সুরমার ঢেউ সংবাদ :: ডিসেম্বর থেকে সুন্দরবনে ‘ক্যামেরা ট্র্যাপিং’ পদ্ধতিতে বাঘশুমারি শুরু হবে বলে জানিয়েছে বনবিভাগ। বাঘশুমারির জন্য খরচ হবে প্রায় সোয়া ৩ কোটি টাকা। ‘সুন্দরবন বাঘ সংরক্ষণ প্রকল্প’- এর মাধ্যমে এরই মধ্যে প্রায় সোয়া ৩ কোটি টাকা থোক বরাদ্দের অনুমোদন দিয়েছে পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়। অর্থ মন্ত্রণালয়ের অনুমোদনের পর ১ মাসের মধ্যে এই বরাদ্দের টাকা পাওয়া যাবে বলে আশা করছে বনবিভাগ।
ডিসেম্বরের প্রথম সপ্তাহ থেকে ‘ক্যামেরা ট্র্যাপিং’ (ক্যামেরার ফাঁদ) পদ্ধতিতে বাঘশুমারির কাজ শুরু করা হবে বলে জানিয়েছেন প্রকল্প পরিচালক ও সুন্দরবন পশ্চিম বনবিভাগের বিভাগীয় বন কর্মকর্তা আবু নাসের মোহসিন হোসেন। তিনি বলেন- পরিকল্পনা মন্ত্রণালয় সম্প্রতি ৩ কোটি ২১ লাখ টাকা থোক বরাদ্দ দেয়ার অনুমোদন দিয়েছে। এর আগে ২৩ মার্চ পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয় এ প্রকল্পের প্রশাসনিক অনুমোদন দেয়। ‘সুন্দরবন বাঘ সংরক্ষণ প্রকল্প’ এর মোট ব্যয় প্রায় ৩৬ কোটি টাকা। এ প্রকল্পের আওতায় আরও প্রায় ৩২ কোটি টাকা ব্যয়ের কয়েকটি কার্যক্রম রয়েছে। কিন্তু, সেই বরাদ্দে এখনো অনুমোদন মেলেনি। গোটা প্রকল্পটির মেয়াদ চলতি বছরের এপ্রিল থেকে ২০২৫ সালের মার্চ পর্যন্ত। প্রকল্পের শুধু বাঘশুমারি খাতে ৩ কোটি ২৬ লাখ ৯৬ হাজার টাকা ব্যয় ধরা হয়েছিল। পরিকল্পনা মন্ত্রণালয় সেই ব্যয় সামান্য কমিয়ে ৩ কোটি ২১ লাখ টাকা বরাদ্দের অনুমোদন দিয়েছে।
প্রকল্প পরিচালক মোহসিন বলেন- প্রকল্পের কাজ শুরুর জন্য ১৭ অক্টোবর বনবিভাগের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা ও বাঘ বিশেষজ্ঞদের নিয়ে প্রস্তুতি সভা করা হয়েছে। সভায় কনসালট্যান্ট নিয়োগের প্রক্রিয়া শুরু করা, ক্যামেরা সংগ্রহ, ম্যাপ তৈরি, ক্যামেরা স্থাপনের স্থান নির্ধারণের তালিকা তৈরির সিদ্ধান্ত হয়েছে।
তিনি আরও বলেন- বনের গভীরে এমন সব জায়গায় ক্যামেরা স্থাপন করা হবে, যেখান দিয়ে বাঘ চলাচলের সম্ভাবনা রয়েছে। খুঁটিতে বাঘের আনুমানিক উচ্চতায় ক্যামেরা বসানো হবে। এসব ক্যামেরার সামনে দিয়ে বাঘ বা কোনো প্রাণী চলাফেরা করলেই স্বয়ংক্রিয়ভাবে ছবি উঠবে।
এ পদ্ধতিতে ২০১৩-২০১৫ সালে সুন্দরবনের বাংলাদেশ অংশে প্রথম বাঘ জরিপ করা হয়। তখন বাঘ পাওয়া গিয়েছিল ১০৬টি। দ্বিতীয়বার ২০১৭-২০১৮ জরিপ করে বাঘের সংখ্যা পাওয়া যায় ১১৪টি। বন্যপ্রাণী ব্যবস্থাপনা ও প্রকৃতি সংরক্ষণ বিভাগের খুলনা বিভাগীয় বন কর্মকর্তা নির্মল কুমার পাল এ তথ্য জানিয়েছেন।