সুরমার ঢেউ সংবাদ :: শমসেরনগরে সালিশের রায় মেনেও অন্যায়ভাবে ছোটভাই সাইফুরের বাসা ছাড়ছেননা বড়ভাই মধু। ফলে, আবারও দু’ভাইর মধ্যে বিরোধ চলছে জুন ২০২১ সাল থেকে। ভাইয়ের সাথে সহোদর ভাই বছরের পর বছর ধরে এহেন অন্যায় অব্যাহত রাখলেও, তাদের অন্য ভাইয়েরা এ ব্যাপারে পালণ করছেন রহস্যজনক নিরবতা। এতেকরে ধীরে হলেও পরিস্থিতি ক্রমশঃ ধাবিত হচ্ছে অনাকাঙ্খিত পরিণতির দিকে।
ঘটনার বিবরণে জানা গেছে- মৌলভীবাজার জেলার কমলগঞ্জ উপজেলার শমসেরনগর ইউনিয়নস্থিত শমসেরনগর বাজার এলাকার মৃতঃ হাজী খলিলুর রহমান ও তার স্ত্রীর ত্যাজ্যবিত্ত ভাগ বন্টনে তাদের সর্বকনিষ্ট পুত্র সাইফুর রহমানের ভাগে প্রাপ্ত বাসাটি ভাগ বন্টনের পূর্ব থেকেই সর্বজৈষ্ঠ পুত্র হাজী আব্দুল বাছিত মধু’র ভোগদখলে ছিলো। ভাগ বন্টনের পর সর্বজৈষ্ঠ পুত্র মধু উক্ত বাসা ছেড়ে তার ভাগে প্রাপ্ত অন্য বাসায় চলে যাবার কথা থাকলেও, তিনি উক্ত বাসা ছেড়ে তার ভাগে প্রাপ্ত অন্য বাসায় যাননি। এ নিয়ে দুইভাইয়ের মধ্যে সৃিষ্ট হয় চরম বিরোধ। এর প্রেক্ষিতে স্থানীয়ভাবে বার বার অনুষ্ঠিত সালিশে বড়ভাই মধু উক্ত বাসাটি ছেড়ে দেয়ার সিদ্ধান্ত হলেও, তিনি কোন সালিশের সিদ্ধান্তই কার্যকর করেননি। নিরুপায় ছোটভাই সাইফুর সর্বশেষ গত ২৭ সেপ্টেম্বর শমশেরনগর ইউপি চেয়ারম্যান বরাবর আবারও লিখিত অভিযোগ করেন। এর প্রেক্ষিতে ইউপি চেয়ারম্যান জুয়েল আহমদের নির্দেশনায় ৫নং ওয়ার্ড মেম্বার আজিজুর রহমান চৌধুরীর মধ্যস্থতায় ১৬ নভেম্বর ২০২০ সালে সালিশ অনুষ্ঠিত হয়। সর্বশেষ উক্ত সালিশেও বড়ভাই মধু ৩০ এপ্রিল ২০২১ সালের মধ্যে ছোটভাই সাইফুরের বাসাটি ছেড়ে দেয়ার মর্মে লিখিত সিদ্ধান্ত হয় এবং স্বাক্ষীসহ দুইভাইয়ের স্বাক্ষরিত সম্মতিতে বিষয়টির সুষ্ঠু নিষ্পত্তি হয়।
সালিশের মধ্যস্থতাকারী শমসেরনগর ইউপি’র ৫নং ওয়ার্ড মেম্বার আজিজুর রহমান চৌধুরী জানান- মধু তার ব্যক্তিগত সমস্যা সমাধান করে ৬ মাসের মধ্যে সাইফুরের বাসা ছেড়ে দেয়ার সিদ্ধান্তে বিষয়টি নিষ্পত্তি হয়েছে। মধু এ ব্যাপারে ইউপি চেয়ারম্যানের কাছে লিখিত মুচলেকাও দিয়েছেন। কাজেই, এরপর এ বিষয়ে আর কোন সমস্যা হবার কথা নয়।
এসময় ছোটভাই সাইফুর জানান- বড়ভাই মধু সর্বশেষ সালিশের সিদ্ধান্ত কার্যকর করার কোন আলামত পরিলক্ষিত হচ্ছেনা। উল্টো তিনি বাসায় নতুনকরে বিভিন্ন কাজকর্ম করাচ্ছেন। আমি বিষয়টি সালিশকারীগণকে অবহিত করেছি এবং ধৈর্য্য ধরে সালিশের সিদ্ধান্ত কার্যকরের অপেক্ষায় আছি।
এসময় বড়ভাই মধু জানান- আমার ভূমিও তার ভোগদখলে রয়েছে। ৬ মাসের মধ্যে এর সমাধান করে আমি বাসা ছেড়ে দেয়ার সিদ্ধান্তে বিষয়টি নিষ্পত্তি হয়েছে। নির্ধারিত সময়ের মধ্যেই আমি বাসা ছেড়ে দিবো। এখন আমাদের মধ্যে কোন সমস্যা নেই। তবুও সাইফুর আমাকে নানাভাবে হয়রানী করছে।
কিন্তু, সালিশে নির্ধারিত সময়ের পর অতিক্রান্ত হয়েছে আরও ১৯ মাস। কিন্তু, বড়ভাই মধু এখনও ছোটভাই সাইফুরের বাসাটি ছাড়ছেন না। উল্টো তিনি ছোটভাইকে নানাভাবে হয়রানী করছেন। এ ব্যাপারে বরাবরের মতোই তাদের অন্যান্য ভাইয়েরাও পালণ করছেন রহস্যজনক নিরবতা। ফলে, ধীরে হলেও পরিস্থিতি ক্রমশঃ অনাকাঙ্খিত পরিণতির দিকে ধাবিত হচ্ছে। পরিচয় গোপন রাখার শর্তে স্থানীয় একাধিক সূত্র জানিয়েছে- বিষয়টি নিয়ে যেকোন সময় অনাকাংখিত পরিণতি সংঘটনের প্রবল আশংকা রয়েছে। অসহায় ছোটভাই সাইফুর এ বিষয়ে স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গ, জনপ্রতিনিধিগণ, উপজেলা প্রশাসন ও উপজেলা পুলিশ প্রশাসনের সক্রিয় ভূমিকা কামনা করেছেন।