ইতিহাস ঐতিহ্য ও প্রাকৃতিক সৌন্দর্য্যের দেশ পর্তুগালে ইসলাম

ইতিহাস ঐতিহ্য ও প্রাকৃতিক সৌন্দর্য্যের দেশ পর্তুগালে ইসলাম

সুরমার ঢেউ সংবাদ :: ইতিহাস ঐতিহ্য ও প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের দেশ পর্তুগাল। সাগর, পাহাড় ও বন-বনানীর দৃশ্য দেখলে যে কোন মানুষই এদেশের প্রেমে পড়ে যাবে। ইউরোপের অন্যান্য দেশের তুলনায় এদেশের আবহাওয়া ও মানুষ অনেক ভাল। মুসলমানদের আগমন হয়েছিল ৮ম শতাব্দীতে। প্রায় ১৪শ শতাব্দী পর্যন্ত আন্দোলসিয়ার আওতাধীন ছিল পর্তুগাল। মুসলিম আমলের অনেক স্মৃতি ইচ্ছা করলেও তারা মুছে দিতে পারেনি।
শতশত বছর পরেও মুসলিম আমলের সাংস্কৃতি ও কর্ম নিয়ে বছরে একবার মেলার আয়োজন করে মারতোলা শহরে। সে মেলায় উচ্চ আওয়াজে আযান প্রচার করা হয়। শহর বন্দর ও হাইওয়ে গুলোর অনেক নামই মুসলমানদের রেখে যাওয়া নাম। ১ কোটি ১০ লাখ মানুষের দেশে মুসলমান মাত্র ০.৬ %। সংখ্যায় কম হলেও মুসলমান এক্টিভিটি চোখে পড়ার মতো। আফ্রিকান, মুজাম্বিক, গিনীভিসাও, কাবুবেরদ, পাকিস্তান ও বাংলাদেশের মুসলমানরা দ্বীন সংরক্ষণ ও দাওয়াহ’র কাজে যথেষ্ট ভাল ভূমিকা পালন করে যাচ্ছে।
মুলতঃ মুসলিম কমিউনিটি নেতৃত্বে মুজাম্বিকদের অবস্থান অনেক ভাল। বাংলাদেশী মুসলমানদের বসবাস শুরু হয়েছে ১৯৯০ সাল থেকে, তিন দশকের বেশী সময় ধরে বাংলাদেশী মুসলমানরা নিজেদের ব্যাবসা বাণিজ্যের পাশাপাশি প্রতিষ্ঠা করেছে মক্তব ও মসজিদ। দ্বীন প্রচারের কাজে এদেশে বসবাসকারী বাংলাদেশীদের উদ্বুদ্ধ করতে বহু শায়েখ ও দাঈ বারবার সফর করেছেন। এখানে বসবাসকারী বাংলাদেশীদের দেশীয় রাজনৈতিক বা আদর্শিক পার্থক্য থাকলেও ধর্মীয় বিষয় সবাই এক ও অভিন্ন মত পোষণ করে। যার কারণে বর্তমান পর্তুগালে একটি সুন্দর পরিবেশ বিরাজ করছে। মুসলিম কমিউনিটির প্রচেষ্টায় এখানে ইসলামী ব্যাংকিং ইতোমধ্যে চালু হয়েছে। বেশ কিছু শহরে খোলা মাঠে ঈদ জামায়েতের অনুমতি নিয়ে নামাজ আদায় করা হয়।
পুরো রমজান মাসে একটা উৎসবমুখর পরিবেশ থাকে। সৌহার্দ্য সম্প্রীতি পারষ্পরিক শ্রদ্ধা ও ভালবাসায় এখানকার মানুষগুলো সবসময় মুগ্ধ থাকে। ছাত্রছাত্রীদের নৈতিক শিক্ষার জন্য মসজিদ ভিত্তিক মক্তবের পাশাপাশি প্রতিষ্ঠিত হয়েছে ইন্টারন্যাশনাল ইসলামিক স্কুল। সবমিলিয়ে একজন মুসলিম ইসলাম চর্চা করতে চাইলে বিনা বাধায় চর্চা করতে পারে। আর, এ সকল পরিবেশ তৈরী করার জন্য যারা নিরলসভাবে কাজ করেছেন তাদের মধ্যে তাবলীগ জামায়াত, মুজাম্বিক মুসলিম কমিউনিটি, কমিউনিদাদ রিলেজিওসা কলতুরাল ইসলামিকা, মুসলিম কমিউনিদাদ লিসবোয়া, বাংলাদেশ ইসলামিক সেন্টার বায়তুল মোকাররম মাসজিদ, মার্তিম মনিজ জামে মাসজিদ, মুসলিম কমিউনিটি পাকিস্তান ও কাবুবেরদ।
অমুসলিম দেশ হলেও এটি মুসলমানদের জন্য সম্ভাবনাময় দেশ। এ সম্ভাবনা কাজে লাগানোর জন্য প্রয়োজন খুলুসিয়াত সম্পন্ন দাঈ, যারা দ্বীনকে জীবনের উদ্দেশ্য হিসাবে গ্রহন করবে। পর্তুগাল সরকারের আইনে ধর্মীয় বিষয়ে তেমন কোন বিধিনিষেধ না থাকায় সরকারি আইনের প্রতি সম্মান দেখিয়ে অনুমতি নিয়ে যেকোনো প্রতিষ্ঠান ও কর্মসূচী বাস্তবায়নে প্রয়োজন একদল স্বপ্নবাজ লোকের- যারা পৃথিবীর বুকে পর্তুগালকে উপস্থাপন করবে শান্তির দেশ হিসাবে, আর ইসলামকে উপস্থাপন করবে পরিপূর্ণ জীবন বিধান হিসাবে। এমন একদল মানুষের প্রয়োজন যাদের কাছে ইউরোপের চাকচিক্যময় জীবন যাপনের চাইতে পরকালীন মুক্তি প্রাধান্য পাবে। যারা নিজেরা আমলে সলেহ করবে এবং অন্যদেরকে এ কাজে আহবান করবে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *