মোঃ ফারুক মিয়া, শ্রীমঙ্গল (মৌলভীবাজার) :: মেয়াদোত্তীর্ণ বাংলাদেশ চা শ্রমিক ইউনিয়ন কমিটির নির্বাচনের দাবিতে সংবাদ সম্মেলন করেছে সাধারণ চা শ্রমিকরা। শ্রীমঙ্গল প্রেসক্লাবে ১৫ ফেব্রুয়ারি বুধবার সকাল ১১টায় অনুষ্ঠিত সংবাদ সম্মেলনে সাধারণ চা শ্রমিকদের পক্ষে লিখিত বক্তব্যে চা শ্রমিক নেতা মোঃ সেলিম আহমেদ বলেন- ইউনিয়নের বর্তমান অবৈধ কমিটি প্রায় ২৫ মাসেও মালিক পক্ষের সাথে চুক্তি ও ইউনিয়নের নির্বাচনে ব্যর্থ হয়েছে। সাধারণ চা শ্রমিকদের তোপে পড়ে তারা নিজেদের দায় সরকারের উপর চাপানোর চেষ্টা চালাচ্ছে। চা শ্রমিকদের সদস্য চাঁদার হিসাব নিকাশ, মজুরীর ১৯ মাসের বকেয়া পাওনা, নতুন চুক্তি, ইউনিয়নের নির্বাচন ও অন্যান্য বিষয়ে সুস্পষ্ট ব্যাখ্যা চেয়ে সাধারন চা শ্রমিকরা মেয়াদোত্তীর্ণ ও অবৈধ কমিটির সভাপতি মাখন লাল কর্মকারের নিকট গত ৮ জানুয়ারি আল্টিমেটামপত্র প্রদান করেন। এর প্রেক্ষিতে গত ১৪ জানুয়ারি কমিটির পক্ষে নিপেন পাল স্বাক্ষরিত পত্রে আল্টিমেটামপত্রের সুস্পষ্ট জবাব না দিয়ে প্রকারান্তরে ব্যর্থতার দায় সরকারের সংশ্লিষ্ট দপ্তরের উপর চাপিয়েছেন।
তাদের এ জবাব সাধারণ চা শ্রমিক নেতারা প্রত্যাখান করেন। লিখিত বক্তব্যে তিনি আরও বলেন- গত জানুয়ারিতে গঠনতন্ত্রের একটি সংশোধিত কপি আমাদের হস্তগত হয়েছে। অবৈধ কমিটির কেবলমাত্র দুইজন তথা মাখন লাল কর্মকার ও নিপেন পাল কর্তৃক সংশোধিত ও স্বাক্ষরিত গঠনতন্ত্রটি শ্রম অধিদপ্তর কর্তৃক ৮ জানুয়ারি ২০২৩ অনুমোদিত আছে। গঠনতন্ত্রে শ্রমিকদের নিকট থেকে কিভাবে আরও অর্থ আত্মসাৎ করা যায় তা উল্লেখ আছে এবং শ্রমিকদের ইউনিয়ন পরিচালনায় শ্রম অধিদপ্তরের কর্মকর্তাদের সংশ্লিষ্টতার কথাও উল্লেখ আছে। লক্ষাধিক চা শ্রমিকের ট্রেড ইউনিয়ন পরিচালনায় শ্রম অধিদপ্তরের এহেন ভূমিকায় শ্রম অধিদপ্তরের নিরপেক্ষতা নিয়ে প্রশ্ন দেখা দিয়েছে। শ্রম অধিদপ্তর ও মেয়াদোত্তীর্ণ অবৈধ কমিটির মাঝে এতো পেয়ার মহব্বতের কারণ কি, সাধারণ চা শ্রমিকরা তা জানতে চায়। গত ৮ ফেব্রুয়ারি ইউনিয়নের সদস্য চাঁদার হিসাব নিকাশ বিভিন্ন স্তরের নির্বাচন, গঠনতন্ত্রের সংশোধন, শ্রমিকদের বকেয়া পাওনা ইত্যাদি বিষয়ে আমাদের মতামত সম্বলিত ৩ পাতার একটি পত্র, শ্রম অধিদপ্তর মহাপরিচালকসহ সংশ্লিষ্ট মহলে প্রেরণ করা হয়েছে।
পত্র মোতাবেক আগামী ১৯ ফেব্রুয়ারি শ্রীমঙ্গলে এক চা শ্রমিক প্রতিনিধি সমাবেশ করার কথা উল্লেখ করা হয়েছে। অনিবার্য কারণবশতঃ তা স্থগিত করে আগামী ২৬ ফেব্রুয়ারি সমাবেশটি অনুষ্ঠিত হবে। ইউনিয়নের চলমান পরিস্থিতি ও সাধারণ চা শ্রমিকদের মনের কথা ৩ পাতা সম্বলিত পত্রে উল্লেখ আছে। সংবাদ সম্মেলনে সাধারণ শ্রমিকদের পক্ষে অন্যান্যের মধ্যে বিজয় বুনার্জী, পরিমল সিং বাড়াইক, গীতা রানী কানু, রামদয়াল গোয়ালা, সুকুমার রাজভর, জগৎ তাঁতী প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।