সুরমার ঢেউ সংবাদ :: সুনামগঞ্জে প্রধানমন্ত্রীর উপহারের নৌ-অ্যাম্বুলেন্স ডুবে আছে হাওরে। হাওর অঞ্চল বছরের কয়েক মাস থাকে শুকনো, আর বাকি সময় থাকে পানির নিচে। শুকনো মৌসুমে চলতে হয় হেঁটে, আর বর্ষায় নৌকায়। এ কারণে স্বাস্থ্য সেবা জনগণের কাছে পৌঁছে দিতে সরকার প্রধানের উদ্যোগে শাল্লায়েএকটি নৌ-অ্যাম্বুলেন্স দেয়া হয়- যাতে হাওর এলাকার লোকজন চিকিৎসার জন্য বাড়ি থেকে নৌ-অ্যাম্বুলেন্সে করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে যেতে পারে।
কিন্তু, শাল্লায় প্রধানমন্ত্রীর দেয়া উপহার ৬০ লাখ টাকার নৌ-অ্যাম্বুলেন্সটি এখন পানিতে ডুবে আছে। ২৯ মে রোববার পর্যন্ত নৌ-অ্যাম্বুলেন্সটি ডুবন্ত অবস্থায়ই রয়েছে বলে সংশ্লিষ্টরা জানান।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়- সুনামগঞ্জের শাল্লা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের জন্য ২০১৮ সালের ২ সেপ্টেম্বর নৌ-অ্যাম্বুলেন্সটি দেয়া হয়েছিল। অযন্ত-অবহেলায় থাকতে থাকতে এখন সেটি বন্যার পানিতে ডুবে আছে। এর আগে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের দেয়া আরেকটি ৩০ লাখ টাকার কাঠের অ্যাম্বুলেন্সও অকেজো হয়ে পড়েছে। এখন সেটির অস্তিত্বও খুঁজে পাওয়া যায় না। শাল্লা উপজেলার সঙ্গে জেলা সদরের সড়ক যোগাযোগ গড়ে ওঠেনি এখনো। হাওরের তলানির এই উপজেলাবাসীর স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিত করতে অগ্রাধিকার ভিত্তিতে ৬০ লাখ টাকার এ অ্যাম্বুলেন্সটি দিয়েছিলেন সরকার প্রধান।
উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স সূত্র জানায়- চালক না থাকায় ও পরিচালনা ব্যয়বহুল হওয়ায় নৌ-অ্যাম্বুলেন্সটি দীর্ঘদিন ধরে অকেজো হয়ে পড়েছিল। সম্প্রতি হাওর ও নদীতে পানি বাড়ায় নৌ অ্যাম্বুলেন্সটি পানিতে ডুবে গেছে। শাল্লা উপজেলা সদরের বাসিন্দা প্রতাপ দাস বলেন, কয়েক বছর হয়েছে নৌ-অ্যাম্বুলেন্সটি উপজে’লা হাসপাতা’লে আনা হয়েছে। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের গাফিলতি ও অবহেলার কারণে নৌ-অ্যাম্বুলেন্সটি এখন পানিতে ডুবে আছে।
শাল্লা উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. সেলিনা আক্তার বাংলানিউজকে জানান- আমি শাল্লায় নতুন এসেছি। যতটুকু জেনেছি নৌ-অ্যাম্বুলেন্সটি দীর্ঘদিন ধরেই অকেজো হয়ে পড়ে আছে। বিষয়টি স্থানীয় এমপি, উপজেলা চেয়ারম্যান ও ইউএনওকে জানানো হয়েছে। এরই মধ্যে অ্যাম্বুলেন্সটি পানি থেকে তুলতে চেয়ারম্যান ও ইউএনওকে অনুরোধও করা হয়েছে।
শাল্লা উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) মো. আবু তালেব জানান- নৌ অ্যাম্বুলেন্সটি গত ৪-৫ দিন ধরেই পানিতে ডুবে আছে। উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা অ্যাম্বুলেন্সটি তোলার জন্য আমাকে অনুরোধ করেছিলেন। পাঁচ দিন আগেই ১০ জন শ্রমিক পাঠানো হয়েছিল, কিন্তু তারা এটি পানি থেকে তুলতে পারেনি। সোমবার উপজেলা সমন্বয় কমিটির সভায় এ বিষয়ে আলোচনা করে ব্যবস্থা নেয়া হবে।
সিভিল সার্জন ডা. আহমদ হোসেন জানান- নৌ-অ্যাম্বুলেন্সটি উদ্বোধনের পর থেকেই বিকল হয়ে রয়েছে। এটি পানিতে ডুবে গেছে বলে জানতে পেরেছি। সেটি উদ্ধারের জন্য স্থানীয়ভাবে চেষ্টা চলছে। স্থানীয় উপজেলা প্রশাসন এটি উদ্ধারের চেষ্টা করছে।