সুরমার ঢেউ সংবাদ :: ভারতের মথুরার শাহী ঈদগাহ মসজিদ সরানোর মামলায় জরিপের নির্দেশ দিয়েছে মথুরার একটি আদালত। ভারতের উত্তর প্রদেশ রাজ্যের বারানসির বিখ্যাত জ্ঞানবাপি মসজিদের মতো এবার মথুরার শাহী ঈদগাহ মসজিদেও জরিপের নির্দেশ দেয়া হয়েছে। ২৪ ডিসেম্বর শনিবার মথুরার একটি আদালত আর্কিওলজিক্যাল সার্ভে অব ইন্ডিয়াকে এ জরিপ পরিচালনার অনুমতি দিয়েছে। দেশটির কট্টর হিন্দুত্ববাদী গোষ্ঠী হিন্দু সেনার নেতা বিষ্ণু গুপ্তের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে মথুরার আদালত ওই নির্দেশ দিয়েছে। হিন্দু সেনার দাবি, শ্রীকৃষ্ণের জন্মভূমির ওপর নির্মাণ করা হয়েছে মথুরার শাহী ইদগাহ মসজিদ। হিন্দু সেনার আবেদনের বিষয়ে শুনানি শেষে এ মসজিদে জরিপের কাজ শুরুর নির্দেশ দিয়েছে আদালত। জরিপের ফল ২০ জানুয়ারির পর আদালতের কাছে উপস্থাপন করতে বলা হয়েছে।
হিন্দু সেনা প্রধান বিষ্ণু গুপ্ত বলেছেন- বারানসির জ্ঞানবাপি মসজিদের মতো মথুরার শাহী ইদগাহ মসজিদেও জরিপ চালানো হবে। তার দাবি, শ্রীকৃষ্ণের জন্মভূমির ওপর ওই মসজিদটি তৈরি করা হয়েছে। মসজিদটি সরিয়ে ফেলার দাবিতে একাধিক মামলা করেছে দেশটির হিন্দুত্ববাদী আরও কয়েকটি সংগঠন। শাহী ইদগাহ মসজিদের ক্ষেত্রে আদালতে যুক্তি দেয়া হয়েছে, মুঘল সম্রাট আওরঙ্গজেবের নির্দেশে কাটরা কেশব দেব মন্দির চত্বরে ওই মসজিদটি নির্মাণ করা হয় ১৬৬৯-৭০ সালে। আবেদনকারী বিষ্ণু গুপ্তর আইজীবী শৈলেশ দুবে বলেন- হিন্দু সেনার জাতীয় সভাপতি বিষ্ণু গুপ্ত আদালতে ওই দাবি করেছেন। তিনি শ্রীকৃষ্ণ জন্মস্থান সেবাসংঘ ও শাহী ইদগাহর মধ্যে ১৯৬৮ সালে যে চুক্তি হয়েছিল তা বাতিলেরও দাবি জানিয়েছেন। একই সঙ্গে এ চুক্তিকে বেআইনি বলে অভিহিত করেছেন তিনি। এর আগে মথুরার শাহী ইদগাহ মসজিদ ঘিরে দায়ের করা একটি আবেদন বাতিল করে দিয়েছিল আদালত। সেসময় আদালত বলেছিল, ১৯৯১ সালের ধর্মীয় স্থান আইন অনুযায়ী ওই মামলা নেয়া যায়না। কিন্তু, আবেদনকারী দাবি করেন- শ্রীকৃষ্ণের আসল জন্মস্থানে উপাসনা করার অধিকার তাদের রয়েছে। দেশটির ডানপন্থী হিন্দুত্ববাদী সংগঠন হিন্দু সেনার এমন দাবির পর মামলাটি আমলে নেন বিচারক।
চলতি বছরের মে মাসে বারানসিতে হিন্দুত্ববাদীরা জ্ঞানবাপি মসজিদে ৩ দিনের ভিডিওগ্রাফি জরিপে মসজিদ কমপ্লেক্সের ভেতরের পুকুরে একটি শিব লিঙ্গ পাওয়া গেছে বলে দাবি করেন। ওই সময় হিন্দুত্ববাদীদের আইনজীবী বলেছিলেন- পুকুরটি মুসল্লিদের অযুর জন্য ব্যবহার করা হতো। পুকুরের পানি সরিয়ে নেয়ার পর সেখানে একটি শিব লিঙ্গ পাওয়া যায় বলে অভিযোগ করেন হিন্দুত্ববাদীরা। তবে, জ্ঞানবাপি মসজিদের জরিপের কোনও বিশদ বিবরণ এখনও প্রকাশ করা হয়নি। জরিপের পর উভয়পক্ষের দায়ের করা একাধিক আবেদনের শুনানি এখনও আদালতে চলমান রয়েছে।