বিশ্বনাথে পিতার নাম বদলিয়ে মুক্তিযোদ্ধা তালিকাভূক্ত হবার প্রতিবাদে সিলেটে মানববন্ধন

বিশ্বনাথে পিতার নাম বদলিয়ে মুক্তিযোদ্ধা তালিকাভূক্ত হবার প্রতিবাদে সিলেটে মানববন্ধন

নাজমুল ইসলাম মকবুল, সিলেট :: সিলেটের বিশ্বনাথের বাওনপুর গ্রামের মোঃ তোতা মিয়া নামক এক ব্যক্তি পিতার নাম বদলে এ বছর নতুন করে মুক্তিযোদ্ধা তালিকায় অন্তর্ভূক্ত হয়েছেন বলে অভিযোগ করেছেন বিশ্বনাথ ও সিলেট সদরের বেশ কয়েকজন মুক্তিযোদ্ধা। শুধু তাই নয়, গত ২৩ অক্টোবর বাংলাদেশ মুক্তিযোদ্ধা মন্ত্রণালয় অনুমোদিত স্মার্টকার্ডও বাগিয়ে নেয়ার অভিযোগ করেছেন তারা।
এর প্রতিবাদে ও নতুন করে স্থান দেয়া তালিকা হতে ওই ব্যাক্তির নাম বাতিলের দাবীতে ৩ নভেম্বর বৃহস্পতিবার সিলেট কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারের সামনে বীর মুক্তিযোদ্ধাদের উদ্যোগে এক মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়।
বিশ্বনাথ উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডের সাবেক ডেপুটি কমান্ডার মোঃ আজিজুর রহমানের সভাপতিত্বে ও মুক্তিযোদ্ধা যুব কমান্ডের আহবায়ক মনোজ কাপালি মিন্টুর পরিচালনায় অনুষ্ঠিত এ মানববন্ধনে বক্তব্য রাখেন বীর মুক্তিযোদ্ধা এ.কে আজাদ খান, সাবেক সহকারী কমান্ডার মোঃ মরতুজ আলী, আব্দুল মন্নান, সিলেট সদর উপজেলার বীর মুক্তিযোদ্ধা নাজিম উদ্দিন, আবুল কাশেম, ছাদ উদ্দিন, আতাউর রহমান, বাংলাদেশ মুক্তিযোদ্ধা সন্তান সংসদ সিলেট বিভাগীয় সভাপতি সাজিদুর রহমান সোহেল, বীর মুক্তিযোদ্ধার সন্তান সাংবাদিক কবি নাজমুল ইসলাম মকবুল, মোঃ মোয়াজ্জেম হোসেন বিশ্বাস পারভেজ, রায়হান আহমদ, সাইফুল ইসলাম, দেলওয়ার হোসেন, আমিনুর রহমান রানু, অভিযুক্ত তোতা মিয়ার ভাতিজা এডভোকেট ফয়েজ আহমদ, বাওনপুর গ্রামের প্রবীণ মুরব্বী মোস্তফা মিয়া, সমাজসেবী মাসুক মিয়া, আব্দুল্লাহ প্রমূখ।
বক্তারা বলেন- বিশ্বনাথের খাজাঞ্চী ইউনিয়নের বাওনপুর গ্রামের মোঃ তোতা মিয়া একজন অমুক্তিযোদ্ধা। তিনি বাংলাদেশ ডাক বিভাগ সিলেট জোনে অর্থ কেলেংকারীতে ধরা পড়ে চাকুরি থেকে বরখাস্ত হন। এমন ব্যক্তির মুক্তিযোদ্ধা তালিকায় অন্তর্ভূক্ত হবার খবরে বিশ^নাথ ও সিলেট সদরের বীর মুক্তিযোদ্ধার ক্ষোভে ফেটে পড়েন। তারা বিগত ১৭ ফেব্রুয়ারী সিলেটের জেলা প্রশাসক বরাবরে লিখিত অভিযোগ দায়ের করলে বিশ্বনাথ উপজেলা নির্বাহী অফিসার বিষয়টি সরেজমিন তদন্ত করে মুক্তিযোদ্ধা মন্ত্রণালয় বরাবর গত ১৬ জুন প্রতিবেদন প্রেরণ করেন। সরেজমিন তদন্তে জালিয়াতি ধরা পড়ার পরও এ ব্যক্তি কিভাবে স্মার্ট কার্ড পায় তা আমাদের বোধগম্য নয়।
তারা আরও বলেন- একজন অমুক্তিযোদ্ধাকে মুক্তিযোদ্ধা বানাতে যারা সহযোগিতা করেছেন ও ঘুষ নিয়ে সুপারিশ করে সার্টিফিকেট পেতে সহযোগিতা করে রাষ্ট্রের সাথে বেইমানি করেছেন তাদেরকেও গ্রেফতার করে আইনের আওতায় আনতে হবে। তারা ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন- যাদের সহায়তায় বিশ্বনাথ উপজেলা পরিষদ কার্যালয়ের সামনে মুক্তিযোদ্ধাদের অফিসের জন্য সরকারী বরাদ্ধকৃত জায়গায় মার্কেট নির্মাণ করে অবৈধভাবে বিক্রয় করে ওয়াইদ আলী চক্র লাখ লাখ টাকা পকেটস্থ করেছে, তারাই এ জঘন্য কাজে সহযোগিতা করেছে। এদের গ্রেফতার না হওয়া পর্যন্ত আমাদের আন্দোলন চলবে। মানববন্ধন শেষে তারা শহীদ মিনার থেকে মৌন মিছিল সহকারে সিলেট জেলা প্রশাসক কার্যালয়ে যান এবং জেলা প্রশাসক বরাবর স্মারকলিপি প্রদান করেন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *