রাজনগরে সৎমা ও স্বজনদের সাজানো পাগল রুহুলকে পরিবারে ঠাই দিল পুলিশ

রাজনগরে সৎমা ও স্বজনদের সাজানো পাগল রুহুলকে পরিবারে ঠাই দিল পুলিশ

মোঃ শাহ জালাল, রাজনগর প্রতিনিধি :: সৎমা ও স্বজনদের সাজানো পাগল রুহুলকে পরিবারে ঠাই দিয়েছে পুলিশ। পুলিশের স্বণোদিত এ মানবিকতাকে সাধুবাদ জানাচ্ছেন সুশীল সমাজ। পুলিশের স্বণোদিত মানবিকতার এ ঘটনাটি ঘটেছে মৌলভীবাজার জেলার রাজনগর উপজেলায়।
রুহুল মিয়া (৪০)-কে প্রায়ই রাজনগর থানার আশপাশে ঘুরে বেড়াতে দেখা যেতো। সবাই তাকে পাগল বলেই মনে মনে করতো। প্রায়ই তাকে থানার সামনে ঘুরে বেড়াতে দেখে একদিন এসআই নুর উদ্দিনকে রুহুলের খোঁজখবর নিতে নির্দেশ দেন ওসি। এরপর এসআই নুর উদ্দিন কয়েকদিনের অনুসন্ধানে রুহুল মিয়ার বিস্তারিত তথ্য ও তার বাড়ীঘর ও স্বজনদেরকে সনাক্ত করতে সক্ষম হন।
প্রাপ্ত তথ্য অনুযায়ী রুহুল মিয়া ৫নং রাজনগর সদর ইউনিয়নের মশুরিয়া গ্রামের আরব আলীর পুত্র। রুহুলের মায়ের মৃত্যু হলে বাব আরব আলী ২য় বিয়ে করেন। সেইথেকেই রুহুলের উপর চলেছে সৎ মায়ের মানসিক নির্যাতন। একপর্যায়ে তাকে পাগল বলেও প্রচার করে বাড়ী থেকে বের করে দেয়া হয়। এমতাবস্থায় রুহুল চলে যায় তার মামার বাড়ীতে। দীর্ঘদিন মামার বাড়ীতে অবস্থান করলেও সেখানকার পরিস্থিতির কারণে একপর্যায়ে সেখান থেকে পালিয়ে যান।
পুলিশ জানিয়েছে- মশুরিয়া গ্রামের লোকজনের সাথে আলাপ-আলোচনা করে রুহুলকে তার পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। রুহুলের স্বজনদের সূত্রে জানা যায়- রুহুলের এ অবস্থার পেছনে মূল কারণ সম্পত্তি এবং সৎ মা। তা স্বজনরাই সম্পত্তি হাতিয়ে নিতে কৌশলে রুহুলকে পাগল সাজিয়ে বাড়ি থেকে বের করে দেয়। আর, এর পেছনে মূল ভুমিকা সৎ মায়ের।
এদিকে পুলিশ এলাকার লোকজনসহ স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের সামনে রুহুলকে তার পরিবার গ্রহণ করে এবং তার যথাযথ চিকিৎসা করাবে মর্মে পুলিশকে আশ্বস্থ করে। রাজনগর থানার ওসি বিনয় ভূষণ রায় জানান- পুলিশের কাজই হচ্ছে মানুষের জন্য কাজ করা। এ দায়িত্ববোধ থেকেই আমি বিষয়টি নিয়ে ঊর্ধ্বতন অফিসারদের সাথে আলোচনা করে তার পরিবার খুঁজে বের করার জন্য এসআই নুর উদ্দিনকে দায়িত্ব দেই। আমরা রুহুলকে তার পরিবারের কাছে বুঝিয়ে দিয়েছি। তার যথাযথ চিকিৎসার ব্যবস্থা করার জন্য বলেছি। যে কোন প্রয়োজনে বাংলাদেশ পুলিশ তাঁর পাশে থাকবে।
এসআই নুর উদ্দিন জানান- প্রায় ৬ মাস আগে থেকে রুহুলকে রাজনগর থানা এলাকার আশপাশে ঘুরে বেড়াতে দেখে নজরে আসে আমাদের। তবে তাঁর পরিবারের খোঁজ পাওয়া যায় তার সাথে থাকা একটি জন্মনিবন্ধনের সূত্র ধরে। সেই থেকে পুলিশ চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছিল তার পরিচয় নিশ্চিতে। আমরা মানবিক দিক বিবেচনায় রুহুলকে পরিবারের কাছে হস্তান্তর করেছি। তার যথাযথ চিকিৎসার ব্যবস্থা করার জন্য বলেছি। যে কোন প্রয়োজনে বাংলাদেশ পুলিশ তাঁর পাশে থাকবে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *