শ্রীমঙ্গল (মৌলভীবাজার) :: মৌলভীবাজার জেলার শ্রীমঙ্গল উপজেলার কালাপুরস্থ শেভরণ গ্যাস প্লান্টের চাকরি পূণর্বহালের দাবিতে সংবাদ সম্মেলন করেছেন চাকরিচ্যুত ২২ শ্রমিক। ১১ জুলাই মঙ্গলবার সকাল ১১টায় শ্রীমঙ্গল প্রেসক্লাবে অনুষ্ঠিত সংবাদ সম্মেলনে ২২ শ্রমিকের পক্ষে মো. জাকির হোসেন লিখিত বক্তব্যে বলেন- আমরা ২০০৪ সাল থেকে কোম্পানির গ্যাস প্লান্টে সততা ও নিষ্টার সাথে চাকরি করে আসছি। এ কোম্পানি ২০০৬ থেকে ২০০৮ সাল পর্যন্ত মোট ৪৫ জন শ্রমিকের মধ্যে মাত্র ১০জন শ্রমিককে স্থায়ীকরণ করেছে। ২০০৮ সাল থেকে ২০২৩ সাল পর্যন্ত আর কোনো শ্রমিককে স্থায়ীকরণ করেনি এমনকি বেতনও বৃদ্ধি করেনি। এ ব্যাপারে কোম্পানি বরাবর একাধিকবার আবেদন করা হলেও কোম্পানি আমাদের দাবি আমলে নেয়নি। দাবি আদায়ে গত ২০১৩ সালে আমরা সাধারণ শ্রমিকরা ১৫ দিনের কর্মবিরতি পালন করি। আমাদের আন্দোলনের পর কোম্পানি নতুন ঠিকাদার নিয়োগ করে ১০০ টাকা হারে বেতন বৃদ্ধি করেন। কিন্তু আমাদের মূল দাবি চাকরি স্থায়ীকরণের কোনো পদক্ষেপ নেয়া হয়নি। গত ১০ বছর ধরে চাকরি করে চাকরি স্থায়ী করণের দাবিতে আমরা ২২জন কর্মচারি আমাদের শ্রম অধিকার আদায়ের জন্য ২০২২ সালে মে মাসে ঢাকা শ্রম আদালতের দ্বারস্থ হই।
মামলা চলাকালে আদালত শেভরণ ও ঠিকাদারী প্রতিষ্টানকে এ মর্মে একটি অন্তবর্তিকালিন আদেশ দেয় যে, এ মামলা চলাকালিন সময়ে বাদীপক্ষের ২২ শ্রমিককে চাকরিচ্যুত করা যাবে না। আদালতের এমন নির্দেশ থাকলেও গত ১৩ জুন ২০২৩ সালে বাদীপক্ষের ২২ শ্রমিককেই চাকরিচ্যুত করা হয়। চাকরিচ্যুত শ্রমিকরা জানান, আমরা কেউ কেউ ১২ থেকে ১৯ বছর যাবৎ শেভরণ গ্যাস প্লান্টে চাকরি করে আসছিলাম। হঠাৎ করে কোনো কারণ ছাড়া ও বিনা নোটিশে শুধুমাত্র একটি ফোন কলের মাধ্যমে আমাদেরকে চাকরিচ্যুত করা হয়েছে। এমন অবস্থায় আমরা পরিবার পরিজন নিয়ে পড়েছি বিপাকে।
আমরা ২২ জন শ্রমিক আমাদের চাকরি পূণর্বহালের দাবি জানিয়ে স্থানীয় সংসদ সদস্য, জেলা প্রশাসক, শ্রীমঙ্গল উপজেলা প্রশাসন, উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান ও মৌলভীবাজার গ্যাস প্লান্ট কর্তৃপক্ষকে অবহিত করেছি। আমাদের দীর্ঘ কর্মজীবনে জ্বালানীখাতে কিছুটা হলেও অবদান রেখেছি। আমাদের কর্মদক্ষতা নিয়ে আমরা আবারও দেশের অর্থনীতিতে অবদান রাখতে চাই। আমরা আইন-আদালতের প্রতি সম্মান রেখে আমাদেরকে কর্মস্থলে পূণর্বহালের জন্য কর্তৃপক্ষের কাছে দাবি জানাচ্ছি।
এ ব্যাপারে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান সমতা এন্টারপ্রাইজের স্বত্ত্বাধিকারী জমশেদুর রহমান জমশেদ জানান, চাকরিচ্যুত এ শ্রমিকদেরকে দৈনিক মজুরির ভিত্তিতে কাজে নেয়া হয়েছে। তাদের কাউকে স্থায়ীভাবে কাজে নেয়া হয়নি।