সুরমার ঢেউ সংবাদ :: অগ্রণী ব্যাংক লিমিটেড হবিগঞ্জ শাখায় গত ৩ জুলাই দিনের শেষে ক্যাশ মিলাতে গিয়ে দেখা যায় ১ লাখ ৩০ হাজার টাকা কম। অনুসন্ধানে ধরা পড়ে আসমা বেগম নামে জনৈক মহিলা গ্রাহক (একাউন্ট নম্বর ০২০০০১১৪১৪৭৭৪) ১ লাখ ৩০ হাজার টাকা উত্তোলন করেছেন। কিন্তু, তার একাউন্টে কোন টাকা নেই। এমতাবস্থায় শাখা ব্যবস্থাপক মাধব চন্দ্র রায় ওই মহিলা গ্রাহককে ফোন করে জিজ্ঞাসাবাদ করলে, তিনি জানান আজ তিনি কোন টাকা উত্তোলন করেননি। তিনি গত ২০২১ সালে টাকা উত্তোলন করে ভুলবশতঃ তার চেক বই ব্যাংকে ফেলে যান। এরপর তিনি আর ব্যাংকে আসেননি এবং কোন টাকাও উত্তোলন করেননি। আসমা বেগম নামীয় ওই মহিলার একাউন্ট খোলা হয়েছে ২২/১১/২০১৭ইং, সর্বশেষ ৩ লাখ ২৭ হাজার টাকা উত্তোলন করা হয়েছে ০২/৮/২০২১ইং, এর পরবর্তী স্থিতি ৪৭.৫৩ টাকা।
এরপর শাখা ব্যবস্থাপক মাধব চন্দ্র রায় ব্যাংকের সিসি টিভির ফুটেজ ও কম্পিউটার পরীক্ষা করতে থাকাবস্থায় কয়েক ব্যক্তি ব্যাংকে প্রবেশ করে তাকে উক্ত টাকার বিষয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করেন। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে শাখা ব্যবস্থাপক মাধব চন্দ্র রায় বলেন, এটা ব্যাংকের আভ্যন্তরিক বিষয়। আপনারা বিনা অনুমতিতে ব্যাংকে প্রবেশ করা ঠিক হয়নি। এসময় ওই ব্যক্তিরা নিজেদেরকে সাংবাদিক বলে পরিচয় দিলে শাখা ব্যবস্থাপক মাধব চন্দ্র রায় বলেন, এটা ব্যাংকের আভ্যন্তরিক বিষয়। আমরা বিষয়টি দেখতেছি, দয়াকরে আপনারা বাইর যান।
এসময় ওই সাংবাদিকরা ক্ষিপ্ত হয়ে ব্যাংক থেকে চলে যান এবং ব্যবস্থাপক মাধব চন্দ্র রায়ের অনুরোধে একজন সাংবাদিক ব্যাংকের ভিতরে অবস্থান করেন। ব্যবস্থাপক মাধব চন্দ্র রায় সিসি টিভি ফুটেজ পর্যালোচনা ও উপস্থিত ব্যাংকের অন্যান্যদের সাথে আলোচনা করে ব্যাংকের ক্যাশিয়ার রাসেন্দ্র ও পিয়ন তুহিনকে টাকার জন্য দায়ী করে পুলিশের ভয় দেখিয়ে তাদের কাছ থেকে টাকা উদ্ধার করেন। ব্যবস্থাপক মাধব চন্দ্র রায়ের অনুরোধে ব্যাংকের ভিতরে অবস্থানরত সাংবাদিকের সামনেই ব্যাংকের ক্যাশিয়ার রাসেন্দ্র ও পিয়ন তুহিনের কাছ থেকে উক্ত টাকা উদ্ধার করা হয়। ওই মহিলা গ্রাহকের ৯২৯৩৭৫২নং চেকে আসমা বেগমের স্থলে ‘আছিয়া বেগম’ নাম স্বাক্ষর দিয়ে ক্যাশিয়ার রাসেন্দ্র ও পিয়ন তুহিন উক্ত ১ লাখ ৩০ হাজার টাকা উত্তোলন করেছেন কোনো প্রকার পোষ্টিং ও অফিসারের স্বাাক্ষর ছাড়াই।
অথচ ৫ জুলাই দৈনিক আমার হবিগঞ্জ ও দৈনিক হবিগঞ্জ সমাচার প্রিন্ট পত্রিকাসহ এবং কয়েকটি অনলাইন নিউজপোর্টালে বস্তুনিষ্ঠতা বিবর্জিত বিভিন্ন অপবাদমূলক সংবাদ প্রকাশ হয়েছে শাখা ব্যবস্থাপক মাধব চন্দ্র রায়ের বিরুদ্ধে। এতে যারপর নাই মর্মাহত শাখা ব্যবস্থাপক মাধব চন্দ্র রায় এক প্রতিক্রিয়ায় এ প্রতিনিধিকে বলেন, আমার দীর্ঘ চাকুরী জীবনে কোন কর্মক্ষেত্রে আমার একটিও অনিয়ম-দূর্ণীতি-স্বজনপ্রীতির কোন প্রমান কেউ দিতে পারবেননা। ঘটনার সময় বিনা অনুমতিতে ব্যাংকে প্রবেশকারী সাংবাদিক পরিচয়দাতা ব্যক্তিদেরকে ‘বিনা অনুমতিতে ব্যাংকে প্রবেশ করা ঠিক হয়নি বলায় এবং তাদেরকে বাইরে চলে যাবার অনুরোধ’ করার কারণেই ক্ষিপ্ত হয়ে তারা আমাকে সামাজিকভাবে হেয় প্রতিপন্ন করার জন্য এটা করেছেন বলে মনে করছি।
এ বিষয়ে অগ্রণী ব্যাংক লিমিটেড মৌলভীবাজার আঞ্চলিক কার্যালয়ের এজিএম আজিজুর রহমান বলেন, অগ্রণী ব্যাংক লিমিটেড হবিগঞ্জ শাখা ব্যবস্থাপক মধাব চন্দ্র রায়ের বিরুদ্ধে যে সংবাদ প্রকাশ করা হয়েছে তা সঠিক নয়। ৩ জুলাইয়ের ঘটনাটির তদন্ত প্রক্রিয়াধীন রয়েছে। তদন্তে যে বা যারা দোষী প্রমানীত হবে তার বা তাদের বিরুদ্ধে বিভাগীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে।