রাজনগরে পানির অভাবে ৩ হাজার একরেরও বেশি জমি অনাবাদি

রাজনগরে পানির অভাবে ৩ হাজার একরেরও বেশি জমি অনাবাদি

মোঃ শাহ জালাল, রাজনগর প্রতিনিধি :: মৌলভীবাজার জেলার রাজনগর উপজেলায় পানির অভাবে ৩ হাজার একরেরও বেশি জমি অনাবাদি। জমিতে হাল চাষ করে রোপণের সময় পেরিয়ে যাচ্ছে। ধানের চারা হলুদাভ হতে শুরু করেছে বীজতলায়। চারা শক্ত হয়ে গেলে রোপণ করেও ফলন পাওয়া যাবে না বলে আশঙ্কায় কৃষকরা। পানি না পাওয়ায় উপজেলার অন্তত ৩ হাজার একর জমি অনাবাদি পড়ে রয়েছে। ফলে, হতাশায় পতি হয়েছেন উপজেলার ৩টি ইউনিয়নের কয়েকহাজার কৃষক। পানির জন্য কৃষকরা উপজেলা নির্বাহী অফিসার বরাবর স্মারকলিপিও দিয়েছেন।
জানা যায়- উপজেলার মুন্সিবাজার ইউনিয়নের সোনাটিকি, সুপ্রাকান্দি, জালাই, ছত্রিসের বন্দ, মাঝের কান্দি, আলাইর ডুগরা, জোয়ালভাঙ্গা কান্দি, বৈরাগির বন্দ, আলগরা, খলখলির বন্দ ও বুড়িঝুড়িপাড় বন্দ, পাঁচগাঁও ইউনিয়নের খুবজার, বানাইত, বাহাদুরপুর, পশ্চিমভাগ, সৈশ্যসুতার বন্দ, সদর ইউনিয়নের উত্তর ঘড়গাঁও, কর্ণিগ্রামের বন্দসহ প্রায় ৩ হাজার একর জমিতে পানি নেই। হালের ট্রাক্টর পড়ে আছে জমিতে। পানি পেলে জমি চাষ করবেন এ আশার প্রহর গুনছেন কৃষকরা ।
অপরদিকে, বীজতলায় চারাগুলোর সবুজ পাতা হলুদাভ হতে শুরু করেছে। অনন্নোপায় কেউ কেউ এসব চারা কেটে গরুকে খাওয়াচ্ছেন। জমির সঙ্গে যে সংযোগ নালা রয়েছে তা থেকে অন্তত ১-২ ফুট নিচ দিয়ে শাখাখালের পানি প্রবাহিত হচ্ছে। অথচ এ পানি নালা দিয়ে জমিতে প্রবেশ করার কথা। খালের পাশে যাদের জমি তারা সেচ দিয়ে পানি তুলে ১-২ বিঘা জমি চাষ করছেন। পুরো মাঠ পড়ে আছে শূন্য। কয়েকজন কৃষক গুইর বন্দ ও ইলামের কান্দির বিলে চারা রোপন করেছেন। পানির অভাবে সেখানেও মাটি ফেটে চৌচির।
চারা শুকোতে শুরু করেছে কোথাও কোথাও। পানি না পেলে পুরোটাই ক্ষতিগ্রস্ত হয়ে যাবে বলে দাবি কৃষকদের। উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মো. রেজাউল করিম বলেন- ৪৫ দিনের মধ্যে চারা রোপণ না করতে পারলে কৃষকরা ক্ষতিগ্রস্ত হবেন। পানি ছাড়ার বিষয়টি আসলে পাউবো’র নিয়ন্ত্রণে। আমরা কৃষকের সমস্যার কথা তাদেরকে জানিয়েছি। তারা বিষয়টি সমাধান করবেন বলে জানিয়েছেন। পাউবো মৌলভীবাজার’র নির্বাহী প্রকৌশলী মো. জাবেদ ইকবাল বলেন- আমাদের পর্যাপ্ত পানি রয়েছে। স্লুইস গেইটগুলো খুলে দিয়ে আসার পর উজানের কৃষকরা শুধু নিজেদের স্বার্থ চিন্তা করে আবার সেগুলো বন্ধ করে দেয়। ফলে, ভাটির দিকে পানি কম যায়। আমার জনবল সংকট রয়েছে। প্রত্যেক গেটে একজন করে রাখা সম্ভব নয়। কৃষকরা সহযোগিতা না করলে ৫-৬ জন মানুষ দিয়ে প্রায় ৩শ’ স্লুইস গেটের তদারকি অসম্ভব। আশা করছি সমস্যাটি দ্রুতই সমাধান হয়ে যাবে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *