সুরমার ঢেউ সংবাদ :: দেশের চা শিল্পের ১৬৯ বছরের ইতিহাসে চলতি মৌসুমে চা উৎপাদনে নতুন রেকর্ড সৃষ্টি করবে বাংলাদেশ। এমনটিই ধারণা করছেন চা সংশ্লিষ্টরা। চলতি বছরে রেকর্ড পরিমাণ চা উৎপাদনের পথে রয়েছে বাংলাদেশ। ইতোমধ্যে যে পরিমাণ চা উৎপাদিত হয়েছে, তাতে নতুন রেকর্ডের ইঙ্গিত পাওয়া যাচ্ছে। বাংলাদেশ চা বোর্ড সূত্র জানায়- চা শিল্পের উন্নয়নে ‘উন্নয়নের পথ নকশা : বাংলাদেশ চা শিল্প’ নামে মহাপরিকল্পনা করা হয়েছে। এর মাধ্যমে ২০২৫ সালের মধ্যে দেশে চায়ের উৎপাদন ১৪০ মিলিয়ন কেজিতে উন্নীত করতে কাজ করছে বর্তমান সরকার। শ্রীমঙ্গলে অবস্থিত বাংলাদেশ চা গবেষণা ইনস্টিটিউট সুত্র জানায়- চা শিল্পের জন্য বছরে প্রায় ২ হাজার মিলিমিটার বৃষ্টি প্রয়োজন হয়। গত জুন, জুলাই,আগস্ট ও সেপ্টেম্বর মাসে চায়ের ভরা মৌসুমে পর্যাপ্ত বৃষ্টিপাত হয়েছে- যা ব্যাপক সুফল বয়ে এনেছে চা শিল্পের জন্য। শ্রীমঙ্গল আবহাওয়া পর্যবেক্ষন কেন্দ্রের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আনিসুর রহমান জানান- চলতি বছর জানুয়ারি থেকে অক্টোবর পর্যন্ত শ্রীমঙ্গলের চা শিল্পাঞ্চলে ২ হাজার ৯৩ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড হয়েছে। এরমধ্যে জানুয়ারিতে বৃষ্টি না হলেও ফেব্রুয়ারিতে ১ মিলিমিটার, মার্চে ১১৩ মিলিমিটার, এপ্রিলে ৯৯ মিলিমিটার, মে মাসে ১৮৬ মিলিমিটার, জুনে ৬৯৫ মিলিমিটার, জুলাইয়ে ৩০৭ মিলিমিটার, আগস্টে ৩৭৫ মিলিমিটার, সেপ্টেম্বরে ২৫১ মিলিমিটার ও অক্টোবরে ৬৬ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে। চা বোর্ড সুত্র জানায়- চলতি চা উৎপাদন মৌসুমে দেশে চা উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারন করা হয়েছে ১০২ মিলিয়ন কেজি অর্থাৎ ১০ কোটি ২০ লাখ কেজি। চলতি বছরের ৩০ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত দেশে গত বছরের একই সময়ের তুলনায় ৫.২৫১ মিলিয়ন কেজি অর্থাৎ ৫২ লাখ ৫১ হাজার কেজি চা বেশী উৎপাদন হয়েছে। সূত্র আরও জানায়- চলতি বছর সেপ্টেম্বর পর্যন্ত দেশে ৬৯.০৮৪ মিলিয়ন কেজি চা উৎপাদিত হয়েছে। গত বছর একই সময়ে দেশে চা উৎপাদিত হয়েছিল ৬৩.৮৩৩ মিলিয়ন কেজি। ২০২১ সালে দেশে সর্বোচ্চ ৯৬.৫১ মিলিয়ন কেজি অর্থাৎ ৯ কোটি ৬৫ লাখ ১০ হাজার কেজি চা উৎপাদন হয়ে দেশে চা শিল্পের অতীতের সব রেকর্ড ভেঙে নতুন রেকর্ড সৃষ্টি হয়েছিল। চা বিজ্ঞানীরা বলছেন- এবার সব রেকর্ডকে পেছনে ফেলে ১০২ মিলিয়ন কেজি চা উৎপাদনের মাধ্যমে দেশে নতুন রেকর্ড গড়বে বাংলাদেশ। চা বোর্ডের প্রকল্প পরিচালক ড. এ কে এম রফিকুল হক জানান- উৎপাদন বাড়াতে বাগানগুলোতে মনিটরিং জোরদার করা হয়েছে। এছাড়া নানাভাবে বাগান কর্তৃপক্ষকে প্রণোদনা দেয়া হয়েছে। আমরা আশা করছি এবছর চা উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা ছাড়িয়ে যাবে এবং চা উৎপাদনে নতুন রেকর্ড সৃষ্টি হবে চা শিল্পে।