শ্রীমঙ্গলে এবার আনারসের বাম্পার ফলন

শ্রীমঙ্গলে এবার আনারসের বাম্পার ফলন

মোঃ ফারুক মিয়া, শ্রীমঙ্গল (মৌলভীবাজার) :: মৌলভীবাজার জেলার শ্রীমঙ্গল উপজেলার চায়ের পরেই আনারসের খ্যাতি রয়েছে সারাদেশে। জেলার চাহিদা মিটিয়ে দেশের বিভিন্ন স্থানে সারাবছরই কমবেশি আনারস পৌছে যায়। আর, দেশজোড়া খ্যাতির সেই আনারসের এবার বাম্পার ফলন হয়েছে বলে জানিয়েছেন আনারস চাষি ও উপজেলা কৃষি বিভাগ। দেশে মূলত সিলেট, মৌলভীবাজার, টাঙ্গাইল, চট্টগ্রাম ও পার্বত্য চট্টগ্রামে ব্যাপক আকারে আনারসের চাষ হয়। শ্রীমঙ্গলে উৎপাদিত আনারস দেশখ্যাত। রসে ভরপুর সুস্বাদু শ্রীমঙ্গলের আনারসের ব্যাপক চাহিদা রয়েছে সারা দেশে।
উপজেলা কৃষি অফিস সুত্র জানায়- এখানকার পাহাড়ি উঁচু-নিচু টিলায় ষাটের দশক থেকে আনারস চাষ শুরু হয়। এখানকার উষ্ণ ও আদ্র জলবায়ু আনারস চাষের জন্য খুবই উপযোগী। উপজেলার মোহাজেরাবাদ, বিষামণি, হোসেনাবাদ, বালিশিরা, ডলুছড়া, সাতগাঁও, নন্দরানী ও মাইজদীর পাহাড়ি এলাকার প্রায় ৩১০ হেক্টর জমিতে আনারসের চাষ হয়েছে এবার। নানা প্রতিকূলতার কারণে দিন দিন আনারস চাষ কমে যাচ্ছে। আনারসের পরিবর্তে চাষিরা এখন লেবু চাষের দিকে বেশি ঝুঁকে পড়ছেন। শ্রীমঙ্গলের মাটি, আবহাওয়া ও জলবায়ু আনারস চাষের বিশেষ উপযোগী হওয়ায় এখানে উঁচুনিচু পাহাড়ি টিলায় প্রচুর আনারসের চাষ হয়। আগাম বৃষ্টি হওয়াতে এবার আনারসের ফলন খুব ভালো হয়েছে। বৃষ্টির পানি পেয়ে আনারসের ফলন ভালো হওয়াতে চাষিরা অনেক খুশি। আনারস চাষিরা অভিযোগ করে জানান- সংরক্ষণের ব্যবস্থা না থাকায় পঁচনশীল এ ফল যখন একসঙ্গে পাকতে শুরু করে, তখন নামমাত্র মূল্যে অনেক সময় আনারস বিক্রি করে দিতে হয়। এছাড়াও অনেক আনারস পঁেচ নষ্ট হয়। আনারস সংরক্ষণের জন্য শ্রীমঙ্গলে একটি হিমাগার স্থাপন জরুরী।
জমির উর্বরতা হ্রাস, সার ও চারার দাম বৃদ্ধি, শ্রমিকদের মজুরি বৃদ্ধি সব মিলিয়ে আনারসের উৎপাদন ব্যয় বৃদ্ধি পেয়েছে অন্যাান্য বছরের তুলনায় বেশি। তবুও শ্রীমঙ্গলের ঐতিহ্যবাহী আনারসের আবাদ ধরে রাখার চেষ্টা করছেন চাষিরা।
উপজেলা কৃষি সম্প্রসারন কর্মকর্তা উজ্জল সূত্রধর জানান- শ্রীমঙ্গলে এবার ৩১০ হেক্টর জমিতে হানি কুইন ও জায়ান্ট কিউ এ দুই ধরনের আনারসের চাষ বেশি হয়েছে। আমরা এর উৎপাদন লক্ষমাত্রা নির্ধারন করেছি। তিনি আরো জানান- আনারসের উৎপাদন বৃদ্ধির জন্য কৃষি অফিস থেকে চাষিদেরকে বিভিন্ন ধরনের সহযোগীতা ও প্রশিক্ষণ দেয়া হয়েছে। এছাড়াও অনেক কৃষক আমাদের কাছে অভিযোগ করেছেন, আনারস পঁেচ নষ্ট হয়ে তারা ক্ষতিগ্রস্থ হচ্ছেন। আনারস সংরক্ষণের জন্য শ্রীমঙ্গলে একটি হিমাগার স্থাপন জরুরী। আমরা কৃষকদেরকে বলেছি, আনারস সংরক্ষণের জন্য শ্রীমঙ্গলে একটি হিমাগার স্থাপনের প্রয়োজনীয়তা জানিয়ে উপজেলা কৃষি অধিদপ্তর থেকে মন্ত্রনালয়ে চিঠি পাঠানো হয়েছে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *