সুরমার ঢেউ সংবাদ :: শুরু হতে যাচ্ছে কাতার বিশ্বকাপ। এর মধ্যে চুড়ান্ত হয়ে গেছে ৩২ দলের নাম। বিশ্বকাপের প্রথা ভেঙে জুন-জুলাইয়ের পরিবর্তে এবার বিশ্বকাপ মাঠে গড়াবে চলতি বছরের ২১ নভেম্বর। চলবে ১৮ ডিসেম্বর অব্দি। ঠিক ২৪ বছর আগে ১৯৯৮ ফুটবল বিশ্বকাপের ফাইনালে প্যারিসের স্তাদিও দ্য ফ্রান্সে ব্রাজিলের মুখোমুখি হয়েছিল স্বাগতিক ফ্রান্স। এবার ফুটবল পরিসংখ্যান নিয়ে কাজ করা দ্য অ্যানালিস্টের বিশ্লেষণে উঠে এসেছে, আসন্ন কাতার বিশ্বকাপের ফাইনালেও দেখা হয়ে যাবে এই দুই দলকে।
কাতার বিশ্বকাপকে কেন্দ্র করে সাম্প্রতিক মাসগুলোর পারফরম্যান্সের ওপর ভিত্তি করে গ্লোবাল র্যাঙ্কিং মডেল তৈরি করেছে অপটা স্পোর্টস। যা অপটা স্পোর্টস ডাটা নামেও পরিচিত। ব্রিটিশ এই স্পোর্টস অ্যানালিটিক্যাল কোম্পানিটির প্রণিত রাঙ্কিং মডেলে বর্তমান চ্যাম্পিয়ন ফ্রান্স এবং রেকর্ড চ্যাম্পিয়নধারী ব্রাজিল দুই দলই শীর্ষস্থান ধরে রেখেছে।
তবে সেলেসাওদের চেয়ে শিরোপার দৌড়ে কিছুটা এগিয়ে ফরাসিরা। করিম বেনজেমা-এমবাপ্পেদের টানা বিশ্বকাপ জেতার সম্ভাবনা ১৭.৯৩ শতাংশ। যা কাতারের টিকিট পাওয়া ৩২ দলের মধ্যে সর্বোচ্চ। অন্যদিকে দ্বিতীয় স্থানে থাকা ব্রাজিলের সম্ভাবনা ১৫.৭৩ শতাংশ। তবে এ ক্ষেত্রে বেশ পিছিয়ে মেসির আর্জেন্টিনা। কোপা আমেরিকার শিরোপা কিংবা ফাইনালিসিমায় শ্রেষ্ঠত্ব এবং টানা অপরাজেয় থাকার তকমা যদিও আশা দেখাচ্ছে আলবিসেলেস্তে সমর্থকদের। তবে গ্লোবাল মডেল বলছে, লিওনেল স্কালোনির শিষ্যদের বিশ্বকাপ শিরোপা খরা কাটানোর সম্ভাবনা মাত্র ৬.৪৫ শতাংশ। সেরা পাঁচ ফেবারিটের তালিকায়ও জায়গা করে নিতে পারেনি তারা।
সাম্প্রতিক পারফরম্যান্স ব্রাজিলের পক্ষে কথা বললেও কাতার বিশ্বকাপে তুলনামূলক কঠিন গ্রুপেই পড়েছে সেলেসাওরা। গ্রুপ ‘জি’-তে তাদের প্রতিপক্ষ সুইজারল্যান্ড, সার্বিয়া এবং ক্যামেরুন। নেইমার-ভিনিসিয়ুসরা যদি গ্রুপ চ্যাম্পিয়ন হয় তাহলে সুপার সিক্সটিনে তাদের প্রতিপক্ষ হবে গ্রুপ ‘এইচ’-এর দ্বিতীয় স্থানধারী দল (পর্তুগাল, উরুগুয়ে, কোরিয়া কিংবা ঘানা)। কোনো অঘটন না ঘটলে এ বাধা টপকাতে বেগ পেতে হবে না ব্রাজিলকে।
অন্যদিকে ফ্রান্স যদি তাদের গ্রুপ চ্যাম্পিয়ন হয়, তাহলে শেষ ষোলোতে বর্তমান চ্যাম্পিয়নরা খেলবে গ্রুপ-‘সি’র (আর্জেন্টিনা, মেক্সিকো, পোলান্ড এবং সৌদি আরব) দ্বিতীয় স্থান অধিকারী দলের বিপক্ষে। আর্জেন্টিনা নিজেদের গ্রুপ চ্যাম্পিয়ন হলে বরং লাভই হতে যাচ্ছে ফ্রান্সের। তুলনামূলক সহজ প্রতিপক্ষ পেতে যাচ্ছে তারা। এরপর কোয়ার্টার ফাইনালে লড়াইয়ের সম্ভাবনা রয়েছে এক হয় গ্রুপ ‘বি’-এর বিজয়ী (সম্ভবত ইংল্যান্ড) অথবা গ্রুপ ‘এ’ থেকে দ্বিতীয় স্থান অধিকার করা দলের বিপরীতে। গ্রুপটিতে চ্যাম্পিয়ন হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে নেদারল্যান্ডসের। সেক্ষেত্রে রানার্স-আপ হতে পারে সেনেগাল, ইকুয়ডের কিংবা কাতার যে কেউই। সুতরাং ফ্রান্সের সেমিফাইনালে যাওয়ার পথ সম্ভবত গ্লোবাল মডেল র্যাঙ্কিংয়ের পঞ্চম স্থান অধিকারী দল অথবা ২৩ তম র্যাঙ্কের ওপর নয় এমন একটি দলের বিপরীতে হতে পারে।
বয়স ৩৫ এর ঘরে পৌঁছানোয় আর্জেন্টিনার সমর্থকরা চাইবেন তাদের ক্যাপ্টেনের হাতেই শিরোপাটা উঠুক। হয়তো এ বিশ্বকাপই শেষ বিশ্বকাপ হতে যাচ্ছে লিওনেল মেসির জন্য। তবে আলবিসেলেস্তেরা যদি নকআউট স্টেজ টপকাতে পারে তাহলে সম্ভবত তাদের লড়তে হতে পারে টুর্নামেন্টের সেরা এগারো টিমের ফ্রান্স কিংবা ডেনমার্কের বিপক্ষে। যা তাদের শিরোপার স্বপ্নের সামনে অগ্নিপরীক্ষাই হতে পারে।
অন্যদিকে আর্জেন্টিনা ভক্তদের মতো স্বপ্ন দেখছে রোনালদোর পর্তুগাল ভক্তরাও। সিআরসেভেন সমর্থকরাও চায় পর্তুগাল বিশ্বকাপ জিতুক- যদিও তাদের সম্ভাবনা আর্জেন্টিনার চেয়েও কম। পর্তুগাল যদি গ্রুপ চ্যাম্পিয়ন হয়, তাহলে তারা লড়বে গ্রুপ ‘জি’-এর রানার্স-আপের বিপক্ষে। তবে এরপরই মুখোমুখি হতে হবে তাদের কঠিন প্রতিপক্ষ বেলজিয়াম, জার্মানি এবং স্পেনের মতো দলের।