভীবাজার পাক হানাদার মুক্ত দিবস পালিত হয়েছে ৮ ডিসেম্বর শুক্রবার। ১৯৭১ সালের এই দিনে পাক হানাদার বাহিনীকে বিতারিত করার মাধ্যমে শত্রুমুক্ত হয়েছিল মৌলভীবাজার শহর। এরপর থেকে এ দিনটিকে মৌলভীবাজার মুক্ত দিবস হিসেবে পালিত হয়ে আসছে।
মুক্ত দিবস উপলক্ষ্যে সকাল সাড়ে ১০টায় মুক্তিযোদ্ধা কমপ্লেক্সে জাতীয় পতাকা উত্তোলন ও বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতিতে পুস্পস্তবক অর্পন করা হয়। সরকারী ও বেসরকারী বিভিন্ন সংগঠন, রাজনৈতিক সংগঠন ও সংস্থার পক্ষ থেকে বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতিতে পুষ্পস্তবক অর্পন করা হয়। পরে বিজয় র্যালী এবং মুক্তিযুদ্ধ নিয়ে স্মৃতিচারণ ও আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়। এতে প্রধান ছিলেন, জেলা প্রশাসক ড. উর্মি বিতে সালাম, বিশেষ অতিথি ছিলেন পুলিশ সুপার মো: মনজুর রহমান, জেলা আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক ও জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান মিজবাহুর রহমান, পৌর মেয়র ফজলুর রহমান, সাবেক জেলা মুক্তিযোদ্ধা কামান্ডার জামাল উদ্দিন, যুক্তরাজ্য আওয়ামীলীগের সহ-সভাপতি এম এ রহিম সিআইপিসহ অন্যান্যরা।
১৯৭১ সালের এই দিনে বীর মুক্তিযোদ্ধারা মরনপণ লড়াই করে পাক হানাদার বাহিনীকে বিতারিত করে মৌলভীবাজারকে শত্রুমুক্ত করেছিল। মুক্তিযোদ্ধাদের বহুমূখী মরন পণ লড়াই ও ভারত থেকে মুক্তি বাহিনী ক্রমশ ক্যাম্প অভিমুখে এগিয়ে আসার খবরে পাক বাহিনী ভীত হয়ে পড়ে। অবস্থা বেগতিক দেখে ৮ ডিসেন্বর ভোরে তারা শেরপুর হয়ে সিলেটের দিকে পালিয়ে যায়। এরপর মুক্ত হয় মৌলভীবাজার শহর। উড়ানো হয় স্বাধীন বাংলাদেশের পতাকা এর আগে পাক হানাদার বাহিনীর সাথে লড়াই করে নিহত হয়েছিলেন মুক্তিযোদ্ধাসহ শতাধিক নারী-পুরুষ ও শিশু। ৭১ সালের ৩০ এপ্রিলের পর থেকে ৭ ডিসেন্বর পর্যন্ত রাজাকারদের সহায়তায় পাক হানাদার বাহিনী মৌলভীবাজারে হত্যা করেছিল অর্ধশতাধিক মুক্তিযোদ্ধাসহ নিরীহ মানুষকে।
মৌলভীবাজার মুক্ত করতে বীর মুক্তিযোদ্ধা তারা মিয়া, জমির মিয়া, নীরোধ চন্দ্র রায়, সিরাজুল ইসলাম, আব্দুল মন্নান, উস্তার উল্লাহসহ কয়েক শত নারী-পুরুষ শহীদ হন। মৌলভীবাজার মুক্ত দিবস উপলক্ষ্যে জেলা প্রশাসন, বিভিন্ন রাজনৈতিক দল ও বিভিন্ন সামাজিক সংগঠন পৃথকভাবে অয়োজন করেছিলো আলোচনা সভা ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের।