ষ্টাফ রিপোর্টার :: মৌলভীবাজারে চীফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের উদ্যোগে জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেসি-পুলিশ কনফারেন্স অনুষ্ঠিত হয়েছে ৪ ফেব্রুয়ারি শনিবার। বিজ্ঞ চীফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মুহম্মদ আলী আহসান-এর সভাপতিত্বে আদালতের সম্মেলন কক্ষে অনুষ্ঠিত এ ম্যাজিস্ট্রেসি-পুলিশ কনফারেন্সে মৌলভীবাজার সিভিল সার্জন ডাঃ চৌধুরী জালাল উদ্দিন মুর্শেদ, অতিঃ পুলিশ সুপার সুদর্শন কুমার রায়, বিজ্ঞ অতিঃ চীফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট সরকার হাসান শাহরিয়ার, বিজ্ঞ সিনিঃ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মোহাম্মদ জগলুল হক, বেগম মুমিনুন্নিসা খানম, সাইফুর রহমান, মোহাম্মদ দাউদ হসান ও বিজ্ঞ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট এম. মিজবাহ উর রহমান, জেলা আইনজীবী সমিতির সভাপতি এএসএম আজাদুর রহমান, সাধারণ সম্পাদক মোঃ বদরুল হোসেন ইশবা, পিপি রাধাপদ দেব সজল, মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তর উপ-পরিচালক, বিজিবি শ্রীমঙ্গল ক্যাম্প সহকারী পরিচালক, জেল সুপার, পরিবেশ অধিদপ্তর পরিদর্শক, কোর্ট পুলিশ পরিদর্শক, পিবিআই ও সিআইডি ইন্সপেক্টর, ট্রাফিক ইন্সপেক্টর এবং জেলার বিভিন্ন থানা ও গোয়েন্দা শাখার ওসিগণ উপস্থিত ছিলেন। কনফারেন্সের শুরুতে ১৯৫২’র মহান ভাষা আন্দোলনে আত্মত্যাগকারী শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জ্ঞাপন করে তাদের বিদেহী আত্মার মাগফেরাত ও শান্তি কামনা করা হয়। তৎপর স্বাগত বক্তব্যে বিজ্ঞ অতিঃ চীফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট সরকার হাসান শাহরিয়ার উপস্থিত সকলকে ধন্যবাদ জ্ঞাপনক্রমে চীফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের মামলার ও বিভিন্ন থানার মূলতবী পরোয়ানার বিবরণী এবং কনফারেন্সের আলোচ্য সূচী উপস্থাপন করেন।
পিপি রাধাপদ দেব সজল তাঁর বক্তব্যে আদালতে প্রসিকিউশন পক্ষে নিয়োজিত সকল কৌঁসুলিকে সাক্ষ্য গ্রহণে সহায়ক হিসেবে আরও কার্যকরী ভূমিকা পালনের আহবান জানান এবং আদালতে উপস্থাপিত সকল সাক্ষীর সাক্ষ্য গ্রহণ করার জন্য আদালতের বিজ্ঞ বিচারকদের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন।
জেলা আইনজীবী সমিতির সাধারণ সম্পাদক মোঃ বদরুল হোসেন ইকবাল তাঁর বক্তব্যে আদালতে আগত সাক্ষী, বিচারপ্রার্থী জনগণ ও আইনজীবীগণের নিরাপত্তা বিধানসহ আদালত প্রাঙ্গণের সার্বিক নিরাপত্তা জোরদারে সংশ্লিষ্ট সকলের দৃষ্টি আকর্ষণ করেন।
থানার ওসিগণ যথাসময়ে ও দ্রুততার সাথে জখমীদের চিকিৎসা সংক্রান্ত মেডিকেল সার্টিফিকেট সরবরাহ করার জন্য সিভিল সার্জনসহ স্বাস্থ্য বিভাগের প্রতি ধন্যবাদ জ্ঞাপন করেন এবং মূলতবীকৃত কিছুসংখ্যক হত্যা ও অপমৃত্যু মামলার ময়নাতদন্ত প্রতিবেদন দ্রুততার সাথে প্রদানের জন্য মৌলভীবাজার ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতাল তত্ত্বাবধায়ক এর দৃষ্টি আকর্ষণ করেন। অতিঃ পুলিশ সুপার সুদর্শন কুমার রায় তাঁর বক্তব্যে মামলার তদন্তকার্যসহ পুলিশের সার্বিক কাজে সু-পরামর্শ ও সহযোগিতা করায় জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেসির বিচারকগণের প্রতি ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা জ্ঞাপন করেন এবং কনফারেন্সে উত্থাপিত থানা সংশ্লিষ্ট সমস্যা দ্রুত সমাধানে কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণ করবেন বলে আশ্বস্থ করেন। বিজ্ঞ চীফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মুহম্মদ আলী আহসান পুলিশ বিভাগ, স্বাস্থ্য বিভাগ, জেলা আইনজীবী সমিতিসহ সংশ্লিষ্ট অন্যান্য বিভাগের ইতিবাচক পদক্ষেপ গ্রহণের জন্য ধন্যবাদ জ্ঞাপন করেন এবং জেলার বিভিন্ন থানায় তদন্তাধীন থাকা মামলার তদন্তকার্য দ্রুততা ও দক্ষতার সাথে আইনের নির্ধারিত সময়ের মধ্যে সম্পন্ন করে আদালতে প্রতিবেদন প্রেরণ, যথাসময়ে মামলার সাক্ষী উপস্থাপন নিশ্চিত করতঃ তাদের নিরাপত্তা বিধান, গ্রেফতারের পর আইনের নির্ধারিত সময়ের মধ্যে অভিযুক্ত ব্যক্তিকে আদালতে সোপর্দ করার, পরোয়ানা জারির ক্ষেত্রে আরও তৎপর হওয়ার, নিষ্পত্তির নিমিত্তে পি.আর মূলে জব্দ থানা মালখানায় থাকা আলামতের তালিকা তৈরি করে আদালতে প্রেরণ, বহন অযোগ্য ও পচনশীল আলামত নমুনা সংরক্ষণ করে ধ্বংসের নিমিত্তে আবেদন প্রেরণ এবং মৌলভীবাজার চীফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে বিচারাধীন মামলাসমূহের সুষ্ঠু বিচার প্রক্রিয়া দ্রুত সম্পন্ন করার ক্ষেত্রে কার্যকর ভূমিকা পালনের জন্য বিচারক ও থানার ওসিসহ সংশ্লিষ্ট সকলকে বিভিন্ন ধরনের দিক নির্দেশনা দেন। বিভিন্ন থানার ওসিসহ অন্যান্য উপস্থিতি কর্র্তৃক উত্থাপিত বিভিন্ন সমস্যার আইনি সমাধান, প্রশ্নোত্তর প্রদান এবং পরবর্তী কর্মপন্থা নির্ধারণ করত: সমাপনী বক্তব্যে বিজ্ঞ চীফ জুডিসিয়াল ম্যাজিষ্ট্রেট মুহম্মদ আলী আহসান বলেন- ফৌজদারী বিচার ব্যবস্থায় বিচার প্রশাসন, নির্বাহী প্রশাসন, পুলিশ প্রশাসনসহ সংশ্লিষ্ট সকল বিভাগ একে অপরের পরিপূরক। মানুষের শেষ আশ্রয়স্থল বিচার বিভাগের প্রতি জনগণের আস্থা বৃদ্ধি ও ন্যায় বিচার নিশ্চিত করার লক্ষ্যে আন্তরিকতা ও সৌহার্দপূর্ণ পরিবেশে সংশ্লিষ্ট সকল বিভাগকে একযোগে ব্যক্তিস্বার্থের উর্ধ্বে উঠে বিচার প্রার্থী মানুষের কল্যাণে নিজ নিজ দায়িত্ব ও কর্তব্য সঠিকভাবে সম্পন্ন করতে হবে। এক্ষেত্রে কারও অবহেলা কাম্য নয় উল্লেখ করে বিজ্ঞ চীফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মুহম্মদ আলী আহসান সামনের দিনগুলোতে সংশ্লিষ্ট বিভাগগুলোর পারষ্পরিক সমন্বয়ের মাধ্যমে ফৌজদারী বিচার ব্যবস্থায় আরো গতিশীলতা আসবে মর্মে আশাবাদ ব্যক্ত, আগত সকলকে ধন্যবাদ জ্ঞাপন ও কনফারেন্সের সমাপ্তি ঘোষণা করেন।