জৈন্তাপুরে খসিয়াদের ধর্মীয় উৎসব ‘হকতই’ পালিত

জৈন্তাপুরে খসিয়াদের ধর্মীয় উৎসব ‘হকতই’ পালিত

সুরমার ঢেউ :: সিলেট জেলার জৈন্তাপুর উপজেলার নিজপাট ইউনিয়নের খাসিয়াহাটিতে খাসিয়া সেবা সংঘের উদ্যোগে পালিত হয়েছে হকতই উৎসব। সমতল অঞ্চলে বসবাসরত ক্ষুদ্র-নৃ-গোষ্ঠী খাসিয়া সম্প্রদায়ের নিজস্ব সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান, আলোচনা সভা, র‌্যাফেল ড্র এবং পুরস্কার বিতরণের মাধ্যমে উদযাপিত হয় আদিবাসী সম্প্রদায়ের প্রধান ধর্মীয় উৎসব হকতই। দিনব্যাপী অনুষ্ঠিত উৎসবটি উদ্বোধন করেন বৃহত্তর জৈন্তিয়া আদিবাসী কল্যাণ সংস্থার চেয়ারম্যান মিঃ হেনরী লামিন। এ উপলক্ষ্যে ২৮ জানুয়ারী শনিবার স্থানীয় খাসিয়া সেবা সংঘের কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত আলোচনা সভায় সভাপতিত্ব করেন খাসিয়া সেবা সংঘের সভাপতি বিশ্বজিৎ সুম। খাসিয়া সেবা সংঘের সাধারণ সম্পাদক নিউয়েল নাইয়াং এর উপস্থাপনায় দিনব্যাপী বিভিন্ন অনুষ্ঠানে জৈন্তাপুর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ও উপজেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি কামাল আহমদ, সিলেট বিভাগীয় প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের পরিচালক ড. মোঃ জাকির হোসেন, উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) রিপামনি দেবী, জেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ড. মোঃ রুস্তম আলী, জৈন্তাপুর উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডাঃ আব্দুল্লাহ আল মাসুদ, উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক আব্দুল হাফিজ, ইউপি চেয়ারম্যান ফখরুল ইসলাম, জৈন্তাপুর প্রেসক্লাবের সাবেক সহ-সভাপতি আব্দুল হালিম, সাধারণ সম্পাদক গোলাম সরওয়ার বেলাল, নকশিয়া খাসিয়া পুঞ্জির হেডম্যান ওয়েলকাম রম্বাই, মোকামপুঞ্জি খাসিয়া পল্লীর হেডম্যান বানন লামিন, সংস্কৃতিক কর্মী শ্যামল চন্দ্র ঘোষ, আদীবাসী নেতা অনুপ রম্বাই, সরঞ্জিত রম্বাই, সজল সার্থী ক্লেমেন্ট চিশিম বর্ষা, এন্ড্রু স্মীথ খংলা, মিল্টন, সুবাস লমরং, নিপম সুমের, পংকজ দেব লিয়ন প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
বাংলাদেশে বসবাসরত জৈন্তিয়া বা সিন্টেংদের প্রধান ধর্মীয় ও সামাজিক উৎসব হচ্ছে ’হকতই’। প্রতিবছর অত্যন্ত জাঁকজমকের সাথে উৎসবটি পালন করা হয়। প্রধানত: ধর্মীয় অনুষ্ঠান হলেও এটি জৈন্তিয়াদের সামাজিক জীবনকে ব্যাপকভাবে প্রভাবিত করে। প্রথাগত পদ্ধতিতে কিছু আচার-অনুষ্ঠানের মাধ্যমে প্রায়াত পূর্ব-পুরুষদের বিদেহী আত্মার প্রশান্তি কামনা এবং কর্ম ও কীর্তি স্মরণ করা হয় ’হকতই’ অনুষ্ঠানে। বাংলা মাঘ মাসের শুক্লপক্ষের সপ্তমী তিথিতে ‘হকতই’ উদযাপন করা হয়। এর দুটি দিক রয়েছে- একটি সামাজিক অন্যটি ধর্মীয়। ধর্মীয় দিকটি প্রধান হলেও এর সাথে সংস্কৃতির অন্যান্য দিকের সমন্বয় ঘটার কারণে এটি জৈন্তিয়ার খাসিয়াদের প্রধান উৎসব হিসাবে রূপ লাভ করেছে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *