সুরমার ঢেউ সংবাদ :: কুমিল্লা জেলার বুড়িচং উপজেলার দক্ষিণগ্রামে অন্তত ১০ একর জমিতে ফুটে আছে পদ্মফুল। বিলজুড়ে নীল, সাদা ও হলুদ পদ্মফুলের সমারোহ। উপরে শরতের নীল আকাশ, নিচে বিলের তিন রংয়ের পদ্ম এ যেন এক স্বর্গীয় আবেশ। এ কারণে দর্শনার্থীদের আগ্রহের কেন্দ্রবিন্দুতে পরিণত হয়েছে দক্ষিণ গ্রামের এ পদ্মবিল। বিলের পদ্ম আকারে বেশ বড়। একসাথে তিন রঙের পদ্ম বাংলাদেশে এটাই প্রথম। তবে, রক্ষণাবেক্ষণের অভাবে তা এখন হুমকির মুখে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষকরা জানিয়েছেন, আমেরিকাতে এমন তিন রঙের পদ্মফুল আছে। আর আছে শুধুমাত্র বুড়িচংয়ে। পদ্ম (লোটাস নিম্ফেয়াসিয়া) গোত্রের ভাসমান জলজ উদ্ভিদ (নিলাম্বো নিউসিফেরা)। সারাবছর পানি থাকে এমন জায়গায় পদ্ম ভালো জন্মে। তবে খাল-বিল, হাওর, বাঁওড় ইত্যাদিতেও এ উদ্ভিদ জন্মে থাকে। পাতা বড় এবং গোলাকৃতি, কোনো কোনো পাতা পানিতে লেপটে থাকে, কোনোটা উঁচানো। বর্ষাকালে ফুল ফোটে। ফুল বৃহৎ এবং বহু পাপড়িযুক্ত। সাধারণত বোঁটার উপর খাড়া, ৮-১৫ সে.মি. চওড়া। ফুলের রং লাল, গোলাপি ও সাদা, সুগন্ধিযুক্ত। পদ্মের মূল, কাণ্ড, ফুলের বৃন্ত ও বীজ খাওয়া যায়। পুরনো গাছের কন্দ এবং বীজের সাহায্যে এদের বংশবিস্তার হয়। এটি ভারতের জাতীয় ফুল। পদ্ম উষ্ণমণ্ডলীয় অঞ্চলে বেশি জন্মে থাকে। ইরান, চীন, জাপান, নিউ গায়েনা, বাংলাদেশ, ভারত ও অষ্ট্রেলিয়াসহ পৃথিবীর বেশ কিছু দেশে পদ্ম জন্মে। বিশুদ্ধতা, সৌন্দর্য ও পবিত্রতার প্রতীক হওয়ায় নিচু বংশকূলে জন্মগ্রহণ করে বিখ্যাত বা উচ্চ পর্যায়ে অধিষ্ঠিত হলে তখন সেই ব্যক্তিটি ‘গোবরে পদ্মফুল’ নামক বাগধারায় পরিণত হয় এই পদ্মের কারণে।
এ বিলে পদ্মফুলের পাশাপাশি রয়েছে সাদা ও নীল শাপলা। বিলের মাঝে উড়ে বেড়ায় নানা প্রজাতির পাখি। ডাহুক, সারস, বালিহাঁস এ বিলে আসে খাবারের খোঁজে। স্থানীয় ইউপি মেম্বার মো. শাহিন জানান, এখানে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের একদল গবেষক এসেছিলেন। তারা বিলের দুর্বল পদ্মফুল দেখেছেন। প্রতিদিন বিকালে অনেক দর্শনাথী পদ্মফুল দেখতে আসেন। তবে, তাদের পদ্মবিলের বিষয়ে কিছু বিধিনিষেধ মানতে হয় বলে জানান বিলে চলাচলকারী নৌকার মাঝি সোহেল।