তৃতীয় মেয়াদ শেষেও কুলাউড়া-শাহবাজপুর রেলপথ পুনর্বাসন প্রকল্পকাজ ৭৫ শতাংশ বাকী

তৃতীয় মেয়াদ শেষেও কুলাউড়া-শাহবাজপুর রেলপথ পুনর্বাসন প্রকল্পকাজ ৭৫ শতাংশ বাকী

সুরমার ঢেউ :: তৃতীয় মেয়াদ শেষেও মৌলভীবাজার জেলার কুলাউড়া-শাহবাজপুর রেলপথ পুনর্বাসন প্রকল্পকাজ ৭৫ শতাংশ বাকী। তৃতীয় দফায় গত ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত প্রকল্পের মেয়াদ বৃদ্ধি করা হলেও, এখন পর্যন্ত ৭৫ শতাংশ কাজই বাকী রয়েছে। এমতাবস্থার মাঝেই সংশ্লিষ্ট ভারতীয় ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান চতুর্থ দফায় মেয়াদ বৃদ্ধির জন্য আবেদন করেছে। ফলে, প্রকল্পের কাজ শেষ হওয়া নিয়ে হতাশা প্রকাশ করেছেন রেলওয়ের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা। রেলওয়ের যুগ্ম মহাপরিচালক (প্রকৌশল) মামুনুল ইসলামের নেতৃত্বে ৪ সদস্যের একটি প্রতিনিধিদল প্রকল্পকাজের অগ্রগতি বিষয়ে জানতে সরেজমিন পরিদর্শন করেন। মামুনুল ইসলাম বলেন- ‘ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নির্দেশনায় কুলাউড়া-শাহবাজপুর রেলপথ পুনর্বাসন প্রকল্পের অগ্রগতি বিষয়ে জানতে সরেজমিন পরিদর্শন করেছি। কাজের অগ্রগতি সন্তোষজনক নয়। এ বিষয়ে কর্তৃপক্ষের কাছে প্রতিবেদন জমা দেয়া হবে। সরকারের উচ্চপর্যায়ে পরবর্তী সিদ্ধান্ত হবে’।
প্রকল্প কর্তৃপক্ষ জানায়- কুলাউড়া জংশন রেলস্টেশন থেকে শাহবাজপুর স্টেশনের জিরো পয়েন্ট পর্যন্ত ৫২ দশমিক ৫৪ কিলোমিটার রেলপথ ডুয়েল গেজের হবে। এটি ভারতের আসাম রাজ্যের সঙ্গে যুক্ত। এ রেলপথে কুলাউড়া, জুড়ী, দক্ষিণ ভাগ, কাঁঠালতলী, বড়লেখা, মুড়াউল ও শাহবাজপুর এ ৬টি স্টেশন রয়েছে। রেলপথটিতে ৫৯টি সেতু-কালভার্ট নির্মাণ করা হবে। ‘কালিন্দি রেল নির্মাণ’ নামীয় ভারতের দিল্লির একটি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান দরপত্রের মাধ্যমে কাজটি পায়। ২০১৮ সালের ৫ মে তারা কাজ শুরু করে। ২ বছরের মধ্যে কাজ সম্পন্নের কথা থাকলেও, পরবর্তী সময়ে ৩ দফায় সময় বৃদ্ধি করা হয়। এখন পর্যন্ত কাজে হয়েছে মাত্র ২৫ দশমিক ৪২ শতাংশ। সম্প্রতি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান চতুর্থ দফায় এ বছরের ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত সময় বৃদ্ধির জন্য আবেদন করেছে। এর পরিপ্রেক্ষিতে গত ডিসেম্বরে প্রতিনিধিদল প্রকল্প এলাকা পরিদর্শন করেন।
প্রকল্প সূত্র জানায়- রেলপথটি ট্রেন চলাচলে অনুপযোগী হয়ে পড়লে ২০০২ সালের ৭ জুলাই কর্তৃপক্ষ এ পথে ট্রেন চলাচল বন্ধ করে দেয়। এতে কুলাউড়া, জুড়ী ও বড়লেখার লোকজন দুর্ভোগে পড়েন। আবার ট্রেন চলাচল চালুর দাবিতে বিভিন্ন রাজনৈতিক ও সামাজিক সংগঠন আন্দোলন কর্মসূচি পালন করে। এর পরিপ্রেক্ষিতে ২০১৫ সালের ২৬ মে একনেকের সভায় ৬৭৮ কোটি টাকা ব্যয়ে এ রেলপথ পুনর্বাসন প্রকল্প অনুমোদন করা হয়। এর মধ্যে ১২২ কোটি টাকা সরকারের কাছ থেকে এবং ৫৫৬ কোটি টাকা ভারতের এক্সিম ব্যাংক থেকে ঋণ হিসেবে পাওয়ার কথা। ওই বছরের (২০১৫) ৬ জুন ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির বাংলাদেশ সফরকালে প্রকল্পটির উদ্বোধন করা হয়। একই বছরের ১০ সেপ্টেম্বর দুই দেশের প্রধানমন্ত্রী ভিডিও সম্মেলনের মাধ্যমে প্রকল্পকাজের উদ্বোধন করেন।
ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান ‘কালিন্দি রেল নির্মাণ’র ব্যবস্থাপক অনিন্দ্য স্যান্যাল বলেন- করোনা, মালামালের মূল্যবৃদ্ধি ও বিভিন্ন স্থাপনার নকশা অনুমোদনে রেল বিভাগের দীর্ঘসূত্রিতাসহ নানা সমস্যার কারণে এ অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে। রেলওয়ের অতিরিক্ত মহাপরিচালক (অবকাঠামো) মো. শহীদুল ইসলাম বলেন- প্রতিনিধিদলের প্রতিবেদন পাওয়ার পর সময় বৃদ্ধি করা হবে কি না, সে বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেয়া হবে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *