শ্রীমঙ্গলের লেমন গার্ডেন রিসোর্টে খুন– মদের বোতলে পা লেগে ভেঙে যাওয়ায় শরিফুলকে খুন করেন রাব্বিসহ ৩ বন্ধু

শ্রীমঙ্গলের লেমন গার্ডেন রিসোর্টে খুন– মদের বোতলে পা লেগে ভেঙে যাওয়ায় শরিফুলকে খুন করেন রাব্বিসহ ৩ বন্ধু

সুরমার ঢেউ সংবাদ :: মদের বোতলে পা লেগে ভেঙে যাওয়ায় কাঠ দিয়ে মাথায় আঘাত করে শরিফুলকে খুন করেন রাব্বিসহ ৩ বন্ধু। শ্রীমঙ্গলের লেমন গার্ডেন রিসোর্টে পর্যটক শরিফুল খুনের ঘটনায় ২৯ আগষ্ট মঙ্গলবার রাতে গ্রেফতারকৃত শান্ত ঘোষ এ তথ্য জানিয়েছে পুলিশকে। শ্রীমঙ্গলের লেমন গার্ডেন রিসোর্টে পর্যটক শরিফুল খুনের ঘটনায় পুলিশ উপজেলার কাকিয়াছড়া থেকে শান্ত ঘোষকে (২৪) গ্রেফতার করে। শান্ত ঘোষ কাকিয়াছড়া এলাকার কাশিনাথ ঘোষের পুত্র।
পুলিশের জিজ্ঞাসাবাদে শান্ত ঘোষ জানান- তিনি শ্রীমঙ্গল গ্র্যান্ড সুলতান টি-রিসোর্ট অ্যান্ড গলফে চাকরি করেন। খুনি রাব্বিও পূর্বে এ প্রতিষ্ঠানে চাকরি করতেন। সেই পূর্ব পরিচয়ের সুবাদে শান্তকে লেমন গার্ডেন রিসোর্টে নিয়ে আসেন রাব্বি। গত ২৬ আগষ্ট সন্ধ্যায় তারা সেখানে খাওয়া দাওয়া শেষে মদ মদ পান করেন। এসময় শরিফুল তাদেরকে মদ পানে নিষেধ করেন। এ নিয়ে কথা কাটাকাটির একপর্যায়ে অসতর্কতার কারণে হঠাৎ শরিফুলের পা লেগে মদের বোতলটি ভেঙ্গে যায়। এতে তাদের মধ্যে চরম বাগবিতণ্ডা ও উত্তেজনার একপর্যায়ে রাব্বি ও তার অপর ২ বন্ধু কাঠ দিয়ে শরিফুলের মাথায় আঘাত করলে শরিফুল নিহত হন।
৩০ আগষ্ট বুধবার শরিফুলের স্ত্রী মুন্নী বেগমের দায়েরকৃত হত্যামামলায় শান্তকে গ্রেফতার দেখিয়ে আদালতে হাজির করলে, আদালত তাকে জেলহাজতে প্রেরণ করেন। এদিকে, ২৯ আগষ্ট মঙ্গলবার এ হত্যা মামলার ৩ জন আসামিকে ধরতে শ্রীমঙ্গল থানা পুলিশের একটি দল ঢাকার গুলশান এলাকায় অভিযান চালায়। সেখান থেকে হত্যাকাণ্ডে ব্যবহৃত একটি প্রাইভেটকার উদ্ধার করলেও কোনো আসামিকে গ্রেফতার করতে পারেনি।
জানা যায়- ২৫ আগষ্ট শুক্রবার সকালে চাঁদপুর জেলার শাহারাস্তি উপজেলার খাসেরবাড়ি গ্রামের আবুল খায়েরের পুত্র মো. নুরুল আমিন রাব্বি ও শরিফুল ইসলামসহ ৪ বন্ধু শ্রমিঙ্গল উপজেলার ডলুছড়া এলাকাস্থ লেমন গার্ডেন রিসোর্টের বৃষ্টি বিলাস ভিলার ৫নং কক্ষ ভাড়া নেন। পরদিন ২৬ আগষ্ট শনিবার রাতে কক্ষের ভেতরে খুন হন শরীফুল ইসলাম (৪১)। তিনি নরসিংদী জেলার রায়পুর উপজেলার হাঁটুভাঙ্গা এলাকার কামরুজ্জামানের পুত্র এবং ১ কন্যাসন্তানের বাবা।
শরীফুলের স্ত্রী মুন্নী বেগম জানান- শরীফুল ঢাকার ভাটারা এলাকার ৪০নং ওয়ার্ডের ফাঁসেরটেক নামক স্থানে কার্টনের ব্যবসা করতেন। তার সাড়ে ৩ বছরের মেয়ের জন্মের পর মেয়ের বাবা একরাতের জন্যও কোথাও যাননি। বাবার বুকেই ঘুমিয়ে যেতো মেয়েটি। বাবা খাইয়ে না দিলে মেয়েটি কিছুই খেতে চাইত না। এতদিন পর হঠাৎ ভ্রমণে গিয়ে লাশ হয়ে ফিরতে হলো তার স্বামীকে। মেয়েটা শুধুই বাবা-বাবা করছে। কি জবাব দেবো মেয়েকে।
শ্রীমঙ্গল থানার ওসি জাহাঙ্গীর হোসেন সরদার জানান- মূল আসামিদেরকে ধরতে পুলিশী অভিযান অব্যাহত রয়েছে। দ্রুততম সময়ের মধ্যেই আসামিদেরকে গ্রেফতার করতে সক্ষম হবেন বলে তিনি দৃঢ় আশাবাদ ব্যক্ত করেন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *