যুক্তরাষ্ট্রে ক্যানসার চিকিৎসায় নজিরবিহীন সাফল্য

যুক্তরাষ্ট্রে ক্যানসার চিকিৎসায় নজিরবিহীন সাফল্য

সুরমার ঢেউ সংবাদ :: বিভিন্ন দেশের বিজ্ঞানীরা দীর্ঘদিন ধরে ক্যানসারের ওষুধ আবিষ্কারের জন্য গবেষণা করে আসছেন। এবার যুক্তরাষ্ট্রে একটি গবেষণায় উল্লেখযোগ্য সাফল্য পাওয়া গেছে। ক্যানসারে আক্রান্ত কয়েকজন রোগীকে প্রায় ৬ মাস ধরে ডোসটারলিমাব নামের একটি ওষুধ পরীক্ষামূলকভাবে প্রয়োগ করা হয়। ওষুধটির জেরে পরীক্ষায় অংশ নেওয়া রোগীদের প্রত্যেকেই সুস্থ হয়েছেন। বিশ্বে এবারই প্রথম কোনো ওষুধে ক্যানসারের রোগীদের পুরোপুরি সুস্থ হওয়ার খবর পাওয়া গেল। খবর নিউইয়র্ক টাইমসের।
ডোসটারলিমাব এমন একটি ওষুধ, যেটিতে গবেষণাগারে তৈরি মলিকিউলস রয়েছে। এই মলিকিউলস মানুষের শরীরে বিকল্প অ্যান্টিবডি হিসেবে কাজ করে। গবেষকেরা মার্কিন সংবাদমাধ্যম নিউইয়র্ক টাইমসকে জানান, পরীক্ষামূলকভাবে ১৮ জন ক্যানসার রোগীর ওপর ওষুধটি প্রয়োগ করা হয়েছিল। সবাই কোলন ক্যানসারে আক্রান্ত ছিলেন। ছয় মাস ধরে প্রতি তিন সপ্তাহ পরপর ওষুধটি প্রয়োগের পর তাঁদের শারীরিক পরীক্ষায় দেখা হয় সবাই ক্যানসারমুক্ত হয়েছেন। ওষুধটি প্রয়োগের পর কারও শরীরে টিউমারের অস্তিত্ব ছিল না।
এ বিষয়ে যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্ক মেমোরিয়াল স্লোয়ান ক্যাটারিং ক্যানসার সেন্টারের চিকিৎসক লুইস এ ডিয়াজ জে বলেন- ক্যানসারের চিকিৎসাসংক্রান্ত গবেষণায় এর আগে এমন অর্জন আর দেখা যায়নি। পরীক্ষামূলকভাবে ওষুধ প্রয়োগের ট্রায়ালে অংশ নেয়া সব রোগীর ক্যানসার মুক্তির ঘটনা ইতিহাসে এটাই প্রথম। তবে গবেষকেরা বলছেন, শতভাগ সাফল্য পাওয়া গেলেও এ পরীক্ষা খুবই অল্পসংখ্যক মানুষের ওপর চালানো হয়েছে। তাই আরও বড় পরিসরে ওষুধটির ক্লিনিক্যাল ট্রায়াল চালাতে হবে।
তবে ক্যানসার নিরাময় নিয়ে এ পরীক্ষা ইতিমধ্যে চিকিৎসাবিজ্ঞানে ব্যাপক সাড়া ফেলেছে। ইউনিভার্সিটি অব ক্যালিফোর্নিয়ার কোলন ক্যানসার বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক অ্যালান পি ভেনোক বলেন, ওষুধ প্রয়োগের পর প্রত্যেক রোগীর সুস্থ হয়ে ওঠার ঘটনা অভাবনীয়। এছাড়া ট্রায়ালে অংশ নেওয়া রোগীরা উল্লেখযোগ্য কোনো শারীরিক জটিলতার শিকার হননি, এটাও বড় একটি অর্জন। এ গবেষণার নিবন্ধ নিউ ইংল্যান্ড জার্নাল অব মেডিসিনে প্রকাশিত হয়েছে। স্লোয়ান ক্যাটারিং ক্যানসার সেন্টারের ক্যানসার বিশেষজ্ঞ ও গবেষণাপত্রটির সহলেখক চিকিৎসক আন্দ্রেয়া সেরেক বলেন- যখন তাঁদের ক্যানসার মুক্তির খবর জানতে পারলেন ট্রায়ালে অংশ নেয়া রোগীরা, তখন অনেকে খুশিতে কেঁদে ফেলেছিলেন। তাদের কাছে এর চেয়ে আনন্দের মুহূর্ত আর ছিলনা।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *